চা তো চাই-ই
শেয়ার করুন
ফলো করুন

চীন থেকে এই জাদুকরী পানীয় চায়ের বিশ্বজয়ের রোডম্যাপ শুরু হয়েছিল। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো থেকে চা পৌঁছে যায় বিলেতসহ ইউরোপীয় দেশগুলোয়। এদিকে আরব ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয়ও শুরু হয় নিজস্ব চা-সংস্কৃতি। তবে প্রথম দিকে চায়ের ঔষধি গুণের জন্য তা পান করা হলেও ধীরে ধীরে তা স্বাদে ও ফ্লেভারে বৈচিত্র্য লাভ করতে শুরু করে।

ছবি: রোয়েনা মাহজাবীন
ছবি: রোয়েনা মাহজাবীন

আমাদের দেশে খুব বেশি দিন হয়নি চায়ের প্রচলন হয়েছে। ঔপনিবেশিক ইতিহাসের ধারাবাহিকতায়ই চায়ের সঙ্গে পরিচয় আমাদের। আর এখন তো চা যেন আমাদের জীবন যাপনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। চা ছাড়া জীবন ভাবাই যায় না।

বিজ্ঞাপন

আমাদের দেশে উচ্চমানের চা-পাতা উৎপাদিত হলেও দেশীয় বাজারে তা আসে না সেভাবে। অনেকে বলেন, সে জন্যই দুধ চিনির এত বাহার আমাদের চায়ে। জ্বাল দিয়ে চায়ের ‘তিন ফুটে এক গজ’ বানানোর কৌতুক তো বহু আগেই করে গেছেন কিংবদন্তি কমেডিয়ান ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে ডাক্তারদের হাজারো বারণ দুধ চা পান করার ক্ষেত্রে।

ছবি: রোয়েনা মাহজাবীন
ছবি: রোয়েনা মাহজাবীন

কিন্তু আমরা চা বলতে সাধারণভাবে একটু কড়া করে জ্বাল দেওয়া লিকারে দুধ-চিনি দেওয়া পানীয়কেই বুঝি। শুধু হালকা লিকার চাইলে বলতে হবে তাকে ‘রং চা’। তবে বিলেতে আর্ল গ্রে টি কিন্তু দুধ-চিনি সহযোগে পরিবেশিত হয়। হংকংয়ের মিল্কটিও বিশ্বখ্যাত। উত্তর ভারতের এলাচ আর অত্যন্ত ঘন দুধ দেওয়া দুধ-পাত্তি, কাশ্মীরি পিঙ্ক টি—এগুলোও দুধ চা-ই আসলে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে ক্ল্যাসিক লেবু-চা, মসলা-চা বা আদা-চায়ের পাশাপাশি বাংলাদেশের মাটির মতোই উর্বর মস্তিষ্ক থেকে এসেছে তেঁতুল-চা, কাঁচা মরিচের চা, পনিরের চা, স্ট্রবেরি-চা থেকে শুরু করে হাজারো পদের চা। বাড়িতে না হলেও টঙের দোকানের এসব বিশেষ চা অত্যন্ত জনপ্রিয়। প্রায়ই এগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরালও হয়। সাধারণ অর্থে চা বলতে অক্সিডাইজ করে বানানো ব্ল্যাক টি-ই বুঝি আমরা। তবে শুধু রোদে শুকানো গ্রিন-টি এখন সবাই চেনে।

ছবি: রোয়েনা মাহজাবীন
ছবি: রোয়েনা মাহজাবীন
ছবি: রোয়েনা মাহজাবীন
ছবি: রোয়েনা মাহজাবীন

এর অনন্য স্বাস্থ্যগুণের জন্য তা খুব জনপ্রিয় স্বাস্থ্যসচেতন মানুষের জন্য। কাশ্মীরে কিন্তু বহু আগে থেকেই এই সবুজ চায়ের পাতা শুকিয়ে কাহওয়া চা পান করা হয়। এদিকে ব্ল্যাক টি-এর চেয়ে কম অক্সিডাইজ ও ফার্মেন্ট করে বানানো ওলং টি, অতিরিক্ত কচি অবস্থায় সংগ্রহ করা চা–পাতা দিয়ে বানানো হোয়াইট টিও রয়েছে। আমাদের দেশেও এখন এমন চা উৎপাদন ও বিপণন হয়। আবার চায়ের সঙ্গে বিভিন্ন ফল, হার্বস বা মসলার ফ্লেভার টুইনিং বা ইনফিউজ করে তৈরি হয় হাজারো পদের চা। পুরান ঢাকার মালাই চায়ের কথাও ভুলে গেলে চলবে না।

চা শুধু পানীয় নয়, আমাদের জীবনের প্রতি পদেই চা জড়িয়ে আছে। চায়ের কাপের সঙ্গে দিন শুরু হয় অনেকের। বিকেলের ক্লান্তি দূর করে চা।

ছবি: রোয়েনা মাহজাবীন
ছবি: রোয়েনা মাহজাবীন

রাত জেগে পড়াশোনা বা কাজ, বন্ধুদের আড্ডা, অতিথি আপ্যায়ন, পাড়ার মোড়ে বা কর্মক্ষেত্রের বিরতিতে রাজা-উজির মারা, পারিবারিক আবহে কাটানো ছুটির বিকেল, মন খারাপ করা উদাস সময় অথবা নিছক বই হাতে বা গানের সুরে সুরে নিজের মতো করে একান্ত সময় কাটাতে চা তো চাই-ই।

ছবি: রোয়েনা মাহজাবীন

প্রকাশ: ২১ মে ২০২৩, ০৬: ২৩
বিজ্ঞাপন