
চলে এল ঈদুল আজহা বা কোরবানি ঈদ। অসম্ভব ব্যস্ত সময় কাটে এই ঈদে। একদিকে বাড়িতে অতিথি, আরেক দিকে রান্নাঘর মাংসে পরিপূর্ণ। অনেক সাবধানতা অবলম্বন করার পরও বাড়িঘর আর চারপাশে অগোছালো আর অপরিচ্ছন্ন একটি পরিস্থিতি তৈরি হয়ে যায়। কিন্তু পরিকল্পনামতো কিছু পদক্ষেপ নিলে সহজেই এড়ানো যায় তা। পশু কেনা থেকে শুরু করে জবাই, মাংস বণ্টন আর সংরক্ষণ—সব কাজ যেমন ধাপে ধাপে করা হয়, ঠিক সেভাবে পরিচ্ছন্নতার কাজগুলোকেও ধাপে ধাপে করাই শ্রেয়।

পশু কোরবানির জন্য নির্ধারিত ছুরিটি ভালোভাবে ধার করে নিন, যেন কোরবানির প্রক্রিয়া খুব দ্রুত সম্পন্ন করা যায়। এ ছাড়া বঁটি-দা, চাপাতি, মিট হ্যামার, কিমার মেশিন, ব্লেন্ডার বা চপার ইত্যাদি প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো কোরবানির আগেই ধুয়েমুছে প্রস্তুত করে রাখুন। মাংস কাটার কাজ শেষ হয়ে গেলে এগুলো গরম পানি ও ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। তবে সবকিছু তখনই তুলে ফেলা ঠিক হবে না। কেননা ইস্পাত এবং লোহার মিশ্রণে তৈরি এই জিনিসগুলোতে সামান্য পানি থেকে গেলেই ধীরে ধীরে মরচে পড়ে যাবে। এর পাশাপাশি এও মনে রাখতে হবে, ধুয়ে শুকিয়ে রাখা ধারালো জিনিসগুলো শিশুদের হাতের নাগালের বাইরেই রাখতে হবে সব সময়।
পশু জবাইয়ের সঙ্গে সঙ্গে রক্ত ও পশুর বর্জ্য মাটিচাপা দিয়ে ফেলা জরুরি। সেটা সম্ভব না হলে পানি দিয়ে স্থানটি ভালোভাবে ধুয়ে ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে দিলে সে স্থানে জীবাণু সংক্রমণের আশঙ্কা কম হয়। ব্লিচিং পাউডারের পরিবর্তে চুন ব্যবহার করা যেতে পারে। পশুর বর্জ্যগুলো কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত স্থানে ফেলা হলে কোরবানি–পরবর্তী দুর্গন্ধ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সহজ হয়।
টুকরো করা মাংস ঘরে এনে ধুয়ে নেওয়ার সময় হাড় এবং চর্বির প্রলেপ পড়ে কিচেন সিঙ্কের ড্রেন আটকে যেতে পারে, যা পরে তীব্র দুর্গন্ধ তৈরি করে। তাই গরম পানি দিয়ে ড্রেনের পথটি পরিষ্কার করুন। কোরবানির পরের দিনেও একইভাবে ড্রেনগুলো বারবার পরিষ্কার করলে রান্নাঘরে আর দুর্গন্ধ হওয়ার আশঙ্কা থাকে না।

বাড়িতে কোরবানির মাংস রাখার জন্য বড় বড় বারকোশ, প্লাস্টিকের বোল, অ্যালুমিনিয়ামের ডিশ ও ডেকচির ব্যবহার হয়। এই পাত্রগুলোকে ডিশওয়াশিং লিকুইড দিয়ে গরম পানিতে ধুয়ে ফেলতে হবে। রান্নাঘরের মেঝে থেকে তেল চিটচিটে ভাব দূর করা যায় না প্রথম দিনেই। তাই সব কাজ শেষে মেঝে গরম পানি এবং ফ্লোর ক্লিনার দিয়ে মুছে ফেলা হলেও পরদিন পুনরায় মেঝেটি একই নিয়মে মুছে ফেলুন। ফ্লোর মপগুলোকেও সাবান ও পরিষ্কার পানি দিয়ে বারবার ধুয়ে নেওয়া জরুরি।

লিকুইড এবং সলিড ডিশওয়াশ, ব্লিচিং পাউডার, চুন, ঈষদুষ্ণ পানি, ফ্লোর ক্লিনার, মপ, ঝাড়ু, পানি দিয়ে কোরবানি দেওয়ার স্থান পরিষ্কার করার জন্য হোসপাইপ ইত্যাদি উপকরণ হাতের কাছে আগে থেকেই গুছিয়ে রাখুন। এতে আপনার কোরবানি ক্লিনিং বোনানজা দ্রুততার সঙ্গে হবে।
ছবি: পেকজেলসডটকম