শহর থেকে একটু দূরে, ঢাকার খুব কাছেই গাজীপুরে, অপেক্ষা করছে এমনই এক রঙিন প্রশান্তির ঠিকানা—কাতুরিয়া পদ্মবিল। পদ্মফুলে মোড়া সেই নিঃশব্দ জলাভূমি যেন এক অপার্থিব জগৎ, যেখানে মিলবে প্রকৃতির বিশুদ্ধ সৌন্দর্য আর হৃদয় জুড়িয়ে দেওয়া নীরবতা।
এই জায়গাটির নাম এখনো অনেকের কাছে অপরিচিত হলেও, সোশ্যাল মিডিয়ার হাত ধরে ছড়িয়ে পড়ছে এর সৌন্দর্যের গল্প। স্থানীয়রা যাকে বলেন ‘কাতুরিয়া বিল’, ভ্রমণপিপাসুদের কাছে তা এখন পরিচিত ‘পদ্মবিল’ নামে। বর্ষা এলেই বিলজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে গোলাপি পদ্মফুলের সৌন্দর্য—যেন জলরঙে আঁকা এক চলমান ক্যানভাস।
নৌকায় ভাসতে ভাসতে পদ্ম দেখার অভিজ্ঞতা
পদ্মবিল উপভোগের সবচেয়ে সহজ ও দারুণ উপায় হলো ডিঙি নৌকায় ভ্রমণ।
সময়: প্রতি নৌকা এক ঘণ্টার জন্য
ভাড়া: দুজনের জন্য ৩০০ টাকা
সর্বোচ্চ যাত্রী: ৩ জন (নৌকা ছোট, তাই সতর্কতা জরুরি)
সকাল সকাল গেলে ভিড় কম থাকে আর ফুল থাকে সবচেয়ে রঙিন ও উজ্জ্বল রূপে। দিনের বেলায় সূর্যের তাপে ফুল গুটিয়ে যেতে থাকে, তাই সকালই সেরা সময়।
রাস্তার ধারে যেসব পদ্মফুল দেখা যায়, সেগুলো ছেঁড়ার অনুমতি নেই। ফুল তুলতে হলে যেতে হবে বিলে পশ্চিম দিকের প্রান্তে, যেখানে সীমিতভাবে অনুমতি রয়েছে। তবে একটা কথা মনে রাখা দরকার—
‘আপনি একটি ফুল ছিঁড়বেন কয়েক সেকেন্ডে, কিন্তু সেই সৌন্দর্য হয়তো হারিয়ে যাবে ভবিষ্যৎ কারও চোখে।’
প্রকৃতিকে ভালোবাসুন, এর সৌন্দর্য বজায় রাখতে সচেতন থাকুন।
ঢাকা থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা হয়ে জয়দেবপুর রেলগেট। সেখান থেকে রিকশায় মোশারফ টাওয়ার। এরপর অটোরিকশায় নরুন বাজার (ভাড়া: ৩০ টাকা)। নরুন বাজার থেকে কাতুরিয়া পদ্মবিল (অটোরিকশায়, দুজন ৪০ টাকা বা একজন ৪০–৫০ টাকা। পথটি বেশ সুন্দর—সবুজে মোড়ানো, নিরিবিলি আর প্রশান্তিময়।
এক ঘণ্টার এই পদ্মবিল ভ্রমণে আপনি শুধু ফুল দেখবেন না—অনুভব করবেন প্রকৃতির নিখাদ রূপ, যেখানে নেই কোনো কৃত্রিমতা, নেই শহুরে শব্দের কোলাহল।
এই বর্ষায়, যদি শহরের গরম, কোলাহল আর ক্লান্তি থেকে একটু মুক্তি চান—তবে কাতুরিয়া পদ্মবিল আপনার জন্য হতে পারে এক চমৎকার আশ্রয়।
ছবি: শিশির চৌধুরী