সীমান্তের নানা ঝকমারি শেষ করে যখন শিলিগুড়ির সীমানায় পা রাখলাম, তখনো ভোগান্তির শেষ হয়নি। নতুন দুশ্চিন্তায় মাথা একেবারে ঝিম মেরে আছে। অথচ রাতে কী আনন্দ নিয়েই না যাত্রা করেছিলাম কমলাপুর স্টেশন থেকে। বিমানবন্দর স্টেশন থেকে উঠলেন আসিফ ভাই, বুলু আপাসহ অন্য সবাই। ট্রেনের চাকা কিছু দূর গড়াতেই সবার সঙ্গে দারুণ ভাব হয়ে গেল। বিশেষ করে বুলু আপা মাউন্টেইনিয়ারিং সম্পর্কে দারুণ উৎসাহী। তাঁর সঙ্গে আলাপ জমে গেল। তাঁর এ প্রশ্ন সে প্রশ্ন, সন্দেহ নেই উপভোগ করছিলাম। কারণ, পর্বতারোহণ সম্পর্কে এত উৎসাহ কম মানুষের মধ্যেই দেখেছি। আমরা এবার যেখানে চলেছি, তা এক সময় বাংলাদেশিদের জন্য নিষিদ্ধ ছিল। আর নিষিদ্ধ যে কোনোকিছুর প্রতিই মানুষের আকর্ষণ সহজাত। সিকিম হচ্ছে ভারতের সেই রাজ্য। রাজনৈতিক কারণে এর সৌন্দর্য উপভোগ থেকে বঞ্চিত ছিল বাংলাদেশের ভ্রমণপিপাসুরা। ফলে এর দ্বার খুলে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে ঢল নেমেছে। আমরাও শামিল হতে যাচ্ছি। তবে সিকিমে ঢোকার অনুমতি সংগ্রহে কিছু কাগজপত্র সঙ্গে রাখতে হয়। এই যেমন পাসপোর্ট ও ভিসার ফটোকপির সঙ্গে নিজের কয়েক কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি। আসিফ ভাই বারবার সব বলে দিয়েছেন। ট্রেনে আড্ডার ফাঁকে আবারও জিজ্ঞাসা করলেন। ঠিক তখনই মাথায় হাত। পাসপোর্ট, ভিসার ফটোকপি সঙ্গে থাকলেও ছবি নেই। ব্যাগে তন্ন তন্ন করে খোঁজা হলো। কোথাও নেই। ভুলে ফেলে রেখে এসেছি। এতক্ষণের উচ্ছলতা কোথায় যেন মিলিয়ে গেল। সান্ত্বনা, এই সীমান্ত থেকে শিলিগুড়ি পর্যন্ত ছবি তোলার সুযোগ আছে। কিন্তু আমাদের হাতে সময় একেবারে কম। তার ওপর কালকে হোলি। দোকান খোলা পাওয়া যাবে তো! এত চিন্তা করতে ভালো লাগছে না। ট্রেনের কু ঝিক ঝিক শব্দে ডুব দেওয়ার চেষ্টা করলাম ঘুমের দেশে।
একতা এক্সপ্রেস সকাল সাড়ে আটটায় নামিয়ে দিল পঞ্চগড় স্টেশনে। এই ট্রেন সার্ভিস নতুন চালু হয়েছে। শোভন চেয়ারের ভাড়া ঢাকা থেকে ৫৫০ টাকা। স্টেশনের বাইরে মাইক্রো অপেক্ষা করছিল। এমনিতেই এক ঘণ্টা লেট। দেরি না করে উঠে পড়লাম। পঞ্চগড় শহর থেকে বাংলাবান্ধা ৫৪ কিলোমিটার। এখন শহর থেকে বাস সার্ভিস চালু আছে। কেউ সিকিম যেতে চাইলে তার জন্য সবচেয়ে ভালো বাংলাবান্ধা দিয়ে পার হওয়া। কারণ, এখান থেকে শিলিগুড়ি মাত্র আঠারো কিলোমিটার। তা ছাড়া যোগাযোগব্যবস্থাও বেশ ভালো। কিন্তু সেদিনের দুর্ভোগের শুরু ছিল বাংলাবান্ধা থেকেই। ইমিগ্রেশনের কাছে এসে দেখা গেল কমপক্ষে দেড় শ মানুষের ভিড়। প্রায় সবার গন্তব্য গ্যাংটক। ইভেন্ট কোম্পানির বদৌলতে ছেলে-বুড়ো বাচ্চা-কাচ্চা সবাই হই হই, রই রই করতে করতে বরফ রাজ্য সিকিম চলেছে। আমরা অবশ্য মোটামুটি সহজেই বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন পার হলাম।
