স্বাতী তারার কোল ঘেঁষে নীল হাওয়ার সমুদ্রে
শেয়ার করুন
ফলো করুন

এক.
বিস্তৃত নীল জলরাশি। একেবারে অপরাজিতার মতো নীল। ঝকঝকে সাদা রোদে দিগন্ত আর সমুদ্র মিশেছে দৃষ্টিসীমানার শেষ নীলিমায়। কোথাও সমুদ্র টলটলে সবুজ, শেওলা রঙের। সন্ধ্যা নামতেই তার রং হয়ে যায় গোলাপি, তারপর লাল, তারপর ছাই, গোধূলির আলো ক্রমশ খেলা করে জলরাশিতে। আকাশ আর সমুদ্র ক্ষণে ক্ষণে রং বদলায় এখানে। যেন কোনো শিশু আনমনে রং তুলি নিয়ে খেলতে বসেছে। রংতুলিতে ছোপছাপ, মাঠের পাশে ঝোপঝাপ। একটুখানি বসে যাও, বসতে বসতে সন্ধ্যা, বইছে বাতাস মন্দা।

জেটি
জেটি
ছবি: লেখক

হ্যাঁ, এই জায়গা একটুখানি বসে থাকারই। এখানে কোথাও কেউ নেই। এখানে কোলাহলহীন নির্জনতা। সাদা সাদা ছোট ঘর নারকেলবনের ভেতর। সফেদ কাঁকরের পথ। দূরে ভেসে যায় কোনো একলা জাহাজ কি মাছ ধরার নৌকা। হঠাৎ উড়ে এসে পায়ের কাছে বসে গাঙচিল আর বুনো সাদা সারস। সবুজ পানির তলে রঙিন ডোরাকাটা মাছেরা লুটোপুটি করে। থিরথির বাতাসে নারকেলপাতার আড়ালে একসময় সূর্য ডোবে। আর তারপর আকাশ ভরে ওঠে তারায় তারায়। নক্ষত্রের আলো ঝরে সারা রাত। যদি আপনার কখনো এমন ইচ্ছে হয় যে কিচ্ছু করতে চাই না, কোনো কিছু নিয়ে ভাবনা নয়, চাই প্রতিদিনকার ক্লান্তি আর ক্রূর সময় থেকে একটা স্তব্ধ নৈশব্দের ছুটি; যখন কেবল শুনব সমুদ্রকে, আর আকাশ, দূর গন্তব্যে আকাশে শব্দ তুলে ভেসে যাওয়া সি প্লেনের গর্জন, আর দূর তরঙ্গের দীর্ঘশ্বাস, আর নির্জন একলা পাখির ডাক, তবে আপনি মালদ্বীপে আসুন। এখানকার কোনো একটা দ্বীপে সাদা ছোট ঘর নিয়ে নারকেলগাছের ছায়ায় বসে একটা সমস্ত দিন কি সমস্ত সন্ধ্যা কাটিয়ে দিতে পারবেন সমুদ্র দেখে, কি বই পড়ে, কি গান শুনে, কি তারা গুনে কিংবা কিছুই না করে। সত্যি, পৃথিবীর আর কোনো সমুদ্রের সঙ্গে এর তুলনা হয় না। এখানে এসে তাই জীবনানন্দের কবিতা মনে পড়ে যাচ্ছিল বারবার—
যদিও সমুদ্র আমি পৃথিবীতে দেখে গেছি ঢের:
নীলাভ জলের রোদে কুয়ালালামপুর, জাভা, সুমাত্রা ও ইন্দোচীন, বালি
অনেক ঘুরেছি আমি—তারপর এখানে বাদামি মলয়ালী
সমুদ্রের নীল মরুভূমি দেখে কাঁদে সারা দিন।

বিজ্ঞাপন

দুই.
ভারত মহাসাগরের বুকে ১ হাজার ১৯০টি প্রবালদ্বীপ নিয়ে জেগে আছে এই দেশ—মালদ্বীপ। সমুদ্রের বুকে ৯০ হাজার বর্গফুটজুড়ে দ্বীপগুলো বিস্তৃত হলেও এ দেশের জমির পরিমাণ মাত্র ২৯৮ বর্গফুট। সে হিসাবে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে ছোট দেশ বলা যায় একে। এই ১ হাজার ১৯০টি দ্বীপের মধ্যে দুই শটির মতো দ্বীপে মানুষের বসবাস। একেকটা দ্বীপে হাজারখানেক মানুষের বাস। মালদ্বীপকে বলা হয় বিশ্বের সবচেয়ে নিচু দেশ। কারণ, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এ দেশের উচ্চতা মাত্র ৬ ফুট!

