মিলান ফ্যাশন উইক: ক্লাসিক ও রেট্রো স্টাইলে ভারসাচের চমক
শেয়ার করুন
ফলো করুন

ভারসাচের প্রতিষ্ঠাতা জিয়ান্নি ভারসাচে গত হয়েছেন ২৬ বছর হলো। তবুও তাঁর অশরীরী উপস্থিতি এই ব্র্যান্ড থেকে সরানো গেল না! দোনাতেলা ভারসাচে ঘুরেফিরে ভাই জিয়ান্নির কাছেই ফিরে যান। সেদিক থেকে বলা যায়, ভারসাচের সবচেয়ে বড় মিউজ হলো জিয়ান্নি যুগের আর্কাইভ।

জিয়ান্নির ডিজাইন করা ভারসাচে শরৎ/শীত ১৯৯৫–এর কথা এখনো ফ্যাশন–সমালোচকেরা ভুলতে পারেন না। সেখানে তিনি ষাটের দশকের ফ্যাশন থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে অসাধারণ দুটি সংগ্রহ দাঁড় করেছিলেন। এবার দোনাতেলা পুরোনো আর্কাইভ ঘেটে ওই কালেকশনের ছায়ায় একটি গ্রীষ্মবান্ধব নান্দনিক সংগ্রহ নিয়ে মিলানে হাজির হয়েছেন।

এই সংগ্রহের মধ্য দিয়ে ঘরে ফিরল ভারসাচের পুরোনো চেকারবোর্ড প্যাটার্ন। সঙ্গে ব্র্যান্ডের সিগনেচার বারোক্কো, গ্রেকা ও মেডুসা প্রিন্ট তো আছেই। বেশির ভাগ পোশাকেই এর দেখা পাওয়া গেছে।

বিজ্ঞাপন

নতুন কালেকশনে নারী ও পুরুষ—উভয়ের জন্যই পোশাক রাখা হয়েছে। প্রতিটি পোশাকের কাট অত্যন্ত মিনিমাল। আগাগোড়া স্নিগ্ধতায় ভরপুর এই সংগ্রহে মেয়েদের জন্য আছে এ-লাইন মিনি ড্রেস, স্কার্ট-স্যুট কো-অর্ড সেট, শার্ট-বক্সার সেট, ওয়াইড প্যান্ট, টপ। মেয়েদের পোশাকে ষাটের দশকের মড স্টাইলের প্রভাব অনেক বেশি। ছেলেদের পোশাকের মধ্যে রয়েছে স্টাইলিশ ও আরামদায়ক ওয়াইড প্যান্ট, ওভারকোট, ঢোলা শার্ট, শার্ট-বক্সার সেট, স্যুট।

প্রতিটি পোশাক তৈরিতে ব্যবহৃত হয়েছে উচ্চমানের সিল্ক, টুইড ও চামড়া। বসন্ত ও গ্রীষ্মের গরমে আরামের কথা চিন্তা করে কালার প্যালেট বেছে নিয়েছেন এই কিংবদন্তি ডিজাইনার।

কোভিড–পরবর্তী সময়ে সংগত কারণেই উজ্জ্বল রংগুলোর ট্রেন্ড রাজত্ব করেছে। কিন্তু দোনাতেলা এবার প্যাস্টেল রংকে প্রাধান্য দিয়েছেন। এর মধ্যে আছে মিন্ট গ্রিন, ডাস্টি পিঙ্ক, পেল ব্লু ও পেল ইয়েলো। প্যাস্টেলকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে কিন্তু দোনাতেলা ক্ল্যাসিক সাদা, লাল ও কালোকে একদমই অবহেলা করেননি। বলে রাখা ভালো যে নিউইয়র্ক ও মিলানের ফ্যাশন উইকে এবার প্যাস্টেলের প্রাধান্য বেশি। অর্থাৎ, আগামী গরমের রঙের ধারা কিসের দখলে থাকবে, সেটার আঁচ পাওয়া যাচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

