‘ফ্রেন্ডস’ সিরিজের চ্যান্ডলার–মনিকার সম্পর্কের গল্প থেকে আমরা যে ৫টি বিষয় শিখতে পারি
শেয়ার করুন
ফলো করুন

সর্বজনপ্রিয় মার্কিন সিরিজ ‘ফ্রেন্ডস’কে অনেকটাই কালোত্তীর্ণ বলা যায়। সদ্য প্রয়াত চ্যান্ডলার বিং চরিত্রখ্যাত ম্যাথিউ পেরির অভিনীত দৃশ্যগুলো বারবার দেখছেন ভক্তরা এখন। চ্যান্ডলারকে কি আর ভোলা যায়!

আর এই চ্যান্ডলার ও মনিকার  গল্প থেকে সব প্রজন্মের মানুষই নিতে পারেন সম্পর্কের কিছু অনন্য পাঠ। উল্লেখ্য, ফ্রেন্ডস সিরিজে চ্যান্ডলারের ভালোবাসার মানুষ মনিকা গেলারের চরিত্রে অভিনয় করেছেন সুবিখ্যাত আবেদনময়ী ও জনপ্রিয় মার্কিন অভিনেত্রী কোর্টনি কক্স।

বিজ্ঞাপন

ভালোবাসা ব্যাপারটি আসলে দুজনে মিলে জীবনের ভারগুলো একসঙ্গে হেসে উড়িয়ে দেওয়া—এ রকমই জীবনদর্শন চ্যান্ডলার–মনিকার। একে অপরকে নিয়ে মজা করা, একসঙ্গে অন্য যেকোনো কিছু নিয়ে মজা করার চেয়ে ভালো সময় কাটানো সম্ভব নয়। যে মানুষটি আপনাকে প্রাণ খুলে হাসাতে পারে, তাকে কোথাও যেতে দেওয়া ঠিক নয়। কারণ, তার সঙ্গে হেসেখেলে জীবনটা পার হয়ে যাবে, তা সে যতই বাধাবিপত্তি আসুক। কেউ নিখুঁত বা নির্ভুল নয়। একে অপরের কমতি, দুর্বলতাকে বরণ করে নিতে হবে চ্যান্ডলার আর মনিকার মতো, শুধু মেনে নেওয়াই যথেষ্ট নয়। তাদের ভালোবাসার গল্প থেকে আমরা দেখি, কীভাবে হাজার প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও একে অপরকে আঁকড়ে ধরে রাখা যায়। পরিস্থিতি অনুযায়ী রং বদলায় আর পালিয়ে যায় তো কাপুরুষেরা। ভালোবাসায় তা চলে না।


প্রায় সময়েই টেলিভিশন, গল্প-উপন্যাস আর মুভির জুটিগুলো আমাদেরকে অত্যন্ত প্রভাবিত করে৷ শুধু রোমিও–জুলিয়েট বা বেহুলা–লখিন্দরের মতো ট্র্যাজিক নয়,  বরং কমিক কাপলরাও যে এ তালিকায় শামিল হতে পারেন, সে কথা ভেবে দেখেনি কেউ আগে৷ কিন্তু চ্যান্ডলার–মনিকা ঠিক এ রকমই এক অনন্যসাধারণ জুটি। চ্যান্ডলার ওপারে চলে যাওয়ার পরে ভক্তরা বারবার ‘ফ্রেন্ডস’ সিরিজের পর্বগুলো দেখছেন। তাঁকে মনে করে। আর এই বন্ধুত্ব ও ভালোবাসার গল্পের নতুন নতুন দিক উন্মোচিত হচ্ছে সবার কাছে। আলোচনায় আসছে চ্যান্ডলার–মনিকার সম্পর্কের গল্প। আর এমন অনুভূতি জাগছে যে তাঁরা কেবল হাসিয়েই যাননি পর্দায় যুগল উপস্থিতির মাধ্যমে, বরং শিখিয়েও গিয়েছেন বেশ কিছু জীবন ও ভালোবাসার পাঠ।

বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য, চারটি দীর্ঘ সিজন লেগে গেছে তাদের একে অপরের মধ্যে ভালোবাসা খুঁজে পেতে। এবারে এই চ্যান্ডলার–মনিকা প্রেমকাহিনির কিছু অনুসরণীয় দিক নিয়ে কথা বলা যাক।

