বায়ুদূষণের ইনডেক্সে ঢাকার অবস্থান পাকাপোক্তভাবেই ওপরের দিকে থাকে সব সময়। এর মধ্যে এসেছে শুষ্ক আবহাওয়ার দিন।
একদিকে এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা কম থাকায় যেমন ধুলাবালু, মাইক্রো পার্টিকেলস বা সূক্ষ্ম কণা আর ধোঁয়াজনিত ফিউম খুব সহজেই ভেসে বেড়ায় বাতাসে। প্রশ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসে প্রবেশ করে এগুলো অ্যালার্জি, অ্যাজমা আর সংক্রমণ ঘটাতে পারে। তেমনি এ সময় রাস্তাঘাট মেরামত, খোঁড়াখুঁড়ি আর দালানকোঠা ভাঙাগড়ার কাজ চলতেই থাকে আশপাশে। সব মিলিয়ে ঘরে–বাইরে সব জায়গায় ফুসফুস থাকে বিপদের মধ্যে। তাই ভেতর থেকে ফুসফুসের শক্তি বাড়িয়ে তোলার দিকে মনোযোগ দিতেই হবে এমন দিনে।
নিয়মিত ব্রিদিং এক্সারসাইজ করা ছাড়াও অ্যান্টি–অক্সিডেন্টযুক্ত কিছু খাবার ফুসফুসের প্রদাহ প্রতিরোধ ও উপশম করার ক্ষেত্রে খুবই কার্যকর বলে বিশেষজ্ঞরা মতামত দিয়ে থাকেন। আর এ খাবারগুলো সহজেই পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে প্রথম কথা হলো, ডায়েটে ভারসাম্য থাকতে হবে। এবার এই ফুসফুসবান্ধব খাদ্যের তালিকাটি দেখে নেওয়া যাক।
১। আপেল
আপেলকে এমনিতেই ডাক্তার দূরে রাখার মহৌষধ বলা হয়। তবে খেতে হবে তা খোসাসমেত। এর খোসায় কোয়েরসিন নামের এক অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট আছে, যা ফুসফুসের প্রদাহ কমাতে পারে। তাই যাঁদের ক্রনিক অ্যাজমা বা সিওপিডি আছে, তাঁদের জন্য রোজ আপেল খাওয়া ভালো।
২। মরিচ
মরিচে আশ্চর্যজনক রকমের বেশি পরিমাণ ভিটামিন সি থাকে। আর এই অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট ফুসফুসের স্বাস্থ্য ভালো রাখে বলে বহু গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে। বায়ুথলির প্রদাহ কমাতেও এটি কার্যকর। ধূমপানের ইতিহাস থাকলে তো ফুসফুসের যত্নে অবশ্যই দিনের প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি গ্রহণ করতে হবে। এ ছাড়া জমে থাকা শ্লেষ্মা আলগা করতে আর কাশি কমাতে মরিচের ক্যাপসাইসিন কাজ করে ভালো৷
৩। বিট
এখন বিট সারা বছরই হয় আমাদের দেশে। বাজারে পাওয়া যায় সহজেই। এই গাঢ় লাল মূলজাতীয় সবজিটিতে নাইট্রেট থাকে প্রচুর। পর্যাপ্ত বিট খেলে শরীর এই নাইট্রেট থেকে নাইট্রিক অক্সাইড বানায়। এই রাসায়নিক যৌগ রক্তনালিকে প্রসারিত করে, অক্সিজেনের প্রবাহ বাড়ায় আর রক্তচাপ কমায়। এগুলো সবই ফুসফুসের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। বিটের অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট আর প্রদাহরোধী উপাদানগুলোও এ ক্ষেত্রে কার্যকর।
৪। সবুজ শাকসবজি
আমাদের দেশের আনাচকানাচে জন্মে বহু রকমের শাকপাতা। ঘন সবুজ এসব সবজিতে ক্যারোটিনয়েড থাকে অনেক। এগুলো প্রদাহের বিরুদ্ধে তাই খুব ভালো কাজ করে। এসব শাকপাতায় ভিটামিন সি থাকে প্রচুর পরিমাণে। কিন্তু রান্না করলে তা নষ্ট হয়ে যায়। তাই পালং, লাইপাতা, শর্ষেপাতা, থানকুনি ইত্যাদি কচি অবস্থায় কাঁচা খেলে ভালো।
৫। ডাল ও বিনস
বিনস, মটরশুঁটি আর ডালে আছে প্রচুর খাদ্যআঁশ। গবেষণায় দেখা যায়, সিওপিডি প্রতিরোধ করতে এমন আঁশযুক্ত খাবার উপকারী। ফুসফুসের কার্যকারিতা বাড়ায় এসব পানিতে দ্রবীভূত হতে পারে এমন আঁশ।
৬। টমেটো
ভিটামিন সির সঙ্গে সঙ্গে লাইকোপিনের খুব ভালো উৎস টমেটো। এটি একধরনের ক্যারোটিনয়েড গোত্রের অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট, যা বায়ুনালির প্রদাহ কমায়, শিথিল করে একে। সিওপিডি আর অ্যাজমার কষ্ট কমাতেও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে লাইকোপিন।
তথ্যসূত্র: হেলথলাইন
ছবি: পেকজেলস ডট কম