এই সংগ্রহের অনুষঙ্গ নিয়ে আলাদা করে বলা উচিত। এতে মেয়েদের জন্য আছে আলিয়া মিউলস, জিয়ান্নি রিবন পাম্প, জিয়ান্নি রিবন ব্যালেরিনা ফ্ল্যাটস, আলিয়া পাম্প, মেডুসা বাকল স্লিংব্যাক হিলস, থাই-হাই জিয়ান্নি রিবন ওপেন-টো বুটস এবং ছেলেদের জন্য ছিল মেডুসা ট্র্যাক স্যান্ডেল, মেডুসা ’৯৫ লোফার, হাইব্রিড লোফার মিউলস, অডিসি স্নিকারস। এমন বাহারি নামের জুতাগুলো সবারই মন কেড়েছে।

অন্যদিকে নানা ডিজাইনের দৃষ্টিনন্দন টোট ব্যাগগুলোও মুগ্ধ করেছে সবাইকে।
বরাবরের মতো ভারসাচের রানওয়ে মাতিয়েছেন এই সময়ের বিখ্যাত সব মডেলরা। ফ্যাশন শোতে হেঁটেছেন জিজি হাদিদ, কেন্ডাল জেনার, ভিট্টোরিয়া সেরেট্টি, প্রেশাস লি। প্রথমবারের মতো মডেল হিসেবে রানওয়েতে হেঁটেছেন প্রয়াত আমেরিকান বাস্কেটবল খেলোয়াড় কোবে ব্রায়ান্টের মেয়ে নাটালিয়া ব্রায়ান্ট এবং হলিউডের সাবেক দম্পতি জুড ল ও স্যাডি ফ্রস্টের মেয়ে আইরিস ল।

একদম শেষে দেখা গেল চমক। দোনাতেলার হাত ধরে প্রায় পাঁচ বছর পর রানওয়েতে ফিরলেন নব্বইয়ের দশকের অন্যতম বিখ্যাত সুপারমডেল ক্লদিয়া শেফার। এই জার্মান মডেলকে শেষ দেখা গিয়েছিল ২০১৮ সালে ভারসাচের স্প্রিং/সামার শোতে। তাঁর রাজসিক প্রত্যাবর্তনে ফ্যাশন–মহল বেশ উচ্ছ্বসিত। দোনাতেলা তাঁর নতুন সংগ্রহের সবচেয়ে চোখধাঁধানো পোশাকটি রেখেছিলেন শেফারের জন্য। চেকারবোর্ড প্রিন্টের মিন্ট গ্রিন ও রূপালি মেটাল মেশ কলাম ড্রেসের পুরোটাই ক্রিস্টালের পুঁতি দিয়ে এমবেলিশ করা। এই সুন্দর পোশাকটির সঙ্গে শেফার পরেছেন রূপালি জিয়ান্নি রিবন পাম্প।

সব মিলিয়ে এই গ্ল্যামারাস লুকে রানওয়েতে আলো ছড়িয়েছেন শেফার।
এদিকে কেন্ডালের সাজ নিয়েও বেশ আলোচনা হচ্ছে। হবে নাই–বা কেন! এই কালেকশনের অন্যতম স্নিগ্ধ ও আকর্ষণীয় পোশাকটি পরেছেন তিনি। সাদা ডাচেস মিনি ড্রেসের নেকলাইন নেকলেসের মতো এমব্রয়ডারি করা। পায়ে পরেছেন মেটালিক লেদার জিয়ান্নি রিবন ব্যালেরিনা ফ্ল্যাট। হাতে মেডুসা ’৯৫ টোট ব্যাগ। এই সাজে কেন্ডালকে খুব মিষ্টি লাগছে।

ছবি: ইনস্টাগ্রাম

প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৫: ০০
বিজ্ঞাপন