সৌদি আরবের যে স্থানগুলো থাকতে পারে ভ্রমণের তালিকায়
শেয়ার করুন
ফলো করুন

নিজের জন্য কিছুটা সময় বের করতে পারলে অনায়াসেই আপনি বিশ্বের কিছু জায়গা ঘুরে আসতে পারেন। ঠিক তেমনি একটি স্থান হতে পারে এশিয়ার সবচেয়ে বড় আরব দেশ সৌদি আরব। দেশটিতে আছে বেশ কিছু রোমাঞ্চকর, চমকপ্রদ ও ঐতিহাসিক জায়গা। জায়গাগুলোর মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য পর্যটকদের মনে এনে দিতে পারে প্রশান্তির ছোঁয়া। সৌদি আরবে এমনই কিছু ভ্রমণ গন্তব্য সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

হেগরা: ঘোড়ার গাড়িতে ঘুরে বেড়ানো আর খোলা আকাশের নিচে নৈশভোজ

সৌদি আরবের প্রথম কোনো স্থান হিসেবে ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পেয়েছিল হেগরা। প্রকৃতিপ্রেমী ও ইকোট্যুরিজমে আগ্রহীদের জন্য এটি একটি চমৎকার গন্তব্যস্থল হয়ে উঠতে পারে। ৫২ হেক্টরজুড়ে গঠিত এই স্থানে আছে ১৩১টি সমাধি ও অসংখ্য শিলা বা পাথর।

এখানে ভ্রমণে বিশেষ অভিজ্ঞতা পেতে পর্যটকেরা ঘোড়ার গাড়িতে চড়তে পারেন, যা আপনাকে রোমাঞ্চকর অনুভূতি দিতে পারে। প্রাচীন এই হেগরা নগরীতে রাতযাপন আপনার জন্য চমৎকার সুযোগ এনে দেবে। খোলা আকাশের নিচে স্থানীয় রাউয়ি বা গল্পকথকেরা গাইড হিসেবে আপনাকে সেই অ্যারাবিয়ান নাইটস বা আরব্য রজনীর গল্পগুলো শোনাবেন। এই অনন্য নিদর্শনগুলো দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করবে। আর সবশেষে আছে হেগরার তারাঝলমলে আকাশের নিচে ব্যক্তিগত নৈশভোজের ব্যবস্থা।

আল কারাহ: পর্বতের সৌন্দর্য

আল হোফুফ থেকে আল আহসা ন্যাশনাল পার্কের দিকে গাড়িতে মাত্র ২৫ মিনিট পূর্ব দিকে গেলেই পাওয়া যাবে আল কারাহ গ্রাম ও পর্বত। আল কারাহ পর্বতের চূড়ায় দাঁড়িয়ে আশপাশের জায়গাগুলোর আরবি নামের গভীর ব্যাখ্যা অনুধাবন করা যায়। ‘আল আহসা’ দ্বারা ‘কলকল স্রোত’ বোঝানো হয়। আবার প্রধান শহর হোফুফের নামের অর্থ হলো ‘বাতাসের শব্দ’। চূড়াটি পাহাড় ও সমুদ্রস্তর থেকে ৭৫ ও ২০৫ মিটার উঁচুতে অবস্থিত। তারপরও চূড়ায় উঠতে খুব বেশি কষ্ট করতে হয় না। এই চূড়া থেকে আল আহসার চমৎকার ৩৬০ ডিগ্রি ভিউ পাওয়া যায়।

পর্বতের চূড়া থেকে দেখতে পাওয়া দৃশ্যের পাশাপাশি এর রহস্যময় গুহাগুলোও ভ্রমণকারীদের নজর কাড়বে। আল শাদকাম মালভূমির পূর্ব সীমান্তে আল কারাহ পর্বত অবস্থিত। এটি উত্তরে কুয়েত ও ইরাকের সঙ্গে এবং দক্ষিণে রুব আল খালি মরুভূমির সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার ফলে এই গুহাগুলো সৃষ্টি হয়েছে। ভূগর্ভস্থ পানির পরিবর্তে এ অঞ্চলের উপ-বায়বীয় আবহাওয়া তৈরি হয়েছে বৃষ্টি ও নদী দ্বারা। এর ফলে পর্বতটির স্বতন্ত্র আকৃতি, গুহা ও মাশরুমের মতো আকৃতি গঠিত হয়েছে। এ প্রক্রিয়াটি পর্বতের মধ্যে দৃষ্টিনন্দন সরু গিরিখাত এবং লম্বা অভ্যন্তরীণ প্যাসেজও সৃষ্টি করেছে।

বিজ্ঞাপন

দিরিয়াহ-এর নতুন ডাইনিং প্লেস

ঐতিহাসিক দিরিয়াহ জেলায় অবস্থিত ২০টি উন্নত মানের রেস্টুরেন্ট ও ক্যাফে নিয়ে গঠিত প্রিমিয়াম ডাইনিং প্লেস বুজাইরি টেরেস। এর পাশেই অবস্থিত ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত এবং সৌদি আরবের জন্মস্থান বলে পরিচিত স্থান আল-তুরাইফ। বুজাইরি টেরেস থেকে এ স্থানটি পরিষ্কারভাবে দেখা যায়। সারা পৃথিবীর বিভিন্ন এলাকার সেরা সব খাবার এখানে পাওয়া যায়। এর মধ্যে আছে ফরাসি ক্যাফে, আফ্রিকান লাউঞ্জ, থাই স্ট্রিট ফুড, ক্যান্টোনিজ বিলাসবহুল রেস্টুরেন্ট ইত্যাদি।

সাগরের তীরে একান্ত কিছুটা সময়

সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য লোহিত সাগর প্রসিদ্ধ। এখানে এক জায়গাতেই পাওয়া যাবে পৃথিবীর চতুর্থ বৃহত্তম প্রবাল প্রাচীর, ৯০টি অনাবিষ্কৃত দ্বীপ, পর্বত ও ম্যানগ্রোভ। অ্যাডভেঞ্চার ও বিনোদন সব মিলিয়ে অনন্য অভিজ্ঞতার জন্য এ স্থানটি অসাধারণ। এখানেই শেষ নয়! কচ্ছপ, অক্টোপাস ও দুর্লভ সব মাছও এখানে দেখতে পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে আছে স্কুবা-ডাইভিং, কায়াকিং, ইয়টিংসহ নানা ধরনের কর্মকাণ্ডের সুযোগ।

স্কুবা ডাইভিংয়ের মাধ্যমে আশপাশের ধ্বংসাবশেষ ও অন্যান্য স্থান আবিষ্কারের জন্য লোহিত সাগর একটি দারুণ জায়গা। লোহিত সাগরের সুন্দর সূর্যাস্তকে পটভূমিতে রেখে প্রাপ্তবয়স্করা ফ্লাইবোর্ডিংও করতে পারেন।

সৌদি ভ্রমণ এখন বেশ সহজ। ভিসা প্রক্রিয়া ক্রমেই উন্নত করা হচ্ছে। এখন বিশ্বের ৬৩টি দেশ ই-ভিসা প্রোগ্রামের আওতায় আছে। সঙ্গে আরও আছে ৯৬ ঘণ্টার ফ্রি স্টপ ওভার ভিসা।

বিজ্ঞাপন
প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৪, ১৪: ০০
বিজ্ঞাপন