ভ্রমণ লেখক সুমন্ত গুপ্তের ভ্রমণ উপাখ্যান ভ্রমি শ্রীভূমি। এ বইটিতে স্থান পেয়েছে দুটি পাতা একটি কুঁড়ির দেশ সিলেট ভ্রমণের আদ্যোপান্ত।
১৯১৯ সালের ৫ নভেম্বর। হেমন্তের শীত শীত সকাল। চারদিকে কুয়াশার চাদর। তার ভেতর থেকেই যেন একটি ট্রেন এসে থামল সিলেট রেলস্টেশনে। প্রতিদিনই যেমন থামে। তবে এই ট্রেন থেকে নেমে এলেন দীর্ঘ শুভ্রকেশ আর শ্মশ্রুমণ্ডিত বিশেষ একজন। ছয় বছর আগে যিনি উপমহাদেশের প্রথম ব্যক্তি হিসেবে নোবেল জয় করেছেন। অবশ্য গান আর কবিতায় তারও আগে তিনি জয় করে নিয়েছেন বাঙালির হৃদয়। শ্রীহট্টে পা রাখলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ভ্রমণকালে এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে মুগ্ধ হয়ে সিলেটকে নিয়ে একটি কবিতাও লেখেন তিনি।
সে সময় বাংলা থেকে বিচ্ছিন্ন করে সিলেটকে আসামের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছিল। এ নিয়ে আক্ষেপও ফুটে ওঠে রবীন্দ্রনাথের কবিতায়। শতাধিক বর্ষ পরেও সিলেটের বর্ণনা দিতে গিয়ে এখনো অনেকেই দ্বারস্থ হন সেই কবিতার— ‘মমতাবিহীন কালস্রোতে/ বাঙলার রাষ্ট্রসীমা হোতে/ নির্বাসিতা তুমি/ সুন্দরী শ্রীভূমি।/ ভারতী আপন পুণ্য হাতে/ বাঙালির হৃদয়ের সাথে/ বাণীমালা দিয়া/ বাঁধে তব হিয়া/ সে বাঁধনে চিরদিনতরে তব কাছে/ বাঙলার আশীর্বাদ গাঁথা আছে।’
এই সুন্দরী শ্রীভূমিকে নিয়ে ভ্রমণ লেখক সুমন্ত গুপ্তের ভ্রমণ উপাখ্যান ‘ভ্রমি শ্রীভূমি’। এই বইতে স্থান পেয়েছে ‘দুটি পাতা একটি কুঁড়ি’র দেশ সিলেট ভ্রমণের আদ্যোপান্ত। এই ভ্রমণগ্রন্থ পড়ে একজন পর্যটক খুব সহজে তাঁর ভ্রমণ গন্তব্য সম্পর্কে ধারণা নিতে পারবেন। সহজে বললে বইটি সঙ্গে থাকলে একজন মানুষ খুব সহজেই সিলেটের সব জনপ্রিয় ভ্রমণ গন্তব্যে ঘুরে আসতে পারবে, আর বাড়তি পাওয়া হিসেবে থাকছে সিলেটের হোটেল আর রিসোর্টগুলোর তথ্য। বইটি প্রকাশ করেছে অক্ষরবৃত্ত প্রকাশন। প্রচ্ছদ করেছেন সব্যসাচি মিস্ত্রী। সুমন্ত গুপ্তের জন্ম শ্রীভূমি সিলেটে।
সুমন্তের শৈশব ও কৈশোর কেটেছে সিলেট শহরে। সুমন্ত সিলেটের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে যুক্ত ছোটবেলা থেকেই। জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় লিখছেন নিয়মিত। সিলেটে প্রতিনিধিত্বকারী সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘শ্রুতি সিলেট’–এর প্রতিষ্ঠাতা সুমন্ত গুপ্ত। সুমন্তের প্রকাশিত বইগুলো হচ্ছে স্বল্পদৈর্ঘ্য ভ্রমণ (ভ্রমণকাহিনি-২০১৭), সাফল্যের গল্পগাথা (২০১৮) , বঙ্গবন্ধু (২০১৯), নারীর ক্ষমতায়নে বঙ্গবন্ধু (২০২১)। একজন বঙ্গবন্ধু (২০২১)।
বইটি পাওয়া যাচ্ছে একুশে বইমেলার অক্ষরবৃত্ত স্টল ৯৩ ও চট্টগ্রাম বইমেলার অক্ষরবৃত্ত স্টলে।
ছবি: সুমন্ত গুপ্ত