২০২৩ সালে যে ৫টি শাড়ি নজর কেড়েছে
শেয়ার করুন
ফলো করুন

তাসনিয়া ফারিণের বিয়ের জামদানি  

চলতি বছরের ১১ আগস্ট দীর্ঘদিনের প্রেমিক শেখ রেজওয়ানকে বিয়ে করেন এই সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় মেধাবী অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বধূবেশে ফারিণের ছবি পোস্ট করার সঙ্গে সঙ্গে তা রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়। বিয়ের দিনে তাঁর সাদামাটা স্নিগ্ধ সাজে মুগ্ধ হননি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তারকাদের সাজ মুহূর্তেই ট্রেন্ডি হয়ে যায়। আমাদের এখানেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তাসনিয়াকে অনুসরণ করে এই বিয়ের মৌসুমে অনেক নতুন কনে একদম হালকা মেকআপে সাজছেন। তবে বিয়ের সাজে সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছে তাঁর পরনের লাল জামদানি শাড়ি। শাড়িজুড়ে ক্ল্যাসিক জামদানির জ্যামিতিক মোটিফের কাজ করা। শাড়িটা দেখলেও যেন চোখের শান্তি! এই সুন্দর শাড়ি তৈরি করেছে নব ঢাকা। জানা যায়, এটি তৈরিতে কারিগরদের সময় লেগেছে প্রায় এক বছর।

বিজ্ঞাপন

নিজের প্রথম বলিউড সিনেমার প্রিমিয়ারে জয়া আহসানের জামদানি

সারা বছর নানা ধরনের স্টাইলিশ লুক দিয়ে আলোচনায় ছিলেন এপার-ওপার বাংলার তুমুল জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। এই তো সেদিন, বলিউডে মুক্তি পেল তাঁর অভিনীত প্রথম হিন্দি সিনেমা ‘কড়ক সিং’। এই সিনেমার গ্র্যান্ড প্রিমিয়ারে জয়ার পরা জামদানি শাড়ি নিয়ে দুই দেশে ফ্যাশনপ্রেমীদের যেন চোখ ধাঁধিয়ে গেছে। সেদিন তিনি পরেছিলেন অনন্যসাধারণ এক জামদানি শাড়ি। হালকা বেগুনি সূক্ষ্ম বুননের জামদানিটিতে সোনালি জরির কারুকাজ। রয়েছে ম্যাজেন্টা ও উজ্জ্বল নীল বুটিও। এই স্টাইলিশ অভিনেত্রীর ব্লাউজটিও অত্যন্ত নজরকাড়া। টু-টোন শেডের ফেব্রিকসের বেগুনি ব্লাউজের হাতার বর্ডারে শাড়ির সঙ্গে ম্যাচিং ট্রিম। নেকলাইনে জমকালো জামদানি প্যাটার্নের লেইস। ঝলমলে এই জামদানিতে জয়া সত্যিই অনন্যা!

বিজ্ঞাপন

মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারে বাঁধনের নিরীক্ষাধর্মী শাড়ি

বাংলাদেশের জনপ্রিয় তারকা আজমেরী হক বাঁধন তাঁর অভিনয়ের পাশাপাশি অনবদ্য ফ্যাশন সেন্স দিয়ে ভক্তদের মন জয় করেছেন। বড় কোনো ইভেন্ট হলেই তিনি হাজির হয়ে যান চোখ ‘কপালে তোলা’ স্টাইলিশ লুকে। বেশির ভাগ সময় তাঁকে বিভিন্ন আয়োজনে জামদানি শাড়ি বেশি পরতে দেখা গেছে। কিন্তু চলতি বছর আয়োজিত মেরিল–প্রথম আলো পুরস্কার অনুষ্ঠানে এর ব্যতিক্রম ঘটেছে। বাঁধনের ভক্তরা জানেন যে তিনি তাঁর পোশাক-আশাক নিয়ে নিরীক্ষা করতে পছন্দ করেন। এই এক্সপেরিমেন্ট করেই তিনি এবার পরলেন মিরপুরের বেনারসি কাতান শাড়ি। শাড়িটির কালো জমিনে সোনালি সুতায় কলকি, ফুল ও বুটির কাজ করা। এর সঙ্গে পরেছিলেন ওয়েস্টার্ন ফিউশনধর্মী কালো ও নীল স্লিভলেস ব্লাউজ। র‍্যাপ স্টাইল এই ব্লাউজের পেছনে কাপড়ের গুচ্ছ দিয়ে ভিন্নধর্মী বো করা হয়েছে। এই সুন্দর শাড়ি ও ব্লাউজ ডিজাইন করেছেন চিত্রশিল্পী ও ফ্যাশন ডিজাইনার কুহু মান্নান। এমন গর্জিয়াস শাড়ির সঙ্গে গয়না ছিল একদম মিনিমাল। বাঁধন এক কানে পরেছিলেন স্টেটমেন্ট ইয়ার কাফ ইয়ারিং ও রিং। ইউনিক গয়না দুটি ডিজাইন করেছেন সিক্স ইয়ার্ড স্টোরির লরা খান।

