ফ্রেন্ডস-এর সঙ্গে বন্ধু দিবস: ফ্যাশন-নস্টালজিয়ায় মোড়ানো হৃদয়ছোঁয়া বন্ধুত্বের গল্প
শেয়ার করুন
ফলো করুন

আজ আগস্টের প্রথম রবিবার। এ দিনটি ভূগোলার্ধের এই দিকে পালন করা হয় বন্ধু দিবস হিসেবে। শুধু বন্ধু দিবস নয়, সারা বছরই বন্ধু আর বন্ধুত্ব ছাড়া জীবন কল্পনাই করা যায় না। আমাদের সবার জীবনেই বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্ন পর্যায়ে বন্ধুরা আসে। বন্ধুত্ব নিয়ে কত সিনেমা, নাটক, গল্প-উপন্যাস আর গান যে তৈরি হয়েছে, তা বলে শেষ করা যাবে না। তবে এর মাঝে বিখ্যাত মার্কিন টিভি সিরিজ ফ্রেন্ডস-এর কথা আলাদা করে বলতেই হয়। সারা পৃথিবী জুড়ে কয়েক প্রজন্মের কাছে এর আবেদন অনেকটাই কালোত্তীর্ণ আর একেবারেই সর্বজনীন।

আপনার  জীবনে কি ফ্রেন্ডস-এর চ্যান্ডলার, মনিকা, রস, র‍্যাচেল, ফিবি আর জোয়ির মতো কোনো বন্ধু আছে?
আপনার জীবনে কি ফ্রেন্ডস-এর চ্যান্ডলার, মনিকা, রস, র‍্যাচেল, ফিবি আর জোয়ির মতো কোনো বন্ধু আছে?

আমেরিকান পটভূমিতে দেখানো একটি ধারাবাহিক কীভাবে যে সবাইকে এত প্রভাবিত করল তা রীতিমতো গবেষণার বিষয় হতে পারে। আর এর মূল কারণ হিসেবে বলা যায়, বন্ধুত্বের কোনো নির্দিষ্ট ভাষা বা সংস্কৃতি নেই। বন্ধুত্বের ধারণাটিই সর্বজনীন। আচ্ছা, ফ্রেন্ডস তো দেখেছেন নিশ্চয়ই। আর না দেখলেও চরিত্রগুলোকে অনেকেই চেনেন। বলুন তো, আপনার জীবনে কি ফ্রেন্ডস-এর চ্যান্ডলার, মনিকা, রস, র‍্যাচেল, ফিবি আর জোয়ির মতো কোনো বন্ধু আছে? একটু ভেবে দেখলেই কিন্তু পেয়ে যাবেন।

বিজ্ঞাপন

আসলে দুই দশক পেরিয়ে গেলেও বিখ্যাত মার্কিন টিভি সিরিজ ফ্রেন্ডস যেন আজও সময়ের চেয়ে বেশি প্রাসঙ্গিক। ১৯৯৪ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত দশ সিজনে আমেরিকার এই জনপ্রিয় সিটকমের চরিত্রগুলো এখনো জীবন্ত মনে হয়। ইউটিউবের ক্লিপ, ইনস্টাগ্রাম রিলস আর টিকটকের ছোট ছোট দৃশ্যের মধ্য দিয়ে তারা সবসময় ট্রেন্ডিং। তাদের সংলাপ, বন্ধুত্ব, হাস্যরস, সম্পর্কের টানাপোড়েনের সঙ্গে নতুন প্রজন্মও নিজেদের সহজেই মেলাতে পারে। আর সে কারণেই ফ্রেন্ডস-এর চ্যান্ডলার, মনিকা, রস, র‍্যাচেল, ফিবি আর জোয়ির বন্ধুত্বের গল্প কয়েক প্রজন্মকে এতটা টানে।

আমেরিকার এই জনপ্রিয় সিটকমের বন্ধু চরিত্রগুলো এখনো জীবন্ত মনে হয়
আমেরিকার এই জনপ্রিয় সিটকমের বন্ধু চরিত্রগুলো এখনো জীবন্ত মনে হয়

