উষ্ণতম স্থানের তালিকায় প্রথমেই আছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের ডেথ ভ্যালি নামে পরিচিত স্থানটি। জায়গাটি পরিচিত তার শুষ্ক ও রুক্ষ পরিবেশের জন্য। বলা হয়, এ অঞ্চলে রেকর্ড করা সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৫৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গ্রীষ্মকালে এর গড় তাপমাত্রা থাকে প্রায় ৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মজার বিষয় হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের শুষ্কতম স্থান হওয়া সত্ত্বেও জায়গাটিতে এখনো ২৪ জন মানুষ বসবাস করছে।
কেবিলি উত্তর আফ্রিকার অন্যতম পুরোনো মরূদ্যান। তারপরও দীর্ঘদিন ধরে সেখানে মানুষ বসবাস করে আসছে। এই কেবিলিতেই দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। গ্রীষ্মকালে জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে এর গড় তাপমাত্রা থাকে প্রায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং রাতে সেটি কমে দাঁড়ায় ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। মরুর বুকে এত প্রতিকূলতার মধ্যেও সেখানে প্রায় ১ লাখ ৫৬ হাজার মানুষ বসবাস করে।
২০১৬ সালের জুলাই মাসে কুয়েতের মিত্রিবাহের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৫৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা কিনা পৃথিবীর তৃতীয় সর্বোচ্চ রেকর্ডকৃত তাপমাত্রা এবং এশিয়ায় এখন পর্যন্ত এটাই সর্বোচ্চ। জুলাই মাসে এখানকার গড় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যায়। তাই এখানকার মানুষ দিনের মধ্যভাগে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত ভবনে থাকার চেষ্টা করে।
আজিজিয়া লিবিয়ার একটি ছোট শহর। এখানকার জলবায়ু উষ্ণ ও অর্ধশুষ্ক। দীর্ঘকাল ধরে স্থানটিকে পৃথিবীতে রেকর্ডকৃত সবচেয়ে উষ্ণতম জায়গা বলে বিবেচনা করা হতো। তবে ২০১২ সালে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা জানায়, ১৯২২ সালে রেকর্ড করা ৫৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস আসলে একটি ভুল ছিল। কারণ হিসেবে তারা জানায়, ডেটা রেকর্ড করা ব্যক্তির অনভিজ্ঞতার কারণেই এমনটি হয়েছিল। তবু গ্রীষ্মের মাঝামাঝি সময়ে এখানকার নিয়মিত তাপমাত্রা ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যায়। যার ফলে অঞ্চলটিতে বসবাস করা ২৪ হাজার বাসিন্দা দিনের মাঝামাঝি সময়ে ঘরের ভেতরে থাকার চেষ্টা করে।
পাকিস্তানের বেলুচিস্তানের এই শহরে রেকর্ডকৃত ৫৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এখন পর্যন্ত পৃথিবীর চতুর্থ উষ্ণতম স্থান। জুলাই মাসে এই স্থানের গড় তাপমাত্রা থাকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আফ্রিকার এ অঞ্চল তার বিশেষ বৈশিষ্ট্যের জন্য বিখ্যাত। জনবসতিপূর্ণ স্থানগুলোর মধ্যে পৃথিবীর সর্বোচ্চ গড় তাপমাত্রার রেকর্ডটি নিজের দখলে রেখেছে ডালোল। এখানকার গড় তাপমাত্রা ৩৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, দিনের কোনো অংশে তা ৪১ ডিগ্রি পর্যন্ত পৌঁছায়। ডলোল পৃথিবীর সবচেয়ে প্রান্তিক স্থানগুলোর মধ্যে একটি। তাই এখানে যেতে চাইলে আপনাকে গাধার পিঠে উঠতে হবে।
আফ্রিকা মহাদেশের এই মরুভূমি বিশ্বের বৃহত্তম উষ্ণ মরুভূমি হিসেবেই সবার কাছে পরিচিত। আফ্রিকার প্রায় অধিকাংশ জায়গাই সাহারা তার নিজের দখলে রেখেছে। পৃথিবীর যেকোনো স্থানের চেয়ে সাহারায় পানি দ্রুত বাষ্পীভূত হয়। এই মরুভূমিতে বৃষ্টি নেই বললেই চলে। তাই সব সময় এই অঞ্চল রৌদ্রোজ্জ্বল ও শুষ্ক হয়ে থাকে। অঞ্চলটির আকাশে মেঘের অনুপস্থিতি থাকায় সূর্যের তীব্র আলো সরাসরি মরুভূমির বুকে পড়ে। সেই তাপের বিকিরণের ফলে অঞ্চলটি আরও বেশি তাপের অধিকারী হয়ে ওঠে। তাই অনেক সময় সাহারার বালুর তাপমাত্রা ৮৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে যায়।
লুত মরুভূমি ইরানের একটি বিস্তীর্ণ লবণ মরুভূমি। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে শুষ্ক ও উষ্ণতম স্থানগুলোর মধ্যে একটি এবং এর বালুপৃষ্ঠের তাপমাত্রা ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছায়।
অস্ট্রেলিয়ার প্রত্যন্ত এই শহরে ১৯৬০ সালে রেকর্ডকৃত ৫০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা স্থানটিকে দক্ষিণ গোলার্ধের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার অধিকারী করে তুলেছে।
মালির এই শহর ইতিহাস–ঐতিহ্যের দিক থেকে বেশ সমৃদ্ধ। অঞ্চলটি মরুভূমির উষ্ণ জলবায়ুর অধিকারী হওয়ায় বছরের কোনো অংশেই এর তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামে না। আর গ্রীষ্মে এখানকার দৈনিক গড় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যায়।