১. বেস্টফ্রেন্ডের মধ্যে জীবনসাথি খুঁজে পাওয়ার মতো দারুণ কিছু আর হতে পারে না

বন্ধুত্বের মধ্যেই ভালোবাসার সম্পর্কে জড়িয়েছেন চ্যান্ডলার ও মনিকা। আর প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হলেও তাঁরা বন্ধুত্বকে বাঁচিয়ে রেখেছেন সচেতনভাবে। মনিকার শুচিবায়ু আর সব সময় সেরা হওয়ার নেশা অথবা চ্যান্ডলারের সবকিছু নিয়ে সব সময় উল্টাপাল্টা কৌতুক করা খুব চেনা চেনা লাগে আমাদের কাছে। তাদের দেখে শেখা উচিত, আপনার সঙ্গীর সব আচরণ আপনার সঙ্গে মিলে যাবে না বা আপনার ভালো লাগবে না। কিন্তু সেগুলোও তাদের অংশ।

তাদেরকে বদলে ফেলা, নিজের মতো করে চালানো আপনার কাজ নয়। বরং তাদের অদ্ভুত আচরণগুলো নিয়ে মজা করতে পারেন দুজন মিলে আর সে কথা আপনার আচরণগুলোর বেলায়ও প্রযোজ্য। চ্যান্ডলার যে নাচতে পারেন না, নাচানাচি করতে গেলে যেসব হাস্যকর ভঙ্গি করেন, তার সবটুকু বরণ করেই কিন্তু মনিকা তাঁকে ভালোবাসেন।

২. আকর্ষণের ফুলকি নিভতে না দেওয়া

ভালোবাসায় যদি উষ্ণ আর দুর্নিবার আকর্ষণ না থাকে, তবে আর সে কেমন বোরিং ভালোবাসা! ভালোবাসায় যখন আমরা মনপ্রাণ দিই, দেহ কি তখন দূরে বসে তপস্যা করবে? তাই এই আকর্ষণ ফিকে হতে দেওয়া যাবে না৷ অন্তরঙ্গ মুহূর্তের সন্ধানে থাকতে হবে সব সময়। চকিতে চুরি করে নেওয়া আলতো স্পর্শ, আদর আর চুম্বনের কোনো তুলনা হয় না। আর একে অপরের জন্য নিজেকে তৈরি রাখা, আকর্ষণ বাড়াতে সব সময় টুকটাক পদক্ষেপ নেওয়ার মতো বিষয়গুলোই কিন্তু একটি সম্পর্কের প্রাণভোমরা।


৩.ভুল করলে তা শোধরানোর জন্য সম্ভাব্য সবকিছু করা

সঙ্গীর মন খারাপ হলে, তিনি আপনার ওপরে রাগ বা অভিমান করলে তাঁকে হাসানোর চেষ্টা করাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ। চ্যান্ডলার তো একবার মাথায় উৎসবের ভোজের টার্কি দিয়ে নাচানাচি শুরু করে দিয়েছিলেন এ জন্য। তা–ও আবার তাঁর স্বভাবসুলভ অত্যন্ত হাস্যকর ভঙ্গিমায়।

৪.খারাপ সময়গুলোতে একে অপরের হাত ধরে থাকা

লং ডিস্টেন্স সম্পর্কের মতো জটিল অবস্থা হোক, অথবা চ্যান্ডলারের চাকরি চলে যাওয়া—সব অবস্থাতেই মনিকা আর তিনি একে অপরকে শক্ত করে ধরে ছিলেন। পরিস্থিতি বদলায়। জীবনে চড়াই–উতরাই আসে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে সে জন্য ভালোবাসা বদলে যাবে মৌসুমি বাতাসের মতো।

বরং এমন সময় আরও বেশি করে নিজেদের ভালোবাসার জায়গাগুলোকে আঁকড়ে ধরতে হবে। আর সেই সঙ্গে একে অপরকে৷ ঠিক যে কাজটি করেছেন আমাদের সকলের আরাধ্য মনিকা চ্যান্ডলার জুটি। 

ছবি: ইন্সটাগ্রাম

প্রকাশ: ০১ নভেম্বর ২০২৩, ১৬: ০০
বিজ্ঞাপন