আমাদের বন্ধুদের মধ্যে একজন মনিকা থাকে, যে সবচেয়ে দায়িত্বশীল; একজন চ্যান্ডলার থাকে, যে সবাইকে হাসায়। আমাদের সবার ফ্রেন্ড সার্কেলেই একজন আবেগী রস, সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগা র‍্যাচেল, নারীদের হার্ট থ্রব জোয়ি আর আধ্যাত্মিক চিন্তায় মগ্ন ফিবি থাকে। সে কারণেই ফ্রেন্ডসের মাঝে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের তরুণরা খুঁজে পান নিজের বন্ধুদের। বন্ধু দিবসে 'ফ্রেন্ডস'-এর সেই আইকনিক চরিত্রগুলোকে রিক্রিয়েট করার প্রয়াস আবারও মনে করিয়ে দেয়া, সময় চলে যায় কিন্তু স্টাইল ফিরে ফিরে আসে।

বিজ্ঞাপন

বন্ধুত্ব, হাস্যরস আর ব্যক্তিগত টানাপোড়েনের নানা টুকরো কাহিনী নিয়ে বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তুলেছিল আমেরিকান টেলিভিশন সিরিজ ফ্রেন্ডস। ১৯৯৪ সালে ডেভিড ক্রেইন এবং মার্টা কফম্যানের তৈরি এই ধারাবাহিকটি নিউইয়র্ক সিটির গ্রিনউইচ ভিলেজে বসবাসকারী ছয় তরুণ-তরুণীর জীবনের গল্পকে কেন্দ্র করে নির্মিত হয়। তারা কেউ রুমমেট, কেউ প্রতিবেশী। কিন্তু ধীরে ধীরে একে অপরের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠে। প্রতিদিনের আড্ডা, হাসি ঠাট্টা, প্রেম, বিচ্ছেদ কিংবা হতাশার গল্পগুলো দর্শকের মনে গেঁথে যায়। সিরিজটির মূল আড্ডার জায়গা ছিল সেন্ট্রাল পার্ক নামের একটি ক্যাফে, আর তাদের ফ্ল্যাটগুলো ছিল জীবনের নানা মুহূর্তের সাক্ষী। এই কালজয়ী সিরিজের প্রতিটি চরিত্র একেকটি নিজস্ব বৈশিষ্ট্য নিয়ে আবির্ভূত হয়েছে।

তাদের হাসি, কান্না, বন্ধুত্ব, ভুল বোঝাবুঝি আর ভালোবাসা যেন আমাদের সবার জীবনেরই প্রতিচ্ছবি
তাদের হাসি, কান্না, বন্ধুত্ব, ভুল বোঝাবুঝি আর ভালোবাসা যেন আমাদের সবার জীবনেরই প্রতিচ্ছবি

মনিকার আছে সারাক্ষণ সব পরিষ্কার করার বাতিক। সেই সঙ্গে সে সবার মধ্যে সবচেয়ে দায়িত্বশীল।। র‍্যাচেল ফ্যাশন সচেতন ও স্বাধীনচেতা। ফিবি বৈচিত্র্যময় চরিত্রের অধিকারী। এদিকে চ্যান্ডলার দারুণ রসিক। জোয়ি খুবই সরল ও ভোজনরসিক আর সেইসঙ্গে হতে চায় অভিনেতা।আর রস বইপ্রেমী ও আবেগপ্রবণ এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক। সিরিজটি যত এগিয়েছে, ততই এই চরিত্রগুলো হয়ে উঠেছে দর্শকের ঘরের মানুষ আর পরিচিত মুখ। তাদের হাসি, কান্না, বন্ধুত্ব, ভুল বোঝাবুঝি আর ভালোবাসা যেন আমাদের সবার জীবনেরই প্রতিচ্ছবি।

ফ্রেন্ডস-এর চরিত্রগুলোর বন্ধুত্বের বন্ধন কেবল পর্দার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বাস্তব জীবনেও এই শিল্পীরা ছিলেন ঘনিষ্ঠ বন্ধু। ২০০৪ সালে প্রচারিত এই ধারাবাহিকের শেষ পর্বটি দেখেছিলেন প্রায় পাঁচ কোটি বিশ লাখ দর্শক। এটি আজও যুক্তরাষ্ট্রের টেলিভিশন ইতিহাসে অন্যতম জনপ্রিয় সমাপ্তি পর্ব হিসেবে বিবেচিত হয়। এই পর্বের পর অনেক দর্শক আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন, যেন নিজেদের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশকে বিদায় দিচ্ছিলেন।

