রূপচর্চায় চা-চর্চা
শেয়ার করুন
ফলো করুন

ত্বকের জন্য চা

ত্বক পরিষ্কার করতে ক্লিনজার হিসেবে চা-পাতা বেছে নিতে পারেন। এই গরমে ত্বক অপরিষ্কার থাকলে ব্রণ, এলার্জি কিংবা ফুসকুড়ির উপদ্রবও বেড়ে যায়। তাই ত্বকের ধরন বুঝে একটি ফেসওয়াশ বেছে নিতে হবে। এর সঙ্গে এক টেবিল চামচ গ্রিন টি বা সাধারণ চা-পাতা নিয়ে মিশ্রণটি মুখে লাগাতে হবে। পাঁচ মিনিট পর ভেজা হাতে বৃত্তাকারে ঘষে ঠান্ডা পানিতে মুখ ধুয়ে ফেললে ত্বক হবে পরিষ্কার। পাশাপাশি এই ক্লিনজিং পদ্ধতি ত্বকে আর্দ্রতার ভারসাম্য বজায় রাখা, ঘাম, ময়লা ও তেলতেলে ভাব দূর করবে।

গ্রিন টি প্রাকৃতিক টোনার হিসেবেও বেশ উপকারী। তাই চা পানের পর টি-ব্যাগটি ফেলে না দিয়ে, গরম পানিতে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রেখে ঠান্ডা হলে সেটা ভালো করে ছেঁকে এর সঙ্গে গোলাপজল, গ্লিসারিন ও অ্যালোভেরার রস মেশাতে হবে। মিশ্রণটি একটি স্প্রে বোতলে নিয়ে ফ্রিজে রাখতে হবে। মুখ ধোয়ার পর টোনারটি প্রতিদিন ব্যবহারে ত্বক টান টান হওয়ার সঙ্গে রক্ত সঞ্চালনও বাড়বে।

চা পান করে, সেটা ফেলে না দিয়ে প্রাকৃতিক স্ক্রাব বাড়িতেই তৈরি করে নেওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে ব্যবহৃত গ্রিন টি, এক চামচ খাঁটি মধু আর অল্প চালের গুঁড়া একসঙ্গে মিশিয়ে মুখের ত্বকে ৫-১০ মিনিট বৃত্তাকারে ঘষে ধুয়ে ফেলতে হবে। ত্বকের দাগ দূর করতে এই ফেসিয়াল স্ক্রাব বেশ উপকারী।

রূপবিশেষজ্ঞ শারমিন কচি জানান, যেকোনো স্ক্রাব ১৫ দিনে একবার ব্যবহার করার নিয়ম। তবে যাঁরা নিয়মিত বাইরে বের হন, তাঁরা সপ্তাহে একবার ব্যবহার করতে পারেন।

বিজ্ঞাপন

মাস্ক হিসেবেও চা-পাতা বেছে নিতে পারেন। অল্প চা-পাতা ফুটিয়ে ঠান্ডা করে এরপর তা বেটে ঘন মিশ্রণ বানাতে হবে। সেটা মুখে লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। চায়ে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ত্বকের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে সাহায্য করে।

অনেকেই চোখের ফোলা ভাব নিয়ে বেশ বিপত্তিতে পড়েন। চোখের ফোলা ভাব কমাতে গ্রিন টি ব্যবহার করে দেখতে পারেন। চায়ে থাকা ট্যানিন ও ক্যাফেইন অনেক সমস্যার মুশকিল আসান হয়ে কাজ করে। চা পান করার পর ফেলে না দিয়ে সেটা ঠান্ডা হলে দুই চোখের ওপর ১০ মিনিট রাখতে হবে। রোজ ব্যবহারে ডার্ক সার্কেলও চলে যাবে।

বিজ্ঞাপন

চুলের যত্নে চা

চুলের যত্নে নামীদামি পণ্য ব্যবহার করার কথা ভুলে হেঁশেলে উঁকি দিলেই ঘরোয়া সমাধান পাওয়া যাবে। চুলের কোষগুলো প্রতিদিন বিভিন্ন ভাইরাস-ব্যাকটেরিয়ার শিকার হয়। আর চায়ে থাকা এপিগ্যালোক্যাটেচিন-গ্যালেট (ইজিসিজি) নামের রাসায়নিক পদার্থ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে বেশ কার্যকর। চা-পাতার নির্যাস চুলের যত্নে নানা কাজে আসে। এমনকি প্রাকৃতিক কন্ডিশনারের কাজও করে, জানিয়েছেন রূপবিশেষজ্ঞ আফরোজা পারভীন।

এ সময় গরমে চুল অনেক ঘামে, চুলের গোড়া হয়ে যায় নরম। তাই ঘরোয়া সমাধান হিসেবে একটি পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। চা-পাতা বা গ্রিন টি পানিতে ফুটিয়ে ঠান্ডা করে নিয়ে, এরপর চায়ের পানি ছেঁকে একটি স্প্রে বোতলে নিয়ে স্ক্যাল্প এবং চুলে ভালোমতো লাগিয়ে ম্যাসাজ করতে হবে। ১৫ মিনিট পর চুল ধুয়ে ফেলতে হবে। আর এটা রোজ ব্যবহারে উপকার মিলবে।

রূপবিশেষজ্ঞ ফারহানা রুমি বাতলে দিয়েছেন আরেকটি টোটকা। চা-পাতা সেদ্ধ করে এর লিকার ঘন করে ব্যবহার করতে পারেন। শ্যাম্পু করার পর পাঁচ মিনিট রেখে তা ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে চুলের কোমলতা ও উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে। এ ছাড়া চা-পাতা সেদ্ধ করে ঘন নির্যাস যদি হেনার সঙ্গে মিশিয়ে লাগানো যায়, তবে চুলে প্রাকৃতিক একটি রং হওয়ার পাশাপাশি গোড়াও মজবুত হবে।

ছবি: হাল ফ্যাশন ও পেকজেলসডটকম

প্রকাশ: ২১ মে ২০২৩, ০৭: ৩৯
বিজ্ঞাপন