ঢাকায় আজ সর্বোচ্চ বায়ুদূষণ,কী করবেন
শেয়ার করুন
ফলো করুন

বর্তমান সময়ে পরিবেশদূষণের অন্যতম কারণ বায়ুদূষণ, ঢাকায় আজ শুক্রবার সকাল ১০টায় চলতি বছরের সর্বোচ্চ বায়ুদূষণ রেকর্ড করা হয়েছে, এর প্রধান কারণ বাতাসে অতি ক্ষুদ্র বস্তুকণা (পিএম ২.৫)। উন্নয়নের পারদ যেমন ঊর্ধ্বগামী, তেমনি বায়ুদূষণে বিশ্বের ১০০ শহরের মধ্যে ঢাকার অবস্থান আজ প্রথম এবং আইকিউএয়ারের বাতাসের মানসূচকে (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স-একিউআই) ঢাকার স্কোর ছিল ৪৪০।

আইকিউএয়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী স্কোর ৫১ থেকে ১০০ হলে তাকে ‘মাঝারি’ বা ‘গ্রহণযোগ্য’ মানের বায়ুদূষণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরকে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু। স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে তাকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু ধরা হয়। ৩০১ থেকে তার ওপরের স্কোরকে ধরা হয় ‘দুর্যোগপূর্ণ’ বা ‘ঝুঁকিপূর্ণ’। আজ ঢাকার বাতাসে যতটা এ বস্তুকণা আছে, তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মানদণ্ডের চেয়ে ৫৫ গুণের বেশি। বাতাসে এ অবস্থা থাকায় সবার জন্য পরামর্শ, আজ বাইরে বের হলে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

বায়ুদূষণ বেশি হলে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকেন সংবেদনশীল গোষ্ঠীর মানুষ। তাঁদের মধ্যে আছেন বয়স্ক, শিশু, অন্তঃসত্ত্বা ও জটিল রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা। সবার ঝুঁকি তো রয়েছেই, তবে এই চার শ্রেণির মানুষকে বিশেষ যত্নবান হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বায়ুদূষণ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে হলে কী করতে হবে? আসুন জেনে নিই এবং মেনে চলি—

সকালের হাঁটা থেকে বিরত থাকুন

ব্যায়াম করা অপরিহার্য; কিন্তু আমরা যখন দূষিত বাতাসে শ্বাস নিচ্ছি, তখন নয়। যারা হাঁটছেন, দৌড়াচ্ছেন বা জগিং করছেন বা বাইরের কোনো কাজে নিয়োজিত আছেন, বাইরের ধোঁয়াশা কমে না আসা পর্যন্ত তাঁদের তা করা থেকে বিরত থাকতে হবে। সন্ধ্যায় করতে পারেন, তবে বাইরে বের হলেই এন নাইনটি ফাইভ বা ধুলানিরোধক মাস্ক ব্যবহার করা উচিত।

বিজ্ঞাপন

বায়ু বিশুদ্ধকরণ উদ্ভিদ রাখুন ঘরে

এয়ার পিউরিফাইং প্ল্যান্ট যেমন অ্যালোভেরা, আইভি এবং স্পাইডার প্ল্যান্ট বাড়িতে ও অফিসে স্থাপন করা যেতে পারে। এগুলো অভ্যন্তরীণ বাতাসকে বিশুদ্ধ করতে এবং অন্দরের দূষণ কমাতে সহায়তা করে।

আপনার রান্নাঘর ও বাথরুমে বায়ু চলাচল যেন ভালো হয়
বসতবাড়ির বায়ুদূষণ এড়াতে রান্নাঘরে এগজস্ট আর বাথরুমে একটি নিষ্কাশনব্যবস্থা আছে কি না, তা নিশ্চিত করুন। অনেকেই জানেন না যে অন্দরের দূষণ বাইরের দূষণের চেয়েও খারাপ হতে পারে।


চেষ্টা করুন বাচ্চাদের বের হতে না দিতে

আপনার বাচ্চাদের (চার বছরের কম বয়সী) খুব প্রয়োজন ছাড়া বাইরে যেতে দেবেন না। প্রয়োজনে স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলুন এবং বুঝিয়ে বলুন।

এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন
সম্ভব হলে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন বিশেষ করে বাচ্চাদের ঘরে, বয়স্কদের এবং গর্ভবতী মহিলাদের ঘরে। তারা এই বিষাক্ত বাতাসের খারাপ প্রভাবের জন্য সবচেয়ে বেশি নাজুক অবস্থায় আছেন।

প্রতিদিন বাষ্প নিন
প্রতিদিন সন্ধ্যায় কয়েক ফোঁটা ইউক্যালিপটাস তেল দিয়ে বাষ্প নেওয়ার চেষ্টা করুন। আপনার বায়ুপথগুলোকে শিথিল করতে এবং আপনার শরীরকে ক্ষতিকর কণাপদার্থ অপসারণ করতে সাহায্য করবে এই পদ্ধতি।

পুষ্টিকর খাবার খান

ভিটামিন সি, ম্যাগনেসিয়ামসমৃদ্ধ ফল ও ওমেগা ফ্যাটি অ্যাসিডসমৃদ্ধ খাবার খান। স্বাস্থ্যকর খাদ্য আপনাকে আপনার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বজায় রেখে দূষণের খারাপ প্রভাবগুলোকে কমাতে সাহায্য করবে। ফুসফুস থেকে দূষক বের করার জন্য গুড়ও খেতে পারেন।

ভেষজ চা

ভেষজ চা যেমন আদা বা তুলসী চা খান। দিনে একবার বা দুইবার এই স্বাস্থ্যকর ভেষজ চা দূষণের প্রভাব কমানোর জন্য অত্যন্ত কার্যকর।
প্রাকৃতিক দূষণ নির্মূল করা অসম্ভব প্রায়। তবে ছোট ছোট পদক্ষেপ এবং সতর্কতামূলক পদক্ষেপ আমাদের এমন দূষণের দিনে সুস্থ রাখতে সহায়তা করবে। তাই নিয়ম মেনে চলুন, সুস্থ থাকুন।

সূত্র: প্রথম আলো ও টাইমস অব ইন্ডিয়া

ছবি: পেকজেলস ডট কম ও প্রথম আলো

প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৩: ৩১
বিজ্ঞাপন