ফ্রেন্ডস-এর এমন সব আইকনিক ছবি আমাদের মনে গেঁথে গিয়েছে
ফ্রেন্ডস-এর এমন সব আইকনিক ছবি আমাদের মনে গেঁথে গিয়েছে

প্রায় দুই দশক পর ২০২১ সালে নির্মিত হয় ফ্রেন্ডস দ্য রিইউনিয়ন নামের একটি বিশেষ পর্ব। সেখানে আবারও একত্রিত হন পুরনো সদস্যরা। তাঁরা ফিরে দেখেন তাঁদের স্মৃতিময় সময়, সেই চেনা সেট, পুরনো দৃশ্য এবং পর্দার পেছনের গল্পগুলো। বিশ্বব্যাপী দর্শকরা এই পর্বটিকে গ্রহণ করেন ভালোবাসা ও আবেগ দিয়ে। এই সিরিজের থিম সং ছিল দ্য রিমব্র্যান্টস ব্যান্ডের গাওয়া "আই উইল বি দেয়ার ফর ইউ" গানটি। বন্ধুত্বের গান হিসেবে এটি আজও অগণিত মানুষের হৃদয়ে বেজে ওঠে।

ফ্রেন্ডস কেবল একটি টেলিভিশন সিরিজ নয়, এটি এক প্রজন্মের আবেগ, স্মৃতি আর চিরন্তন বন্ধুত্বের নাম। আবার এটি নাইন্টিজ ফ্যাশনের এক অনন্য স্টাইলবুক। আজও র‍্যাচেল গ্রিন, মনিকা ও রস গেলার, ফিবি বাফে, চ্যান্ডলার বিং বা জোয়ি ট্রিবিয়ানির পোশাক অনুপ্রেরণা দেয় নতুন প্রজন্মের ফ্যাশনপ্রেমীদেরকে। ব্রাউন লিপস্টিক, হাই ওয়েস্টেড জিন্স, ওভারসাইজড সোয়েটার, প্লেইড ফ্লানেল শার্ট, ড্রপ শোল্ডার টি শার্ট বা ক্ল্যাসিক ডেনিম এইসব ট্রেন্ড মিলেনিয়াল, জিলেনিয়াল, আলফা, জেনজিদের ফ্যাশনের অ্যালগরিদমে ফিরে ফিরে আসে।ফ্যাশন দুনিয়ায় ফ্রেন্ডস সিরিজের প্রভাব নব্বই দশক থেকে শুরু হয়ে এখনো অব্যাহত। ।

নাইন্টিজ ফ্যাশনের এক অনন্য স্টাইলবুক ফ্রেন্ডস
নাইন্টিজ ফ্যাশনের এক অনন্য স্টাইলবুক ফ্রেন্ডস

ছয়জন চরিত্রের আলাদা স্টাইল, পোশাক ও অ্যাটিচিউড আজও ফ্যাশন সচেতনদের অনুপ্রেরণা হয়ে আছে। নব্বই দশকে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা ব্যারেল লেগ জিনসের জনপ্রিয়তার পেছনে বড় ভূমিকা ছিল এই টিভি সিরিজের। ফ্রেন্ডসের  চরিত্রদের স্টাইল দেখে এই জিনসটি মূলধারায় চলে আসে। এই জিনসের কোমরের অংশ থাকে তুলনামূলকভাবে ফিটেড, আর কোমরের নিচ থেকে তা ঢিলে হয়ে অনেকটা ব্যারেলের মতো আকার ধারণ করে। চ্যান্ডলারের পরা প্রিন্টেড ভেস্ট নব্বই দশকের পপ কালচারে রীতিমতো আইকনিক স্টাইল হয়ে ওঠে। নীল শার্টের উপর কালো ভেস্ট যে কোনো ফ্যাশন সচেতন তরুণকে দেয় এক ধরনের পুরোনো দিনের ভাইব।