ডলস হাউসের বিশ্বকবি–বন্দনার শাড়ি

বেশ কয়েক বছর ধরে শাড়িতে কবিতা বা কোনো মহীয়সী ব্যক্তিত্বের উক্তি বা গান লেখার চল দেখা যাচ্ছে। তরুণীদের মধ্যে এ ধরনের শাড়ির জনপ্রিয়তা ব্যাপক। এই ধারার কথা মাথায় রেখেই চট্টগ্রামে অবস্থিত বিখ্যাত ফ্যাশন ব্র্যান্ড ডলস হাউসের কর্ণধার আইভি হাসান এ ধরনের কিছু শাড়ি তৈরি করেছেন। তবে তিনি তাঁর ডিজাইনের মধ্য দিয়ে লেখা শাড়ির ট্রেন্ডকে অন্য মাত্রায় নিয়ে গিয়েছেন। আইভি হাসান সুতি শাড়িতে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কালজয়ী প্রেমের উপন্যাস ‘শেষের কবিতা’ থেকে নেওয়া ‘বিদায়’ কবিতাটি ক্যালিগ্রাফি করেছেন। অনেকে হয়তো ভাবতে পারেন, এমন কবিতা লেখা শাড়ি তো অনেক আছে, এ আর নতুন কী? তাঁদের জন্য বলছি, শাড়ির ক্যালিগ্রাফিতে রবি ঠাকুরের নিজের হাতের লেখা ব্যবহার করা হয়েছে। এখানে বিশ্বকবির স্বাক্ষরের পাশাপাশি কবিতাটি লেখার দিন-তারিখ-স্থানকাল—সবকিছু দেওয়া আছে। এ ছাড়া শাড়ির পাড় সাজানো হয়েছে কবির বিখ্যাত পেইন্টিং ‘র’ দিয়েও। আইভি হাসান এই নিয়ে বলেন, ‘শাড়িজুড়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিন্তা ও মননের চিত্র দেখা যায়। বিশেষ করে রং, বুননের প্রক্রিয়া আমাদের রবীন্দ্রযুগে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। হালকা ও গাঢ় বাদামি, নীল, সাদা-কালো, অফ হোয়াইট—এসব রঙে শাড়িটির প্রোডাকশন হয়েছে।’ আইভি হাসানের সিগনেচার শাড়িটি ডলস হাউসের এ বছরের বেস্টসেলার। দেশে ও দেশের বাইরেও এটির প্রচুর চাহিদা তৈরি হয়েছে।

কাদম্বরী এক্সক্লুসিভ বাই রজবীর ‘পদ্ম গল্প’

সুপরিচিত অনলাইন ফ্যাশন ব্র্যান্ড কাদম্বরী এক্সক্লুসিভ বাই রজবী চলতি বছরের পূজায় একটি বর্ণিল পূজার কালেকশন নিয়ে হাজির হয়েছিল। এতে ছিল সুতার কাজের নজরকাড়া সব জামাকাপড়। তবে এই সংগ্রহে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় হয়েছে ‘পদ্ম গল্প’ নামের শাড়িটি। শাড়িটিতে বাংলায় যত রঙের, যত প্রকারের পদ্ম ও শাপলা ফুল আছে এবং যত রকমের পাতা হয়, তা সুই-সুতার ফোঁড়ে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে পদ্ম ও শাপলা ফুলের আশপাশে যে ধরনের জলজ উদ্ভিদ থাকে, সেগুলোও স্থান পেয়েছে ডিজাইনে। এমনকি শাড়িতে নিপুণ কারিগরি কৌশলে তাজাপাতা, পচে যাওয়া পাতা, শুকনা পাতার রং নির্ভুলভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। ব্র্যান্ডটির কর্ণধার রজবী তাসনিম জানিয়েছেন, এই ‘পদ্ম গল্প’ নাকি তাঁর এ বছরের সবচেয়ে সাড়া জাগানো ডিজাইন।

প্রকাশ: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৩: ০০
বিজ্ঞাপন