বাহন বলতে জলযান
বাহন বলতে জলযান
ছবি: লেখক

ইতিহাস বলে, মালদ্বীপ একসময় ছিল বৌদ্ধধর্মের অনুসারী–অধ্যুষিত। ১১৫৩ সালে ইসলাম ধর্ম ব্যাপকভাবে গৃহীত হয় এখানে। চতুর্দশ শতাব্দীতে ইবনে বতুতা মালদ্বীপে এসে পৌঁছান। ১৩৪৪ সালে ইবনে বতুতা তাঁর গ্রন্থে লিখেছেন, এখানকার নারীরা তাঁদের মাথা ঢাকেন না, এমনকি তাঁদের রানিও না। তাঁরা তাঁদের চুল আঁচড়ে চুড়ো করে একপাশে সাজিয়ে রাখে। এরা বুক থেকে পা অব্দি স্কার্টের মতো একটা কাপড়ে নিজেকে ঢেকে রাখে।

ইবনে বতুতা আরব ও ইসলামি পোশাক প্রবর্তন করতে চেষ্টা করেছিলেন ও ব্যর্থও হয়েছিলেন। যদিও আশির দশকের দিকে মালদ্বীপের জনগণ ক্রমশ ইসলামি পোশাক–আশাক ও সংস্কৃতির দিকে ঝুঁকে পড়তে শুরু করে। এই প্রবণতা আরও ব্যাপক হয় ২০০৪–এর সুনামির পর। ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ ভারত বা শ্রীলঙ্কার মতো মালদ্বীপেও তখন একধরনের প্রচারণা চলে যে সুনামির মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণ নারীদের পর্দাপ্রথা না মানা আর সমাজের নৈতিক অবক্ষয়। ২০০৮ সালের সংবিধানে ইসলামকে রাষ্ট্রীয় ধর্ম হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স নামে আলাদা মন্ত্রণালয়ও খোলা হয়। এখন মালে ও হুলুমালে শহরে বা বিভিন্ন লোকাল দ্বীপে হিজাব ছাড়া নারীর দেখা মেলাই ভার। কিন্তু নারীরা সমাজে ও রাষ্ট্রে খুবই কর্মতৎপর এবং দৃশ্যমান। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে নারী-পুরুষ বৈষম্যের সূচক (জেন্ডার ইন–ইকুয়ালিটি ইনডেক্স) মালদ্বীপে সর্বনিম্ন। নারীরা এখানে পুরুষদের সমান শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মক্ষেত্রে সুযোগ, সম্পত্তির অধিকার পেয়ে থাকেন। মালদ্বীপে শিক্ষার হার নারী-পুরুষে সমান—৯৮ শতাংশের কাছাকাছি। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে নারীরা পুরুষদের চেয়ে বরং খানিকটা এগিয়ে। সরকারি চাকরিতে নারীর সংখ্যা পুরুষের সমান। বরং কিছু কিছু জায়গায়, যেমন স্বাস্থ্য পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়, শিক্ষা সেক্টরে পুরুষের তুলনায় অনেক বেশি। তবে পার্লামেন্টে ও রাজনীতিতে এখনো নারীর সংখ্যা কম।

