ধনকুবেরদের যাতায়াত সবচেয়ে বেশি এই শহরে। পাশাপাশি ভ্রমণ ও শপিংয়ের জন্য বিখ্যাত সংযুক্ত আরব আমিরাতের শহর দুবাই। রাজকীয় জীবনযাপন, চোখ ধাঁধানো আলো, বিশাল অট্টালিকা, বিলাসবহুল হোটেল, কৃত্রিম দ্বীপপুঞ্জসহ বিভিন্ন কারণে দুবাই শহর মানুষের পছন্দের শীর্ষে। দুবাইয়ের বিলাসবহুল আবহ উপভোগ করতে এখন অনেকেই যাচ্ছেন সেখানে আজকাল।
তবে ছোট ছোট কিছু ভুল আপনাকে মারাত্মক বিপদে ফেলতে পারে এই শহরে। নিয়ম-শৃঙ্খলার ব্যাপারে অত্যন্ত কঠোরতা বজায় রাখা হয় এখানে। ছোট কোনো ভুলের সূত্র ধরে আপনাকে গুনতে হতে পারে বড় অংকের জরিমানা। আবার বলা যায় না, বিলাসবহুল হাজতেও ঘুরে আসতে হতে পারে। এমন সব দুর্বিপাকে না পড়তে চাইলে দুবাই ট্রিপে কখনো এই ৫টি ভুল করা যাবে না।
বাম হাতের ব্যবহার
দুবাইয়ে শুভেচ্ছা জানানোর সময় বা কোনো কিছু দেওয়ার ক্ষেত্রে, বিশেষ করে খাবারের ক্ষেত্রে বাম হাত ব্যবহার করা আপত্তিকর একটি বিষয়। বাম হাত শৌচকার্যে ব্যবহার করা হয়- এই ধারণা থেকেই চর্চাটি এসেছে। শুধু খাবার টেবিলের আদব ভাবলে ভুল হবে, এটি দুবাইয়ের সব জায়গাতেই অনুসরণ করা হয়। তাই জামার পকেটেই বাম হাত রেখে দেওয়া ভালো।
জনসমক্ষে কিছু সামাজিক নিয়ম মেনে না চলা
অবকাঠামোর দিক থেকে দুবাই সর্বাধুনিক হলেও এখনো এখানকার লোকজন রক্ষণশীল স্বভাবের। তাঁরা পছন্দ করেন শালীনতা ও গোপনীয়তা । ভ্রমণে স্থানীয় এই নিয়মগুলো মেনে চলতেই হবে। জনসমাগমযুক্ত স্থানগুলোতে প্রেমময় অঙ্গভঙ্গি, যেমন জড়িয়ে ধরা কিংবা চুমু খাওয়া এই শহরে ভালোভাবে দেখা হয় না। তাই ভালোবাসার মুহূর্তগুলো একান্তই রাখতে হবে। তাহলেই সঙ্গীকে নিয়ে ঝামেলা ছাড়া একটি ট্রিপ উপভোগ করতে পারবেন দুবাইয়ে।
অননুমোদিত জায়গায় অ্যালকোহল পান করা
হোটেল, মোটেল, রেস্তোরাঁ আর জমকালো আলোকসজ্জা নিয়ে রাতের দুবাই বেশ আকর্ষণীয়। কিন্তু নির্দিষ্ট জায়গা ছাড়া অ্যালকোহলে পান করলে বেকায়দায় পড়তে হবে। এছাড়াও এক্ষেত্রে অ্যালকোহল লাইসেন্স থাকতে হবে আর বয়স হতে হবে একুশের বেশি। এই অনুমোদনপত্র ছাড়া অ্যালকোহলসহ ধরা পড়লে বড় অংকের জরিমানাসহ ৬মাসে্র জেল পর্যন্ত হতে পারে।
ড্রেস কোড মেনে না চলা
দুবাইয়ে ইসলামিক ড্রেস কোড মেনে চলা হয়। এখনো দুবাইয়ের রাস্তাঘাটে বা পাবলিক প্লেসে মডেস্টওয়্যারের চর্চা রয়েছে। শর্টস বা স্লিভলেস পোশাক নারী-পুরুষ কেউই পরেন না। স্থানীয়দের ভ্রুকুটি এড়িয়ে যেতে তাই লম্বা ও ঢিলেঢালা পোশাক পরাই শ্রেয়, যা কাঁধ, বাহু ও পা পুরো ঢেকে রাখে। তবে সমুদ্র সৈকতগুলোতে সুইমওয়্যার পরা যেতে পারে।
বিয়ে ছাড়া একসঙ্গে থাকা
লিভ টুগেদার এড়িয়ে চলেন এখানকার মানুষ। যদিও ২০২০ সালে নিয়ম পরিবর্তন হয়েছে, লিভ ইন টুগেদারে কোন জেল কিংবা জরিমানা নেই। তবুও বিষয়টি মেনে চলেন স্থানীয়রা। অবিবাহিত যুগল একসঙ্গে থাকতে পারবেন না। আইনি কোন ঝামেলা না হলেও সামাজিকভাবে এখানকার নাগরিকরা এই চর্চাতেই অভ্যস্ত। এখানে অবিবাহিত যুগলকে বাড়িভাড়াও দেয়া হয় না। অনেক হোটেলেও বিয়ের দলিলপত্র দেখাতে হতে পারে।
এই আচরণবিধিগুলো একটু বেশি বেশি মনে হতে পারে পাশ্চাত্যের পর্যটকদের জন্য। তবুও দেখা যায়, ঝামেলামুক্ত ভ্রমণ অভিজ্ঞতার জন্য বেশিভাগ মানুষই দুবাইতে গেলে এগুলো মেনে চলেন।
সূত্র: দুবাই ইজ বেস্ট ডট কম
ছবি: উইকিমিডিয়া কমন্স, ইন্সটাগ্রাম, পেকজেলস ডট কম