এশিয়া মহাদেশের প্রাচীন ও বৃহত্তম বটগাছ
শেয়ার করুন
ফলো করুন

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার মালিঘাট ইউনিয়নের বেথুলী মৌজায় সুইতলা মল্লিকপুরে রয়েছে এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম বটগাছটি। ১১ একর জমিজুড়ে রয়েছে এর অস্তিত্ব। এর উচ্চতা আনুমানিক ২৫০ থেকে ৩০০ ফুট। বর্তমানে গাছটি খণ্ড খণ্ড হয়ে ৫২টি বটগাছে রূপ নিয়েছে। ১৯৮২ সালের আগপর্যন্ত এশিয়ার বৃহত্তম বটগাছ বলে পরিচিত ছিল কলকাতার বোটানিক্যাল গার্ডেনের একটি গাছ। পরবর্তী সময়ে বিবিসির এক তথ্যানুষ্ঠান প্রতিবেদনে জানানো হয়, কালীগঞ্জ উপজেলার বেথুলী মৌজার সুইতলা মল্লিকপুরের বটগাছই এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম বটগাছ। অবস্থান ও নামকরণ নিয়ে রয়েছে নানা কিংবদন্তি। এটি কারও কাছে সুইতলার বটগাছ, কারও কাছে সুইতলা মল্লিকপুরের বটগাছ, আবার কারও কাছে বেথুলীর বটগাছ বলে পরিচিত।

এলাকার বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিদের কাছে জানা যায়, একটি কুয়ার পাড়ে ছিল এই গাছের মূল অংশ। তখন জনবসতি ছিল খুবই কম। রাস্তার পাশে এই গাছ ছিল ডালপালা–পাতায় পরিপূর্ণ। গাছের নিচে রোদ বৃষ্টি পড়ত না। মাঘ মাসের শীতের রাতেও গাছের তলায় গরম থাকত। গরমকালে গাছের নিচে ঠান্ডা লাগত। পথিকেরা গাছের তলায় শুয়ে-বসে বিশ্রাম নিত। প্রবীণ ব্যক্তিদের ধারণা, পথশ্রান্ত পথিকেরা যখন এই মনোরম স্থানে শুয়ে–বসে বিশ্রাম নিত, তখন থেকেই অনেকের কাছে এটি সুইতলা বটগাছ নামে পরিচিতি লাভ করে।

আর এর থেকেই নামকরণ হয় সুইতলা বটগাছ। কারও কাছে এর অবস্থান বেথুলী মৌজায়, তাই বেথুলী বটগাছ হিসেবে এর ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। পথশ্রান্ত লোকজন বটগাছের নিচে বসে বিশ্রাম করত, সময় কাটাত। এ জন্য মল্লিকপুর গ্রামের কতিপয় ব্যক্তি বটগাছের পাশে দোকান বসিয়ে ব্যবসা শুরু করে। মল্লিকপুরের ব্যবসায়ীদের ব্যবসাকেন্দ্রের নামেই মল্লিকপুরের বটগাছ হিসেবে এটি পরিচিত লাভ করে।

বিজ্ঞাপন

যেভাবে আসবেন

ঢাকা থেকে ঝিনাইদহের দূরত্ব ২০০ কিলোমিটার। আর গন্তব্য পর্যন্ত, অর্থাৎ কালীগঞ্জ পৌঁছাতে আরও ১৬ কিলোমিটার যেতে হয়।
রাজধানী ঢাকা থেকে প্রতিদিন ঝিনাইদহ ও কালীগঞ্জের উদ্দেশে বেশ কিছু এসি, নন–এসি পরিবহন ছেড়ে আসে; আবার ঢাকাসহ বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে ফিরে যায়। এসব পরিবহনের মধ্যে চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্স, রয়েল পরিবহন, জে আর পরিবহন, পূর্বাশা, মেহেরপুর ডিলাক্স, দর্শনা ডিলাক্স, ঝিনাইদহ লাইন অন্যতম।

এশিয়ার বৃহত্তম এই বটগাছ কালীগঞ্জ উপজেলা শহর থেকে আট কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সেখানে একটি রেস্টহাউস রয়েছে, তবে সেখানে এক-আধবেলা বিশ্রাম নেওয়া যায়। আশপাশে কিছু দোকানপাট রয়েছে, সেখানে হালকা নাশতা করা যায়। তবে রাতে থাকার জন্য কালীগঞ্জ উপজেলা শহরে কয়েকটি সরকারি-বেসরকারি রেস্টহাউস রয়েছে। বেসরকারি হোটেলে এসি, নন–এসি ডরমিটরি ও ক্যানটিন আছে। এসিতে ভাড়া ২ জনের ১ হাজার টাকা করে, আর নন–এসিতে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে। এ ছাড়া জেলা পরিষদ ডাকবাংলো, কালীগঞ্জ মোবারকগঞ্জ সুগারমিল রেস্টহাউসগুলোতেও থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। এসি–সুবিধাও রয়েছে, বেডপ্রতি মাত্র ১২০ টাকা ভাড়া পড়বে।

ঝিনাইদহের বিখ্যাত মিষ্টি খেয়ে আসতে ভুলবেন না। রসগোল্লা, চমচম, কালোজাম, সাদাজাম, পদ্মা, পাখিসাঁচ, দানাদার, কদম, রাজভোগ, খেজুর, রসমালাই পেয়ে যাবেন মিষ্টির দোকানগুলোতে।

বিজ্ঞাপন
প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৮: ০০
বিজ্ঞাপন