বিজ্ঞাপন

দেশটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও বড় দুটি শহর মালে এবং হুলুমালে পরস্পরের সঙ্গে সংযুক্ত সমুদ্রের ওপর দুই কিলোমিটার দীর্ঘ দৃষ্টিনন্দন চায়না মালে ফ্রেন্ডশিপ সেতুর মাধ্যমে। মালদ্বীপে গেলে বিমান আপনাকে নামিয়ে দেবে হুলুমালেতে অবস্থিত সমুদ্রতীরবর্তী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। তারপর আপনি চাইলে বিমানবন্দরসংলগ্ন জেটি থেকে সরাসরি চলে যেতে পারেন কোনো একটি দ্বীপে, নিখাদ অবকাশযাপন করতে। আগে থেকে বুকিং থাকলে বিমানবন্দরের বাইরেই অপেক্ষা করবে আপনার বোট। সমুদ্রের বুক চিরে সেই বোট আপনাকে নিয়ে যাবে কোনো এক দারুচিনি দ্বীপে। তা না হলে আপনি দু-এক দিন থেকে যেতে পারেন মালে বা হুলুমালে শহরেই। হুলুমালেতে সমুদ্রের ধার ঘেঁষে রয়েছে অনেক হোটেল–রেস্তোরাঁ। এ শহরের উপকণ্ঠে ফেজ টু নামে আরও আধুনিক ও বিলাসবহুল শহরতলির কাজ চলছে এখন। নিকট ভবিষ্যতেই হয়তো খুলে দেওয়া হবে পর্যটকদের জন্য।

দিগন্ত বিস্তৃত জলরাশি
দিগন্ত বিস্তৃত জলরাশি
ছবি: লেখক

অবকাশ দ্বীপগুলোতে কেউ চাইলে সমুদ্রের মধ্যে ভাসমান কটেজ বা কুঁড়েঘর বেছে নিতে পারেন, যে ঘরের চারদিকেই জল, ধু ধু সমুদ্র। মনে হবে দূর সাগরে একলা নাবিকের মতো বুঝি জাহাজে ভেসে চলেছেন। নইলে দ্বীপের ধার ঘেঁষে সমুদ্রের তীরে বালুকাবেলায় সাদা সাদা কটেজও নিতে পারেন, ঘর থেকে বেরোলেই নারকেলবনের ফাঁকে সমুদ্র সফেদ ফেনা নিয়ে স্বাগত জানাবে। ঘরের বারান্দা বা উঠোনে বসেই কাটিয়ে দিতে পারবেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। দ্বীপগুলোতে এবং মালে বা হুলুমালেতেও আছে নানা ধরনের অ্যাকটিভিটি। স্নরকেলিং, স্কুবা ডাইভিং, সাবমেরিন ট্যুর, প্যারাগ্লাইডিংসহ নানা কিছু। তবে যাঁরা আমার মতো স্তব্ধ নির্জন অবকাশ পছন্দ করেন, তাঁদের কিছু না করলেও চলবে। মালদ্বীপ তার সমস্ত রং-রূপ-সৌন্দর্য সুধা ঢেলে দেবে আপনাকে। যেন শান্ত মালয়ের সমুদ্রের পেল এক পাখি।

তিন.
একের পর এক মাছভর্তি বোট এসে থামছে জেটিতে। দ্রুতগতিতে মাছের স্তূপ এসে জমা হচ্ছে সমুদ্রতীরবর্তী ফিশ মার্কেটে। নিপুণ হাতে সঙ্গে সঙ্গে মাছের চামড়া ছিলে ফিলে করে স্তূপ করে ভরা হচ্ছে বরফের বাক্সে। এত সুশৃঙ্খল আর পরিচ্ছন্নভাবে গোটা কাজটা করা হচ্ছে, যা মুগ্ধ হওয়ার মতো। কোথাও এতটুকু ময়লা–আবর্জনা নেই, রক্তে মাখামাখি নেই, মাছ বাজারের অকারণ হইচই নেই। দ্বীপের শান্ত নির্জন সৌন্দর্য উপভোগ করা হলে একটা সমস্ত দিন মালে শহরে হাঁটলাম একা একা। প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর এ বন্দরনগরী, ছোট ছোট রাস্তা গিয়ে শেষে মিশেছে এই ফিশ মার্কেটসংলগ্ন জেটিতে। বিপুল কর্মযজ্ঞ মাছ নিয়ে। পর্যটনের পরই সবচেয়ে বড় শিল্প ও বাণিজ্য হচ্ছে এই ফিশিং। সাধারণ জনগণের ৩০ শতাংশ এই মৎস্যশিল্পের সঙ্গে জড়িত। মাছ রপ্তানি হয় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে। এখনো ট্র্যাডিশনাল নৌকা ধোনি আর ছিপ বড়শি দিয়েই মাছ ধরেন জেলেরা, রাত গভীর হতে জেলেদের বোটগুলো চলে যায় মাঝসমুদ্রে, ভোরবেলা ফিরে আসে একে একে। চাইলে রাতের এই মাছ ধরার অ্যাডভেঞ্চারের সঙ্গী হতে পারেন আপনিও।

সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয় টুনা মাছ
সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয় টুনা মাছ
ছবি: লেখক

সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয় টুনা মাছ। টুনার নানা ধরনের জাত দেখতে পেলাম ঘুরে ঘুরে, ছবি তুললাম, জেলেদের কাছে জানতে চাইলাম নানা কিছু। স্কিপজ্যাক আর ইয়েলোফিন নামে দুটি জাত বেশি দেখতে পেলাম। জেলেরা জানতে চাইল মাছ কিনতে চাই কি না। ট্যুরিস্টরাও তাজা মাছের ফিলে বক্স করে কিনে নিয়ে যেতে পারেন। চাইলে টিনের মধ্যে বহনযোগ্য মাছ দেওয়া যাবে। ফিশ মার্কেট পেরিয়ে হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে জেটির ধারে দোকানে ডাব কিনে খেতে পারেন। জেনে রাখবেন এই দোকানগুলোর বেশির ভাগই বাংলাদেশিরা চালান। ডাব খেতে খেতে তাঁদের সঙ্গে গল্প করলে তাঁরা খুব খুশি হন। যেমন নোয়াখালীর গফুর ভাই জানালেন, এ দেশে ২৬ বছর ধরে আছেন। তাঁর দোকানে ডাব ছাড়াও নানা রকম জুস, পান, সুপারি, সিগারেট, বাংলাদেশি চিপস, চানাচুর বিক্রি হতে দেখলাম। বন্দরের বাঙালি কর্মীরাই মূলত ক্রেতা। জানতে চাইলাম তাঁদের মধ্যে এমন কেউ আছেন কি না যিনি মালদ্বীপে সংসার পেতেছেন। বললেন, কেউ কেউ আছেন। তবে সারা জীবন থাকার বা ব্যবসা ও চাকরি করার অনুমতি মিললেও সরকার কাউকে নাগরিকত্ব দেবে না। মধ্যপ্রাচ্য, মালয়েশিয়ার প্রবাসীদের তুলনায় বেশ ভালো আছেন তাঁরা। মজুরিবৈষম্য নেই, নির্যাতন নেই, অশান্তি নেই। রিসোর্টে ও দ্বীপে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁরা আরও ভালো আছেন। থাকাখাওয়া, চিকিৎসা সব বিনা মূল্যে। বছরে দুবার আসা–যাওয়ার টিকিট। ছুটির সময়ও বেতন কাটা হয় না।

মালে বা হুলুমালেতে থাকাকালেও আপনি নানা রকম ট্যুর নিতে পারেন। সাবমেরিন ট্যুর, ডলফিন ট্যুর, আইল্যান্ড ক্রুজ ট্যুর ইত্যাদি। এখানে দুই ধরনের দ্বীপ আছে—একটা হলো রিসোর্ট দ্বীপ—শুধু ট্যুরিস্টদের জন্য। আরেকটা লোকাল—মানে যেখানে সাধারণ জনগণও থাকে। রিসোর্ট দ্বীপে থাকা হয়ে গেলে একটা লোকাল দ্বীপ ঘুরে আসতে পারেন।

হিমাফুসি দ্বীপের স্কুল
হিমাফুসি দ্বীপের স্কুল
ছবি: লেখক

যেমন আমরা গেলাম হিমাফুসি দ্বীপে। ছোট্ট একটা দ্বীপ। একটা স্কুল, একটা মসজিদ। দ্বীপজুড়ে একতলা ছোট ছোট বাড়ির ফাঁকে ফাঁকে নারকেল, পাম আর ব্রেডফ্রুটগাছ। একটা–দুটো দোকান। দ্বীপের অনেক বাড়িই তালাবদ্ধ। কারণ এরা হয়তো চাকরি বা পড়াশোনার জন্য মালে বা হুলুমালে থাকে। আগে সাদা প্রবাল বা কোরাল দিয়ে বাড়ি তৈরি হতো মালদ্বীপে, তার দু–একটা নিদর্শন এখনো রয়ে গেছে। বেশির ভাগ বাড়িতে দেখলাম বৃষ্টির পানি জমিয়ে ব্যবহার করার ব্যবস্থা আছে। সুপেয় পানির প্রধান উৎস বৃষ্টি। মাছ ছাড়া মালদ্বীপে কৃষিপণ্য বলতে নারকেল, কলা আর ব্রেডফ্রুট। বেশির ভাগ জিনিসই আমদানি করতে হয় বিদেশ থেকে।

