নিজেকে উপস্থাপনের আগে অবশ্যই ঘ্রাণ নিয়ে সচেতন হতে হবে। মানুষের পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের একটি ঘ্রাণেন্দ্রিয়। আমরা স্বভাববশতই সুবাসিত যেকোনো কিছুর প্রতি দ্রুত আকৃষ্ট হই। একজন মানুষও যখন অনন্য সৌরভের অধিকারী হন, তখন সহজেই সবাই তাঁকে মনোযোগ দিয়ে থাকে। পাশাপাশি সুগন্ধি দিনভর আপনার মনকে সতেজ রাখে। মোহনীয় সুবাস আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়াতেও ভূমিকা রাখে।
অনেকেরই একটি বদ্ধমূল ধারণা আছে যে দামি পোশাকই আমাদের আকর্ষণীয় করে তোলে। এটা একদমই ভুল। আপনি যে পোশাক সারা দিন স্বাচ্ছন্দ্যে ক্যারি করতে পারবেন, সেটাই আপনার জন্য যথাযথ। পরিবেশ অনুযায়ী মানানসই পোশাক ও আত্মবিশ্বাসই আপনাকে সবার কাছে আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বের অধিকারী হতে সাহায্য করে।
মানুষের প্রতি নম্র ও শ্রদ্ধাশীল হওয়া একটি বিশেষ গুণ। অপর দিকের মানুষের কথা মন দিয়ে শোনা ও যথাযথ প্রতিক্রিয়া দেওয়া আপনাকে অন্যের কাছে প্রিয় করে তোলে। অন্যদের প্রতি মনোযোগ ও নম্রতা দিয়ে অনায়াসে আপনি তাঁদের মনে জায়গা করে নেন। এই বোধ তাঁদের আপনার দিকে টানে এবং তাঁরা আপনার সঙ্গে কোনো না কোনো উপায়ে যুক্ত থাকতে চান।
ক্যারিশমা হলো একজন ব্যক্তির অন্য লোকেদের আকর্ষণ ও প্রভাবিত করার ক্ষমতা। একে যদিও রহস্যময় গুণ হিসেবে বর্ণনা করা হয়, কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্যারিশম্যাটিক দক্ষতা শেখা ও চর্চা করা যেতে পারে। আপনার আচরণে ছোটখাটো পরিবর্তন আপনাকে ক্যারিশম্যাটিক করে তুলতে পারে। শান্ত ও মৃদুভাবে কথা বলা, রুচিশীল দেহভঙ্গিমা ও হাসিমুখ মানুষের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয়। এই পরিবর্তনগুলো করা যেমন সহজ, তেমনি এগুলো দ্রুত আপনার ব্যক্তিত্বের ওপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলে।
সাপ্তাহিক কিংবা মাসিকভাবে শরীরের যত্নে সময় ও অর্থ বিনিয়োগ করুন। ত্বক, চুল, ফিটনেসসহ অন্যান্য স্ব-যত্ন অনুশীলন আপনাকে বাহ্যিকভাবেও আকর্ষণীয় করে। এসব অভ্যাস আপনাকে কেবল সুন্দর দেখাতেই নয়; বরং আত্মবিশ্বাস বাড়াতেও সহায়তা করবে।
আশপাশের সবাইকে খুশি করার গুরুদায়িত্ব আপনার একার নয়। একসঙ্গে অনেককে খুশি করতে চাওয়াও বোকামি। তাই নিজস্ব সীমানা নির্ধারণ করুন। নম্রতার সঙ্গে ‘না’ বলতে পারাও একটি বিশেষ কৌশল। আপনি যা করতে চান না, এমন কিছু ভদ্রভাবে প্রত্যাখ্যান করা আপনার সম্মান কমায় না, বরং আপনার আশপাশের সবাই নিশ্চিত হন আপনি সব কাজ একসঙ্গে করে নিজেকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলতে চান না।
গম্ভীর মুখ করে বসে থাকলে অন্যরা কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে না। পরিস্থিতি ও পরিবেশ অনুযায়ী নিজেদের আলাপ মজাদার রাখা এবং পরিস্থিতি সম্পর্কে কিছু রসিকতা অন্তর্ভুক্ত করা যেকোনো কথোপকথনকে আরেক করতে পারে। হাস্যরসবোধ সবার কাছে আপনাকে আরও পছন্দের ও আকর্ষণীয় করে তুলতে পারে।
সবার সঙ্গে মিশতে পারা ও কথা বলতে পারা একটি চমৎকার গুণ। তার জন্য প্রয়োজন নিজের মনমানসিকতাকে ঠিক রাখা। আর সেই সঙ্গে প্রযুক্তি, ট্রেন্ড ও কোথায় কী হচ্ছে—সেগুলো নিয়ে ধারণা রাখা। এ ক্ষেত্রে বইপড়ার অভ্যাস ও নিয়মিত বিভিন্ন পডকাস্ট শোনা আপনাকে তথ্যসমৃদ্ধ করে তুলতে পারে।