কিন্তু ভারতীয় অংশে ছাড়া পেতে পেতে দুই ঘণ্টা লাগল। সূর্য ততক্ষণে একেবারে মাথার ওপর। সীমান্তের ভারতীয় অংশ ফুলবাড়ি থেকে অটোতে শিলিগুড়ির তেনজিং নোরগে বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত যাওয়া যায়। ভাড়া দেড় শ টাকার মধ্যে। কিন্তু সিন্ডিকেটের বদৌলতে সে ভাড়া গিয়ে ঠেকেছে তিন শ টাকায়। আজকে হোলির দিন। চারপাশে সব দোকানপাট বন্ধ। ছবি তুলতে হবে, অথচ একটি দোকানও খোলা নেই। ছবি ছাড়া সিকিমের দরজাও আমার জন্য বন্ধ। ভাবনার বোঝা মাথায় নিয়ে শিলিগুড়ি শহরে এলাম। জিপস্ট্যান্ডে অল্প কয়েকটি জিপ। ভাড়া হাঁকছে দ্বিগুণ। সাধারণত গ্যাংটক পর্যন্ত ৯ সিটের একটি জিপের ভাড়া ২ হাজার ৫০০ রুপি। আজ হাঁকছে পাঁচ হাজার। অনেক দরাদরির পর চার হাজারে রাজি হলো। কিন্তু আমার তো ছবি তোলা এখনো বাকি। সিকিমের প্রবেশদ্বার রংপোতে অনুমতি নিতে হবে। সেখানেই লাগবে ছবি। অনেক চেষ্টা করেও কোথাও ছবি তোলা গেল না। মাথায় ঘোর অনিশ্চয়তা নিয়েই রওনা দিলাম গ্যাংটকের পথে। এখানে বলে রাখি, শিলিগুড়িতে জিপস্ট্যান্ডের বিপরীতে সিকিম ট্যুরিজমের অফিস। অনুমতির কয়েকটা ধাপ সেখানে সম্পন্ন করা যায়। কিন্তু আসল কাজটি হয় রংপোতে। সুতরাং, এখানে সময় নষ্ট না করে একেবারে রংপোতে চলে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
শিলিগুড়ি শহরের সীমানা পার হতেই সেই চিরচেনা শুকনা অভয়ারণ্য। শাল-সেগুনের এই বন দেখলেই কেন জানি মনের ভেতর অজানা এক রোমাঞ্চ জাগে। গাছের ফাঁকে দেখা যাচ্ছে দিগন্তের সবুজ পাহাড়ের সারি। এরই ভাঁজে ভাঁজে ছবির মতো সব স্বপ্ন ছড়ানো জনপদ। দার্জিলিং, কার্শিয়াং, কালিম্পং, মানেভঞ্জন। কত শত নাম। আরও দূরে দাঁড়িয়ে আছেন ঘুমন্ত বুদ্ধ কাঞ্চনজঙ্ঘা এবং তাঁকে কেন্দ্র করে কত-না বরফশৃঙ্গ। তিস্তা ব্রিজ অতিক্রম করে আমরা ধরলাম গ্যাংটকের পথ। ততক্ষণে দুপুর গড়িয়ে বিকেল। পেটে কিছুই পড়েনি সকাল থেকে। তাতে কারও যায় আসে না। পথের দুই পারের পাহাড়ি সৌন্দর্য পারলে ভুবন ভুলিয়ে দেয়। কিছুক্ষণ পর থেকেই সঙ্গ দিতে শুরু করল নীল জলের তিস্তা। সমতলে যদিও এই নদীর অন্য এক হতশ্রী দশা। পথের বাঁকে বাঁকে এখানে ছবির মতো সব জনপদ। নামগুলোও ভারি সুন্দর। আমরা তিস্তা বাজারে এসে বিরতি দিলাম। নদীর অপর পারে পাহাড়ের ওপর কালিম্পং। সুস্বাদু মোমো খেয়ে অন্তত দুপুরে না খাবার ধাক্কা কিছুটা সামাল দেওয়া গেল। এরপর আবার চলা। ছবির দুশ্চিন্তা কিন্তু মাথায় ভর করে আছেই। দেখতে দেখতে রংপোও প্রায় এসে পড়ল। চেকপোস্টের পাঁচ মিনিট আগে ড্রাইভার গাড়ি থামালেন। জানালেন, এখানে একটি স্টুডিও আছে। চাইলে ছবি তুলে প্রিন্ট করে নিতে পারি। ঘাম দিয়ে যেন জ্বর ছাড়ল।
