যে ১০টি লক্ষণ বলে দেবে আপনি অতিরিক্ত মেকআপ করে ত্বকের ক্ষতি করছেন

কীভাবে বুঝবেন আপনি খুব বেশি মেকআপ করে ফেলেছেন? যদি আপনার মেকআপ কেকের ওপর আইসিংয়ের মতো মনে হতে শুরু করে, তবে বুঝে নিন বেশি মেকআপ করেছেন। মেকআপ একটি শিল্প এবং বছরের পর বছর ধরে মেকআপ আর্টিস্টরা বিভিন্ন প্রসাধনী দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে দারুণ সব লুক তৈরি করেন। আপনি বোল্ড লুক চান কিংবা সিম্পল-ন্যাচারাল লুক, মেকআপ প্রয়োগ করা কোনো সহজ কাজ নয়। পারফেক্ট মেকআপের অনেক কিছুই নির্ভর করে আপনি তা কীভাবে প্রয়োগ করছেন, তার ওপর। মেকআপ যাতে বেশি ভারী বা অস্বাভাবিক না দেখায়, এ জন্য কিছু নিয়ম মেনে মেকআপ করতে হবে।

কীভাবে বুঝবেন অতিরিক্ত মেকআপ করেছেন, আর তা সংশোধন করতে এ ১০টি টিপস ফলো করুন:

মাসকারা, কাজল বা আইলাইনার খুব বেশি পরিমাণে ব্যবহার করলে চোখের চারপাশ বৃত্তাকারভাবে কালো দেখাবে, যা দেখতে হবে রেকুনের চোখের মতো। সাধারণত যখন মেকআপ করা হয়, তখন সবাই ঘরেই থাকে। অর্থাৎ ঘরের তাপমাত্রার সম্পূর্ণ নিজের নিয়ন্ত্রণেই থাকে। কিন্তু বাইরে বেরোলেই তাপমাত্রার নিজের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। গরম একটু বেশি হলেই ঘাম হবে। আর ঘামলেই মাসকারা, কাজল ও আইলাইনার গলতে শুরু করবে। এতে চোখের চারপাশ কালো ও ক্লান্ত দেখাবে। এর অর্থ হচ্ছে মাসকারা, আইলাইনার ও কাজল—তিনটি কখনো একসঙ্গে ব্যবহার করা যাবে না। আর এগুলো ছড়িয়ে পড়লে ঘষাঘষি না করে একটি ন্যাপকিন বা মেকআপ ওয়াইপ দিয়ে হালকা হাতে ড্যাব করে মুছে নিতে হবে।

মুখ যদি ঘাড় ও হাতের চেয়ে পাঁচ শেড হালকা দেখায়, তবে ধরে নিতে হবে মেকআপ সঠিক হয়নি। মনে রাখবেন, মেকআপ ত্বকের স্বাভাবিক রং লুকানোর কোনো উপকরণ নয়। কনসিলার ও ফাউন্ডেশন ত্বকের প্রাকৃতিক টোন উজ্জ্বল করতে নয়, বরং তা আরও সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে ব্যবহার করা হয়। তাই ফাউন্ডেশন বা কনসিলার কেনার আগে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে এটি নিজের স্কিন টোনের সঙ্গে মানানসই কি না।

সবাই পেশাদার মেকআপ শিল্পী নয়। আর সত্যি কথা বলতে, চোখের মেকআপ করা বেশ কঠিন। ভ্রু এত নিখুঁতভাবে আঁকা চলবে না, যাতে এটি দেখতে অবাস্তব লাগে। নিজের ভ্রুর সঙ্গে মেলে এমন রঙের আই ব্রাউ পেনসিল বেছে নিতে হবে এবং ভ্রু ভরাট দেখাতে হালকা স্ট্রোকের সাহায্যে ফাঁকা জায়গাগুলো পূরণ করতে হবে। ভ্রু চারদিকে আউটলাইন করা কখনোই উচিত নয়।

মেকআপ রিমুভিং সলিউশনের সাহায্যে সঠিক মাত্রার মেকআপ ওঠাতে পাঁচ মিনিটের বেশি সময় লাগা উচিত নয়। মেকআপ রিমুভারে তুলার প্যাড কিছু সময় ভিজিয়ে রেখে, প্যাডটি দিয়ে আলতোভাবে পুরো মুখ মুছে নিতে হবে। দুই থেকে তিনটি ওয়াইপ দিয়ে যদি পুরো মেকআপ উঠে না আসে, তার মানে প্রয়োজনের অতিরিক্ত মেকআপ ব্যবহার করা হয়েছে।

বেশির ভাগ সময়ই বলিরেখা ঢাকতে, ত্বককে নিখুঁত ও সমান দেখাতে হাইলাইটার বা কনসিলার ব্যবহার করা হয়। এর পরিমাণ যদি অতিরিক্ত হয়ে যায়, তা হলে চেহারা পাল্টে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

যদি কনসিলার বা ফাউন্ডেশন সঠিকভাবে মিশ্রিত না হয়, তবে এর ফলে ঘাড় ও চিবুকের ওপর অস্পষ্ট ফাইন লাইন দেখা দেবে। এ সমস্যা এড়াতে বিউটি ব্লেন্ডারের সাহায্যে ফাউন্ডেশন সঠিকভাবে ব্লেন্ড করা উচিত।

ফলস আইল্যাশ আমাদের চোখের সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু ঠিকভাবে সেট না হলে তা দেখতে নকল ও চোখের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ লাগে। ফলস আইল্যাশ চোখে ল্যাশ-গ্লু দিয়ে ঠিকভাবে সেট করার পর সব সময় মাসকারা ব্যবহার করা উচিত। এতে পাপড়িগুলো আলাদা আলাদা দেখাবে না, ন্যাচারাল একটি লুক আসবে।

যদি মেকআপের ওজন মুখের ত্বকে ভারী অনুভূত হয়, তবে বুঝে নিতে হবে মেকআপ বেজ বেশি ভারী হয়েছে। মেকআপের বেজ সুন্দর করতে ময়েশ্চারাইজার, কনসিলার ও ফাউন্ডেশন পরিমাণমতো নিতে হবে এবং মুখে ভালোভাবে ব্লেন্ড করতে হবে। মেকআপ বেজ তৈরি করার সময় একটি প্রোডাক্ট ব্যবহার করার পর অন্য আরেকটি প্রোডাক্ট ব্যবহার করার আগে কিছুটা সময় নিতে হবে।

সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী, মেকআপে চেহারার শুধু একটি বৈশিষ্ট্য স্পষ্ট করতে জোর দেওয়া উচিত। যদি চোখকে আকর্ষণের কেন্দ্রে নিতে চান, তবে ঠোঁটে হালকা রঙের লিপস্টিক ব্যবহার করতে হবে। যদি গাঢ় রঙের লিপস্টিক ব্যবহার করা হয়, তবে আই লুক হতে হবে হালকা।

মেকআপ করা শেষে সব সময় মেকআপ ফিক্সিং স্প্রে ব্যবহার করতে হবে। এতে সাজ নষ্ট হবে না এবং দীর্ঘস্থায়ী হবে। হেভি মেকআপ নেওয়ার ক্ষেত্রে মেকআপের বেজের প্রতিটি প্রসাধনী মুখে লাগানোর পর একবার করে ফিক্সিং স্প্রে ব্যবহার করা উচিত। এতে এই বেজ একদমই নষ্ট হবে না। ত্বক ভালো রাখতে অবশ্যই উন্নত মানের ভালো ব্র্যান্ডের প্রসাধনী ব্যবহার করতে হবে।

ছবি: পেকজেলসডটকম