২০২৪ মাতাবে গুটিপা, ট্যান আর কালিন্দীর ট্রেন্ডি ব্যাগগুলো
শেয়ার করুন
ফলো করুন

হালের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিজেকে আকর্ষণীয় করে উপস্থাপন করতে পোশাকের সঙ্গে চাই ফ্যাশনেবল ব্যাগ। প্রয়োজনীয় সব জিনিসপত্র গুছিয়ে বেরিয়ে পড়তে বিকল্প নেই রুচিশীল একটি ব্যাগের। কারণ, শুধু ফ্যাশন সেন্স নয়, ব্যক্তিত্বও ফুটে ওঠে জুতসই অনুষঙ্গের মাধ্যমে। তাই পোশাক, অনুষ্ঠান ও কাজের ধরনের ওপর নির্ভর করে ব্যাগ পছন্দ করে থাকেন ফ্যাশনিস্তারা। এ বছর তো দারুণ দাপট দেখাচ্ছে টোটব্যাগ। সেই প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে নেই ক্রসবডি ব্যাগ, অফিস ব্যাগ ও মিনিমাল আকারের বিভিন্ন ঢঙের ব্যাগগুলো।

ফ্যাশনপ্রেমীরা এখন ক্রমেই বিদেশি ব্যাগ ছেড়ে দেশীয় উদ্যোক্তাদের চমৎকার কাঠামোর ব্যাগগুলোর দিকে ঝুঁকছেন। চলুন জেনে নিই, দেশীয় ব্যাগের অগ্রগণ্য উদ্যোগ গুটিপা, ট্যান আর কালিন্দীর স্বত্বাধিকারী তাসলিমা মিজি, তানিয়া ওয়াহাব ও মুনিয়া জামানের বয়ানে এ বছরের সম্ভাব্য সবচেয়ে বেশি ট্রেন্ডি ব্যাগগুলোর কথা।

বিজ্ঞাপন

গুটিপা

অ্যানোলা ও অ্যামালিয়ার কথা বলতে হয় প্রথমেই। কর্মজীবী নারীদের নিত্যদিন ব্যবহারে উপযুক্ত এই ব্যাগ দুটো। কারণ, অফিস হোক কিংবা কোনো দাওয়াত বা পার্টি, ব্যাগের লুক নিয়ে চিন্তা কমাবে অ্যানোলা ও অ্যামালিয়া। টপ হ্যান্ডেল ও লং বেল্ট উভয়েরই ব্যবস্থা আছে ব্যাগগুলোয়। রয়েছে তিনটি চেম্বার, একটি জিপ পকেট ও একটি মুঠোফোন পকেট। অফিসের কর্মব্যস্ত দিন হোক কিংবা সপ্তাহের শেষ—সব পরিবেশেই আভিজাত্য ফুটিয়ে তুলবে গুটিপার এই ব্যাগ দুটো। ব্যাগগুলো গুটিপার নিজস্ব কারখানায় তৈরি। ব্র্যান্ডের স্বত্বাধিকারী তাসলিমা মিজি বলেন, ‘আমরা সব সময় ক্রেতাদের গুণগত মানসম্পন্ন পণ্য দিয়ে থাকি। ব্যাগগুলো যেমন ফ্যাশনেবল, তেমনি আছে এর ব্যবহার–উপযোগিতা। তাই ক্রেতাদের চাহিদার শীর্ষে রয়েছে এসব ব্যাগ।’ দাম পড়বে তিন থেকে চার হাজার টাকা।

FARHANA AKTHER

দেশীয় ব্র্যান্ড গুটিপার তৈরি স্টাইলিশ মিনিমাল ব্যাগ 'লিলি হোবো মিনি' ক্যাজুয়াল হোক কিংবা পার্টি, যেকোনো আয়োজনে নজর কাড়বে সবার। চামড়ার তৈরি এই ব্যাগের উচ্চতা, প্রস্থ ও গভীরতা যথাক্রমে ৪.৫, ৮.৫ ও ২.৯ ইঞ্চি। ১টি চেম্বার, ১টি খোলা পকেট ও ১টি জিপ পকেট নিয়ে নিজস্ব স্টাইলের জানান দেয় ব্যাগটি। বেল্টেও আছে বৈচিত্র্য ও ট্রেন্ডের ছোঁয়া। অর্ধেক চামড়া ও অর্ধেক স্টিল ফিউশনের বেল্ট ব্যাগটিকে করেছে আরও আকর্ষণীয়। পশ্চিমা বা দেশীয় লুক যা–ই হোক, শোভা বর্ধন করবে 'লিলি হোবো মিনি'।