ছবি তোলার পর্ব শেষে আমরা কিছুক্ষণের মধ্যেই রংপো চেকপোস্টে এসে পড়লাম। এখানেও বেজায় ভিড়। পাসপোর্টে একটি সিল মেরে দেওয়া হয়। যেটি শুধু গ্যাংটকে প্রবেশের জন্য। আধঘণ্টার মতো লাগল। এরপর আবার চলা। ততক্ষণে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে। পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে আলোর রোশনাই। এ পথের এই এক মজা। রাতের বেলায় পাহাড়ের আলো জোনাকির মতো জ্বলে থাকে। গ্যাংটক জিপস্ট্যান্ডে পৌঁছাতে রাত প্রায় আটটা। এখান থেকে গ্যাংটকের প্রাণকেন্দ্র এমজি মার্গ জেতে হবে ট্যাক্সিতে। পর্যটকেরা সাধারণত এমজি মার্গ এবং এর আশপাশেই থাকেন। আমরা ট্যাক্সি থেকে নামতেই প্রচণ্ড বৃষ্টি শুরু হলো। এর মধ্যেই চললো হোটেল খোঁজা। পর্যটকের ভিড়ে একেবারে টইটম্বুর সব হোটেল। এমজি মার্গ থেকে কিছুটা নিচে একটি হোটেল পাওয়া গেল। বেশ ভালো তার সুযোগ-সুবিধা। কমপ্লিমেন্টারি ব্রেকফাস্টও আছে। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে যখন রাতের খাওয়ার কথা মনে পড়ল, ততক্ষণে রাত ১০টা। গ্যাংটকে তখন অনেক রাত। কেউ মুসলিম হোটেলে খেতে চেইলে তাদের জন্য আছে জান্নাত হোটেল। এখানে বিরিয়ানির ব্যবস্থাও আছে। সহযাত্রী কয়েকজনের ইচ্ছায় সেখানেই খাওয়া হলো। পরদিন আমাদের যাওয়ার ইচ্ছা সাঙ্গু লেক। হোটেলের রিসেপশন থেকে বলা হলো, তারাই সব ব্যবস্থা করে দেবে। এখানে বলে রাখা ভালো, গ্যাংটক এবং এর বাইরে যেকোনো পর্যটন গন্তব্যে যেতে হলে ট্রাভেল এজেন্সি ছাড়া কোনো গতি নেই। এখানকার নিয়মই এমন। অনেক সকালে রওনা দিতে হবে। তার ওপর সারা দিনের ভ্রমণে ক্লান্ত দেহমন। নরম বিছানায় গা এলিয়ে দিতেই চোখ জুড়ে এলো ঘুম।
পরদিন সকালে তড়িঘড়ি করে নাশতা সেরে রিসেপশনে আসতেই মাথায় বাজ পড়ার উপক্রম। জানানো হলো আজ আর সাঙ্গু লেক যাওয়া হচ্ছে না। কাল অনেক রাত করে কাগজপত্র জমা দেওয়ায় কাজ হয়নি। আজকের দিন অপেক্ষা করতে হবে। সাঙ্গু লেক সিকিমের অন্যতম পর্যটন আকর্ষণ। শীতল বরফ জলের এই লেকের ধারের কেবল কার আর ইয়াক রাইডের আকর্ষণে মোটামুটি সবাই একে নিজেদের আইটেনারিতে রাখে। আমাদের সিকিম ভ্রমণের পরিকল্পনা একেবারে ঠাসা। আজকে মিস হওয়া মানে সাঙ্গু লেক ভ্রমণ বাতিল। তারপরও খানিক চেষ্টা করা হলো আরও কয়েকটি এজেন্সিতে খোঁজ নিয়ে। সবারই এক কথা,‘দেরি হয়ে গেছে। আগামীকাল আসুন, হয়ে যাবে।’ স্থির করা হলো গ্যাংটকে সাইট সিয়িংয়ে বের হওয়ার। এ শহরে বেশ কিছু লোকাল সাইট সিয়িংয়ের ব্যবস্থা আছে। কয়টি জায়গায় যাবেন তার ওপর ভিত্তি করে এর খরচ নির্ভর করে। আমরা ১০টি জায়গা বেছে নিলাম। এক ট্যাক্সির জন্য খরচ দুই হাজার রুপি। প্রথম গন্তব্য ফ্লাওয়ারস শো।
এমজি মার্গ থেকে গাড়ি ছুটল সেই পানে। সকালের রোদে ঝলমল করছে পাহাড়েরভাঁজে সাজানো সুন্দর শহর। প্রকৃতি আর আধুনিকতার মিশেলে গ্যাংটক পেয়েছে প্রাচ্যের অন্যতম সুন্দর শহরের খেতাব। মিনিট বিশেকের মধ্যেই চলে এলাম ফ্লাওয়ার শোয়ে। ফ্লাওয়ার শোতে মূলত সিকিম হিমালয়ে পাওয়া ফুলের সমাহার। এপ্রিল-মে রডোডেন্ড্রন ফুলের সমারোহে ছেয়ে যায় গোটা অঞ্চল। আমরা খানিকটা আগেই চলে এসেছি। তারপরও রঙে, আকারে বৈচিত্র্য চোখ রাঙিয়ে দেয়। আধঘণ্টার মধ্যে ফ্লাওয়ার শো দেখে তারপরের গন্তব্য গণেশটক।