চার.
ভারত মহাসাগরের বুকে সাগরকন্যা মালদ্বীপ ক্রমশ পর্যটকদের আরাধ্য স্থান হয়ে উঠছে। যাঁরা মালদ্বীপ ভ্রমণ করতে চাইছেন, তাঁদের জন্য কিছু টিপস।
এক. চেষ্টা করবেন শুধু বিলাসবহুল রিসোর্টে সময় না কাটিয়ে লোকাল আইল্যান্ড, মালে, হুলুমালে, বন্দর ও জেটি, ফিশ মার্কেট ইত্যাদি উপভোগ করতে। মালদ্বীপ মানে কেবল রিসোর্ট নয়, এখানে একটা ভাইব্রেটিং লাইফ আছে, যা উপভোগ্য।

দুই. যাঁরা অ্যাকটিভিটি ভালোবাসেন, তাঁরা প্রচুর এসব করার সুযোগ পাবেন। প্রতিটি হোটেল ও রিসোর্টেই বললে ব্যবস্থা করে দেবে। স্কুবা ডাইভিং, স্নরকেলিং, সাবমেরিন ট্যুর, ফিশিং ট্যুর, প্যারাগ্লাইডিং, কায়াকিং মানে ওয়াটার স্পোর্টসের যেকোনো কিছু উপভোগ করতে পারেন। তবে আমার মতে, মালদ্বীপের আসল সৌন্দর্য এর শান্ত নির্জনতা। অগাধ স্বচ্ছ নীল জলরাশি, দিগন্ত আর নারকেল দ্বীপের সৌন্দর্য মনপ্রাণভরে উপভোগ করুন। একধরনের প্রশান্তি অনুভব করবেন। বেশি ছোটাছুটি করতে গেলে তা ব্যাহত হবে।

এভাবেই স্মৃতিময় হয়ে থাকে নানা দৃশ্য
এভাবেই স্মৃতিময় হয়ে থাকে নানা দৃশ্য
ছবি: লেখক

তিন. প্রচুর বাংলাদেশি কাজ করেন মালদ্বীপে। আর তাঁরা সবাই অত্যন্ত বন্ধুবৎসল। হোটেল, রিসোর্ট, কফিশপ, পথের ধারের দোকান—সর্বত্র দেখা মিলবে তাদের। চারদিকে এত বাংলা কথা শুনবেন যে মনে হবে বাংলাদেশেই আছেন। যেকোনো সমস্যায় তাঁরা তো আছেনই, বাংলাদেশ হাইকমিশনও অবস্থিত হুলুমালেতে।
চার. মালদ্বীপ ভ্রমণে বাংলাদেশিদের কোনো ভিসা লাগে না, কোভিড টেস্টও লাগে না। তবে টিকাকার্ড দরকার হয়। আর লাগে ইমুগা নামে একটি বারকোড, যা অনলাইনেই ফিলআপ করলে পেয়ে যাবেন। বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন পার হওয়ার সময় এই বারকোডটি দেখাতে হয়। ফেরার সময় লাগবে আবার।

পাঁচ. মালদ্বীপের আবহাওয়া সব সময়ই গরম। আর প্রচণ্ড ঝকঝকে সাদা রোদ পিছলে পড়ে চারদিকে। তাই হালকা রঙের আরামদায়ক ঢিলে পোশাক নিন। অবশ্যই নেবেন সানগ্লাস, সানব্লক, হ্যাট ও ছাতা। ও হ্যাঁ, যখন-তখন বৃষ্টিও নামতে পারে। যাঁরা পানিতে নামবেন বা ওয়াটার অ্যাকটিভিটি করবেন, তাঁরা সুইমিং কস্টিউম নিতে পারেন।

প্রকাশ: ৩০ মে ২০২২, ০৮: ০৮
বিজ্ঞাপন