বিজ্ঞাপন

ট্যান

'বছরের শুরু আর শেষ দিকে শীতকে কেন্দ্র করে বিয়ের ধুম পড়ে যায়। আর এ সময় বিয়ে, পার্টি, ঘোরাঘুরিতে অভিজাত ফ্যাশন অনুষঙ্গ হিসেবে ব্যাগের চাহিদা বাড়ে', বলেন ট্যান-এর স্বত্বাধিকারী তানিয়া ওয়াহাব। লেদারের ব্যাগের পাশাপাশি জনপ্রিয় এখন ভ্রমণের উপযোগী হালকা ব্যাগ ও ট্যানের পাহাড়ি গামছার ব্যাগগুলো। গামছা ব্যাগগুলো ক্রেতারা এত পছন্দ করেন যে ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলোয় লঞ্চ করার আগেই স্টক শেষ হয়ে যায় বলে জানান তানিয়া।

লেদারের ব্যাগের ক্রেতারা বিশেষ। কারণ, লেদারপ্রেমীরা লেদার ছাড়া অন্য কিছু ব্যবহার করে সাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না। জেনুইন লেদারের ব্যাগে অভিনবত্ব আনতে ট্যানের সংযোজন হ্যান্ড পেইন্ট। বোহো, পাহাড়, সমুদ্র ও ভিন্নধর্মী সব ফ্লোরাল মোটিফে পেইন্ট করা হয় ব্যাগগুলো। এগুলো ভ্রমণের সঙ্গী হিসেবে বেশ জনপ্রিয় এ সময়। এক হাজার থেকে শুরু করে আট হাজার  টাকায় পাওয়া যায় এসব ব্যাগ। সামনের পাশে চুম্বক বাটন পকেট, পেছনে জিপ পকেট আর মাঝের চেম্বারে তিনটি জিপ পকেটে পুরে নেওয়া যাবে প্রয়োজনীয় সবকিছু। সবার পছন্দের লং বেল্ট ফিচারও বাদ যায়নি এসব ব্যাগ থেকে।

কালিন্দী

বছরজুড়ে সুতি শাড়ি পরার একটি ট্রেন্ড চলেছে। সুতি শাড়ির সঙ্গে জোড়া বেঁধে টোট ব্যাগও সমানভাবে পেয়েছে জনপ্রিয়তা, বিশেষ করে অল্পবয়সী মেয়েদের কাছে, জানান দেশীয় ব্যাগের উদ্যোগ কালিন্দীর প্রধান নির্বাহী মুনিয়া জামান। শাড়ির সঙ্গে মিলিয়ে বিভিন্ন রঙের টোট ব্যাগ এখন তরুণীদের পছন্দের তুঙ্গে। টোট ব্যাগে জায়গা যেমন বেশি, দামও তুলনামূলক কম। বিভিন্ন রঙের, ভিন্ন নামের ব্যাগগুলো ক্রেতাদের চাহিদার শীর্ষে রয়েছে, বলেন মুনিয়া। কালিন্দীর রূপসা, কলাপাতা নামের রঙিন টোটগুলো আসলেই ট্রেন্ডি আর সুবিধাজনক। ব্যাগের আধুনিক উপস্থাপনায় ভিন্নতা আনতে উদ্যোক্তারা বিভিন্ন চেষ্টা করে যাচ্ছেন। লিলি টোটকে তার প্রতিফলনই বলা যায়। কালিন্দী জলপদ্মের মোটিফে করেছে এই ব্যাগ। শাড়ি কিংবা কুর্তির সঙ্গে, অফিস অথবা চায়ের আড্ডায়, যেকোনো পোশাক আর যেকোনো জায়গায় অনায়াস মানানসই এই ব্যাগ। উন্নতমানের পাটের কাপড় দিয়ে তৈরি ব্যাগটি দেখতে ছোট হলেও এতে বহন করা যাবে টুকিটাকির পাহাড়। আয়োজন যা–ই হোক, ছোট এই লিলির মতো দেখতে ব্যাগটি বিশেষভাবে নজর কাড়বেই।

কালিন্দীর আরেকটি ফ্যাশনেবল ব্যাগ ক্রসবডি মাইনী, যা বেশ সাড়া ফেলেছে। নিয়মিত হাঁটাহাঁটি ও ভ্রমণে চাই হালকা ওজনের ছোট ব্যাগ। সেদিক থেকে মাইনী একটি আদর্শ ব্যাগ। দামও হাতের নাগালে। ৭.৫, ৯ ও ৩ ইঞ্চ উচ্চতা, প্রস্থ ও গভীরতার এই মাইনীর বিনিময় মূল্য ৬০০ টাকা। ক্রসবডি এই ব্যাগ মানিয়ে যাবে যেকোনো পোশাকের সঙ্গে। শতভাগ পাট ও চামড়ার সংমিশ্রণে ব্যাগটি বেশ ফ্যাশনেবল। মিনিমাল নকশার এই ব্যাগে পাওয়া যাবে একটি চেম্বার আর পাশে একটি জিপার পকেট।

ছবি: গুটিপা, ট্যান ও কালিন্দী

প্রকাশ: ০১ জানুয়ারি ২০২৪, ১৪: ৫২
বিজ্ঞাপন