পাহাড়ের অনেক ওপরে এ মন্দির আঙিনা থেকে পাখির চোখে দেখে নেওয়া যায় এক টুকরো গ্যাংটক। গ্যাংটকের সুন্দর ছবি তুলতে হলে গণেশ টকে আসতেই হবে। এখানে আসার পথটিও ভারি মজার। রাস্তার দুই ধারে পাইনের সারি। কোথাও উড়ছে প্রার্থনা পতাকা। কখনো চলতি পথেই গাড়ির কাচ গলে আলতো ছুঁয়ে দিতে পারে মেঘের দল। গণেশটকের ঠিক উল্টো দিকে সিকিমের চিড়িয়াখানা। এখানকার উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, হিমালয়ান বন্য প্রাণীর উপস্থিতি দেখতে পারেন এ চিড়িয়াখানায়। গণেশটকের সদর দরজার কাছেই হরেক সিমিকিজ লোকজ পণ্যের দোকান। সঙ্গীরা এখান থেকে কেনাকাটা করে নিল।
গণেশটক থেকে প্ল্যান্টস কনজারভেটরি। আক্ষরিক অর্থেই সত্যিকারের প্রকৃতি এবং নিসর্গপ্রেমী মানুষের জন্য একটি দেখার মতো জায়গা। কত রকমের যে গাছ আছে, তার কোনো ইয়ত্তা নেই। সবই প্রায় হিমালয় অঞ্চলের। বৃক্ষ-ফুলের সমারোহে এ জায়গার তুলনা মেলা ভার। এখানে ভারি সুন্দর একটি ঝরনা আছে। বৃষ্টির ছোঁয়া পেলে তার চেহারা হয় যৌবনবতী। এখানে প্রায় দেড় ঘণ্টা কাটিয়ে দিলাম। ইচ্ছা করলে এখানেই সারা দিন কাটিয়ে দেওয়া যায়। কিন্তু আমাদের সেই বিলাসিতা করলে কি আর চলে? এরপরের গন্তব্য তাশি ভিউ পয়েন্ট। আকাশ পরিষ্কার থাকলে এখান থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায়। আমাদের ভাগ্য অতটা সুপ্রসন্ন নয়। ধোঁয়াটে মেঘের চাদর ছাড়া আর কিছুই দেখা গেল না। এখানে আর দাঁড়ালাম না। বনঝকরি ওয়াটার ফলস তেমন আহামরি কিছু না। অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের ব্যবস্থা আছে। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তাই খানিকক্ষণ দেখে রোপওয়ে স্টেশনের দিকে গাড়ি চলল।
এতক্ষণ ঘোরাঘুরি করে এমনিতেই দলের সবাই ক্লান্ত। তার ওপর রোপওয়েতে উঠতে অপেক্ষমাণ মানুষের ভিড় দেখে মেজাজ খারাপ হয়ে গেল। সিদ্ধান্ত হলো এখানে না ওঠার। কেবল কার ধরে নিচের দিকে নামার অনুভূতি রোমাঞ্চকর। কিন্তু আমাদের আর সেই রোমাঞ্চ উপভোগের ধৈর্য নেই। আজকের দিনের তালিকায় আরও দুই একটি স্পট ছিল। ইচ্ছা করেই এসব বাদ দেওয়া হলো। গ্যাংটকের এ পর্যটন স্পটগুলোয় বেজায় ভিড়। পর্যটন মৌসুমে এ ভিড় বেড়ে যায় বহু গুণ। তখন ট্যাক্সিভাড়াসহ প্যাকেজের দামও বেড়ে যায়। খোঁজখবর নিয়ে তারপর প্যাকেজ নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। এমজি মার্গ এখান থেকে খুব বেশি দূর নয়। দুপুরের খাওয়াটাও হলো জম্পেশ। সারা বিকেল আর কোনো কাজ নেই। সন্ধ্যা পর্যন্ত দিলাম টানা ঘুম। কাল আমাদের গন্তব্য ইয়ুমথাং ভ্যালি।
ছবি: লেখক