
চা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। চা ভালোবাসেন না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়াই মুশকিল। তবে চিনিযুক্ত চা অনেকেই পান করতে পারেন না। তাঁরা কিন্তু অনায়াসেই বেছে নিতে পারেন গুড়ের চা। বিভিন্ন চায়ের রয়েছে বিভিন্ন গুণ এবং স্বাস্থ্য উপকারিতা। তবে একই সঙ্গে স্বাদ ও গুণে ভরপুর চা কিন্তু খুব কমই মেলে। গুড়ের চায়ের একদিকে যেমন স্বাদের কোনো তুলনা নেই, অন্যদিকে এই চায়ের রয়েছে নানা স্বাস্থ্য উপকারিতা। গুড় আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম ও পটাশিয়ামসমৃদ্ধ। এতে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্টও রয়েছে। এ ছাড়া শীতকালে গুড়ের চা আপনার শরীরে উষ্ণতা সরবরাহ করে এবং ঠান্ডা আবহাওয়ায় শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে সহায়তা করতে পারে। চলুন, জেনে নেওয়া যাক, গুড়ের চায়ের কয়েকটি স্বাস্থ্য উপকারিতা।
১. রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়
গুড়ের চায়ে রয়েছে জিংক ও সেলেনিয়ামের মতো প্রয়োজনীয় খনিজ, যা রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। অর্থাৎ এটি আপনার ইমিউন সিস্টেমকে করে তুলবে শক্তিশালী। আর একটি শক্তিশালী ইমিউন সিস্টেম বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ এবং রোগ থেকে শরীরকে রক্ষা করতে পারে।

২. শরীরে উষ্ণতা সরবরাহ করে
গুড়ের চা শরীরে উষ্ণতা ছড়ানোর পাশাপাশি এনে দেবে একধরনের প্রশান্তি। তাই শীতকালে এই চায়ের কোনো জুড়ি নেই। এটি শরীরকে উষ্ণ রাখতে সাহায্য করে এবং সর্দি-কাশি থেকে তাৎক্ষণিক মুক্তি দেয়।
৩. শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়
গুড়ের চায়ের অনেকগুলো উপকারিতা রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো এটি শীতে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়। হাঁপানি, ব্রঙ্কাইটিস এবং কাশির মতো শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা যাঁদের রয়েছে, তাঁদের জন্য এই চা বেশ উপকারী।

৪. শরীরকে ডিটক্সিফাই করে
গুড়ের চায়ে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এগুলো টক্সিনসহ বিভিন্ন ধরনের বিষাক্ততা দূর করে শরীরকে ডিটক্সিফাই করতে সহায়তা করে। এটি লিভার পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে এবং হজমের সমস্যা থেকেও মুক্তি দিতে পারে।
৫. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
গুড়ের চায়ে রয়েছে পটাশিয়াম, যা রক্তচাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। গুড়ের চা নিয়মিত পান করা স্বাস্থ্যকর। কারণ, এটি রক্তচাপ ঠিক রাখতে সহায়তা করে এবং হৃদ্রোগের ঝুঁকি হ্রাস করে।

৬. হজমে সহায়তা করে
গুড়ের চা হজমের এনজাইমগুলোকে উদ্দীপ্ত করে এবং হজমে সহায়তা করে। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য, ফোলাভাব ও বদহজমের মতো সমস্যাগুলোকে প্রতিরোধ করতে পারে খুব সহজেই।
৭. আয়রনের ঘাটতি পূরণ করে
গুড়ের চা আয়রনের একটি চমৎকার উৎস, যা লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদনে সাহায্য করে। নিয়মিত এই চা পান করলে আয়রনের ঘাটতিজনিত সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন খুব সহজেই।

৮. অতিরিক্ত ওজন হ্রাস করতে সাহায্য করে
গুড় একটি প্রাকৃতিক মিষ্টিকারক উপকরণ। এটি অস্বাস্থ্যকর চিনিযুক্ত স্ন্যাকসের নেশা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। এটি বিপাকপ্রক্রিয়াকে ভালো রাখে এবং ওজন হ্রাসে সহায়তা করে।
৯. জয়েন্টের ব্যথা উপশম করে
গুড়ের চা অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্যসমৃদ্ধ, যা জয়েন্টের ব্যথা এবং প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে। এই চা নিয়মিত পান করলে আর্থ্রাইটিস আর অন্যান্য জয়েন্টের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।ve

১০. শক্তি সরবরাহ করে
গুড়ের চা কার্বোহাইড্রেটে ভরপুর, যা শরীরে তাৎক্ষণিকভাবে শক্তি সরবরাহ করে। এটি একটি চমৎকার প্রাকৃতিক এনার্জি বুস্টার, বিশেষ করে শীতকালে যখন শরীরের উষ্ণতা এবং শক্তির প্রয়োজন হয়।
সূত্র: ভেরি ওয়েল ফিট