ফাইটার হয়ে উঠতে দীপিকা যা যা করেছেন
শেয়ার করুন
ফলো করুন

এক যুগের বেশি সময় ধরে লাস্যময়ী ও গুণী অভিনেত্রী হিসেবে দর্শক মনে একক আধিপত্য বজায় রেখেছেন বলিউডের দীপিকা পাড়ুকোন। ফিটনেস থেকে শুরু করে ত্বকচর্চা, সবেতেই তাঁর জুড়ি মেলা ভার। তাই তো প্রায় চল্লিশের দোরগোড়ায় এসে পৌঁছালেও তাঁকে আদর্শের প্রতিমা হিসেবে মানেন ভক্তরা। গত বছর শাহরুখ খানের বিপরীতে ‘পাঠান’ আর ‘জাওয়ান’ নামে দুটি সিনেমায় দেখা গেছে দীপিকাকে। দুটোতেই তার রূপের নির্ভেজাল প্রশংসা করেছেন অনুরাগীরা।

ইদানীং সিনেমাগুলোয় অভিনেত্রীকে একদম ভিন্ন আবেদন, হালকা মেজাজ আর খোলামেলা পোশাকেই বেশি দেখা যায়। কেন এই পরিবর্তন জানতে চাইলে দীপিকা এক সাক্ষাৎকারে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে একই ধরনের সিনেমায় অভিনয় করে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন তিনি। ভারী পোশাক আর জুয়েলারি সামলাতে গিয়ে বেশ কয়েকবার চোট লেগেছে, হয়েছে রক্তক্ষরণও। জীবন মানেই তো পরিবর্তন। তাই এবার চরিত্র বাছাইয়ে খানিক পরিবর্তন ঘটাতে চান। তবে এ ধরনের ছবি করছেন বলে প্রস্তুতিতেও কিন্তু বিন্দুমাত্র ছাড় দেননি দীপিকা।

সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ফাইটার’ সিনেমায় স্কোয়াড্রন লিডার মিনাল রাঠোর ( মিন্নি) চরিত্রে অভিনয়ের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে বেশ খাটতে হয়েছে অভিনেত্রীকে। বিমান চালিকার চরিত্র ফুটিয়ে তোলা তো আর চাট্টিখানি কথা নয়। গতবছর অক্টোবরে শুরু হয় এই ছবির শুটিং। জুলাই থেকেই দীপিকা লেগে পড়েন তাঁর ফিটনেস ঠিক করার কাজে। রূপের ক্ষেত্রেও তাঁর ছিল সমান মনোযোগ। দীর্ঘকালীন শারীরিক কসরত এবং কড়া ডায়েটের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে অভিনেত্রীকে। নিজেকে পর্দায় সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলতে নিয়েছেন নানা পদক্ষেপ। আসুন জেনে নিই ‘যোদ্ধা’ মিন্নি রাঠোর অর্থাৎ দীপিকা পাড়ুকোনের প্রস্তুতির অদ্যোপান্ত :

বিজ্ঞাপন

মেনে চলেছেন পরিকল্পিত ডায়েট

দীপিকা বরাবরই স্বাস্থ্যসচেতন। যদিও বহুদিন থেকেই বিভিন্ন সাক্ষাৎকার আর অনুষ্ঠানে নিজেকে একজন ভোজনরসিক ভারতীয় হিসেবে দাবি করতে দ্বিধা ছিল না তাঁর। তবে তেলেভাজা আর চিনিজাতীয় খাবার যথাসম্ভব এড়িয়ে চলেন নায়িকা। দক্ষিণি খাবারের পাশাপাশি সকালের নাশতায় খান সেদ্ধ ডিম। তাঁর দুপুরের মেন্যুতে থাকে মাছ ও সবজি। রাতে রুটি আর সবজিই তাঁর পছন্দ। ভারতীয় খাবারের বাইরে দীপিকা খাবারের পর মিষ্টি হিসেবে খান ডার্ক চকলেট! তবে দীপিকার খাবারের তালিকায় প্রথম পছন্দ সবুজ শাক-সবজি। দীপিকার মতে, সবুজ সবজি ত্বকের জেল্লা ধরে রাখার এক মোক্ষম হাতিয়ার। তিনি নিয়মিত প্রচুর পানি পান করেন। পান করেন ডাবের পানিও। ত্বককে সতেজ রাখতে এর চেয়ে ভালো উপায় আর কীই–বা হতে পারে!

বিজ্ঞাপন

নিয়মিত ঘুম ও ব্যায়াম

এমনিতে দীপিকা তার ত্বকের সৌন্দর্য ধরে রাখতে বরাবরই বেশ খুঁত খুঁতে স্বভাবের। সুশৃঙ্খল জীবনযাপনকে তিনি রাখেন সবার প্রথমে। ছোটবেলা থেকেই ফিটনেসের সঙ্গে তাঁর বেশ সখ্য। বাবা প্রকাশ পাড়ুকোন ছিলেন নামকরা ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়। সিনেমাজগতে আসার আগে দীপিকা নিজেও খেলেছেন বেশ কিছুদিন। নিয়মিত ঘুম, ব্যায়াম ও পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতাকে তিনি তাঁর যাপনের অবিচ্ছেদ্য অংশ করে রেখেছেন শুরু থেকেই। এক সাক্ষাৎকারে এ–ও বলেন অভিনেত্রী, ‘প্রতিদিন জিমে যাওয়াকে আমি আমার দিনের সঠিক শুরু বলে মনে করি।’

অভিনেত্রীর ফিটনেস ট্রেইনার ইয়াসমিন করাচিওয়ালার নির্দেশনায় সপ্তাহে ছয় দিনই কমপক্ষে এক ঘণ্টা করে শারীরিক কসরত করেন দীপিকা। ‘ফাইটার’ সিনেমার জন্য ‘কার্ডিও’ এবং শরীরকে যথাসম্ভব নমনীয় করার জন্য করেছেন উপযুক্ত ব্যায়াম। দীপিকার রোজকার একটি পছন্দের ব্যায়াম কৌশল হলো ‘পিলাতেস’, যা মাংসপেশি মজবুত করতে সাহায্য করে। শুধু তো শারীরিক সুস্থতার প্রতি মনোযোগী হলেই চলবে না। প্রয়োজন মানসিক ও আত্মিক সুস্থতাও। এ কথা বেশ ভালো করে জানেন দীপু। নিয়মিত করেন যোগব্যায়াম। মিনাল রাঠোরের চরিত্রকে বাস্তবে রূপদান করতে তিনি শিখেছেন মার্শাল আর্ট। মার্শাল আর্ট হচ্ছে চীন, জাপান এবং কোরিয়ায় প্রচলিত একধরনের আত্মরক্ষা কৌশল।

এ ছাড়া এই ছবির গানে নাচের দৃশ্যের জন্য বেশ কয়েক দিন টানা নাচ চর্চা করতে হয় তাঁকে। নিজের ইনস্টাগ্রামে এই তথ্য মজার ছলে প্রকাশ করেন তিনি। সবশেষে একজন ভোজনরসিকের তো খাবারের প্রতি ঝোঁক থাকবে বলাই বাহুল্য। তাই তো স্বয়ং ‘ফাইটার’-এর সেট থেকে আইসক্রিম হাতে ছবি দিয়ে ক্যাপশনে লেখেন ‘মাই কোল্ড মিল’

ছবি: দীপিকা পাড়ুকোনের ইন্সটাগ্রাম

প্রকাশ: ২৫ জানুয়ারি ২০২৪, ১২: ০০
বিজ্ঞাপন