বংশে ডায়াবেটিসের ইতিহাস থাকলেও তা প্রতিরোধ করা সম্ভব ৪টি পরামর্শ মেনে চললে
শেয়ার করুন
ফলো করুন

ডায়াবেটিসের নাম শুনলেই যেন জীবনটা থমকে দাঁড়ায়। মনমতো খাওয়াদাওয়া করতে প্রবল নিষেধাজ্ঞা আর এ রোগের ফলে নানা অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ক্ষতির বিষয়গুলো আসলেই যে কাউকে ডায়াবেটিসের ব্যাপারে সন্ত্রস্থ করে তুলতে পারে। অথচ বর্তমান সময়ে দেখা যাচ্ছে অপেক্ষাকৃত কমবয়সীদের অনেকেই ডায়াবেটিস রোগে ভুগছেন।

সাধারণত জীনগত বৈশিষ্ট্য এই অটোইমিউন ডিজঅর্ডারের পেছনে অনেকটা দায়ী করা হয়। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তরুণ বয়স থেকেই স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের কিছু নিয়ম মেনে চললে অনেকটা প্রতিরোধ করা সম্ভব এ রোগটি। আর প্রতিরোধ তো সবসময়েই প্রতিকার বা চিকিৎসার চেয়ে উত্তম।

বিজ্ঞাপন

বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী, যদি সুশৃঙ্খল জীবন যাপন করা হয়, তাহলে প্রায় ৭৫ শতাংশ ক্ষেত্রে এ রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। বিশৃঙ্খল যাপনরীতি ও ভুল খাদ্যাভ্যাস এই রোগের পেছনে অনেকটা দায়ী। তাহলে এজন্য জীবনযাপনে কী ধরনের পরিবর্তন আনা উচিত, তা নিয়ে রইল কিছু পরামর্শ

১. বুঝেশুনে খাওয়া

প্রক্রিয়াজাত ও স্টার্চসমৃদ্ধ খাবার—ময়দা, হোয়াইট ব্রেড, আলু; প্রক্রিয়াজাত মাংস, যেমন সসেজ, বেকন, সালামি, হট ডগ হৃদ্‌রোগ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। তা ছাড়া তেলে ভাজা খাবার ও মিষ্টিজাতীয় খাবার শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
উচ্চ ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার, যেমন বিভিন্ন ডাল, শাকসবজি হতে পারে এসব খাবারের বিকল্প। দুপুর ও রাতের খাবারের প্লেটে সবুজ সবজির সালাদকে গুরুত্ব দিতে হবে বেশি। বাইরে থেকে খাবার কেনার সময় অবশ্যই মোড়কের ওপর থেকে এই খাবারে ব্যবহৃত চিনি, ফ্যাট, লবণ—এসব দেখে নেওয়া উচিত।

২, কোমরের মাপ খেয়াল রাখা

শরীরের অতিরিক্ত ফ্যাট কোমরের অংশে দৃশ্যমান হয় বেশি। পেটের চারপাশে মেদ জমলে তা শরীরে ইনসুলিন হরমোনের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। এ কারণে ডায়াবেটিস টাইপ২ হতে পারে। চিকিৎসকেরা বলছেন, স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাতে একজন ব্যক্তির উচ্চতার অর্ধেক হওয়া উচিত তাঁর কোমরের প্রস্থ। প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের কোমরের মাপ ৪০ ইঞ্চি ও প্রাপ্তবয়স্ক নারীর ক্ষেত্রে ৩৫ ইঞ্চির বেশি হলে সেটিকে বিপজ্জনক ধরে নেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

৩. সক্রিয় হওয়া
অলস জীবনযাপন ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। চেষ্টা করুন শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকার। সারা দিন নিজের কাজ নিজে করলেও অনেকটা সচল থাকে শরীর। তা ছাড়া সারাক্ষণ বসে থাকার কাজ করলে মাঝেমধ্যে ১৫ থেকে ২০ মিনিটের ব্রেক নিয়ে দু-তিনবার হাঁটুন। কর্মক্ষেত্র থেকে বাসায় ফেরার সময় সম্ভব হলে হেঁটে যান। মাঝেমধ্যে লিফটের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার করুন। এভাবে শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকলে ওজন যেমন ঠিক থাকে, তেমনি রক্তের গ্লুকোজ লেভেল ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকে।

৪. মেডিটেশন বা ইয়োগা করা
আমাদের শরীরে কর্টিসল নামে একটি হরমোন আছে, যা স্ট্রেস হরমোন নামেও পরিচিত। কর্টিসল মূলত গ্লুকোজ পরিপাক ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে প্রভাব ফেলে। এটি লিভার থেকে গ্লুকোজ রক্তে প্রবেশ করায় এবং জরুরি শক্তির জোগান দেয়। তবে এই প্রক্রিয়া অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়লে তা ইনসুলিন রেসিস্ট্যান্স ও ডায়াবেটিসের দিকে নিয়ে যেতে পারে। মেডিটেশন স্ট্রেস কমিয়ে সুগার লেভেল ঠিক রাখে। তাই মনকে চিন্তামুক্ত রাখতে ইয়োগা বা মেডিটেশন দিয়ে দিন শুরু করুন।

তথ্যসূত্র: হেলথলাইন

ছবি: পেকজেলস ডট কম

প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৩, ২২: ৩০
বিজ্ঞাপন