কিনোয়া ও চিয়া সিড বাংলাদেশের জন্য নতুন ধরনের ফসল। চরের চাষিদের দিয়ে চাষ করে বাজারে নিয়ে আসার লক্ষ্যে কাউনট্রির এই প্রচেষ্টা। চর এলাকাগুলো বর্ষাকাল এলেই প্লাবিত হয়। চাষাবাদের সময়ও পাওয়া যায় কম। যেহেতু একটা ঋতু কোনো ফলনই করা যায় না, তাই চরের চাষিদের জন্য লাভজনক কী করা যায়, সেই চিন্তা থেকে কাউনট্রির এই যাত্রা।
অন্যদিকে চিয়া সিড ও কিনোয়া বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলোচিত হেলথ ফুড। যার পুরোটাই আমদানি করতে হতো। অল্প জায়গায় প্রথমে পরীক্ষামূলক চাষাবাদ শুরু করেন রুহুল আমিন। তারপর বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রায় ১০০ বিঘা জমিতে চাষ করেছেন কিনোয়া ও চিয়া সিড।
চিয়া সিডের আদি জন্মস্থান সেন্ট্রাল আমেরিকা হলেও বাংলাদেশের মাটি এই ফসল চাষের জন্য উপযুক্ত, কম যত্নে উৎপাদন ভালো হয়। বাংলাদেশের অন্যান্য রবিশস্যের মতো হওয়ায় কৃষকদের কাছেও এই সুপারফুড চাষাবাদ চ্যালেঞ্জিং কিছু নয়। শর্ষে, ভুট্টার মতোই রোপণ করে নিয়মিত পানি দিলেই বেড়ে ওঠে চিয়াগাছ, জানান রুহুল আমিন।
দৌলতদিয়ার ধোপাগাতী চরে কাজ করার মূল উদ্দেশ্য চরের কৃষকদের তিন মাসেই লাভজনক ফসল চাষাবাদের সঙ্গে পরিচিত করা। এতে তাঁদের আর্থিক উন্নয়ন যেমন হবে, তেমনি চরে মানুষের আসা-যাওয়াও বাড়বে। রুহুল আমিন বলেন, ‘তিন মাস কৃষকেরা চিয়া সিড চাষ করলে বছরের বাকি সময় অন্যান্য শস্য চাষ করতে পারবেন। আর বাজারে চিয়া সিড ও কিনোয়ার চাহিদা থাকায় তাঁরা একবার ফলন থেকেও আর্থিকভাবে সচ্ছল হতে পারেন।’
বিঘাপ্রতি মাত্র ৪০০ গ্রাম বীজ রোপণ করে পাওয়া যাবে প্রায় ৩ মণ বা ১২০ কেজি থেকে ৪ মণ বা ১৬০ কেজি চিয়া সিড। রুহুল আমিন চান, আমদানি কমিয়ে বাংলাদেশে চিয়া সিড ও কিনোয়ার বাজার দখল করতে। বলেন, বিভিন্ন অঞ্চলের ১০০ বিঘা জমিতে এ বছর চাষ করেছেন। আগামী বছর ১০ গুণ বাড়িয়ে ১ হাজার বিঘা জমিতে কিনোয়া ও চিয়া সিডের চাষ করতে চান এই তরুণ উদ্যোক্তা।
পূর্বপরিচিত না হওয়ায় অনেকেই আগাছা মনে করে ঘাসের সঙ্গে কেটে নিয়ে যান। তাই গ্রামের সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করতে হচ্ছে, জানান এই স্বপ্নবাজ তরুণ।