আবার, র‍্যাচেলের পোশাকের মাধ্যমেই জনপ্রিয়তা পায় মিনিস্কার্টের সঙ্গে টাইটস, চিক স্লিপ আর বডিকন ড্রেস। প্লেইড স্কার্ট, সাদা টার্টলনেক টপ এবং হাই ওয়েস্ট জিনসও তার স্টাইলের ছোঁয়ায় ফিরে আসে ট্রেন্ডে। আজকের জেনারেশন জেড ফ্যাশনিস্তাদের ওয়ার্ডরোবে ঢুঁ মারলেও এইসব স্টাইলের ছাপ দেখা যায়। মনিকা গেলারের পরিচ্ছন্ন, পরিপাটি লুক আজও অনেকেই বেছে নেন কর্পোরেট ক্ল্যাসিক স্টাইল হিসেবে। ওভারসাইজড শার্ট, বয়ফ্রেন্ড কাটের জিন্স, মিনিমাল মেকআপ সব মিলিয়ে এক ধরনের পরিমিত অথচ স্টাইলিশ রূপ তৈরি করে মনিকার ফ্যাশন।

মনিকা, র‍্যাচেল আর ফিবির স্টাইল একেবারেই আলাদা ও স্পেশাল
মনিকা, র‍্যাচেল আর ফিবির স্টাইল একেবারেই আলাদা ও স্পেশাল
চ্যান্ডলার, জোয়ি আর রসের পোশাক মিলে যায় তাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে
চ্যান্ডলার, জোয়ি আর রসের পোশাক মিলে যায় তাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে

ফিবির বোহেমিয়ান লুক একেবারে আলাদা। ফ্লোরাল স্কার্ট, বড় সাইজের জ্যাকেট, কমলা রঙের ফো ফার কোট এখনো ভিনটেজ ফ্যাশনে জায়গা করে নেয়। তার লেয়ার্ড জুয়েলারি, ছকের বাইরের পোশাক নির্বাচন, মিসম্যাচড অ্যাকসেসরিজ তাকে বানিয়েছে ফ্যাশনের এক অনন্য মুখ। ফ্রেন্ডসের তিন পুরুষ চরিত্র চ্যান্ডলার, রস ও জোয়ি নব্বই দশকের পুরুষের ক্ল্যাসিক স্টাইলের প্রতিচ্ছবি। প্লেইন সোয়েটার, ডেনিম জ্যাকেট, ফ্লানেল শার্ট, সবই তাদের স্টাইলের অংশ ছিল। জোয়ির রঙচঙে পোশাক, চ্যান্ডলারের কিছুটা উদাসীন কিন্তু ফ্রেশ লুক আর রসের নার্ডি সাদাসিধে মিনিমাল ফ্যাশন ছিল প্রতিটি চরিত্রের নিজস্বতার অংশ। ফ্রেন্ডস-এর পোশাক আজও রেট্রো ফ্যাশনের অনুপ্রেরণা হয়ে বারবার ফিরে আসে র‍্যাম্পে, ম্যাগাজিনে আর তরুণ প্রজন্মের ফ্যাশন ব্লগে।

তবে ফ্রেন্ডস সিরিজকে শুধু অভিনয়, হাস্যরস কিংবা স্টাইলিশ পোশাকের মধ্যে সীমাবদ্ধ করা যাবে না। এখানে ব্যবহার করা নানা প্রপস, পোষা প্রাণী এমনকি ঘরের আসবাবপত্রও হয়ে উঠেছে ট্রেন্ডের অংশ। প্রথম সিজনেই দর্শকের মন জয় করে নেয় রসের পোষা ক্যাপুচিন বানর মার্সেল। এই ছোট্ট প্রাণীটি শুধু একটি চরিত্রের নয়, হয়ে ওঠে পুরো সিরিজের অন্যতম প্রিয় অংশ। মার্সেলের নানা কাণ্ডকারখানা আর রসের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল সিরিজের শুরুতে এক দারুণ সংযোজন। বন্ধুদের প্রিয় আড্ডাস্থল সেন্ট্রাল পার্ক ক্যাফের সেই আইকনিক কমলা সোফার কথা নিশ্চয়ই কেউ ভুলে যাননি। এখানেই ঘটেছে অনেক মজার মুহূর্ত, তৈরি হয়েছে মজার সব ডায়ালগ, আর দুর্দান্ত কমিক টাইমিংয়ের দৃশ্যগুলো আজও দর্শকদের মানসিক অবসাদ থেকে বের করে আনতে সাহায্য করে।

'ফ্রেন্ডস' ছাড়া কি আর ফ্রেন্ডশিপ ডে হয়?
'ফ্রেন্ডস' ছাড়া কি আর ফ্রেন্ডশিপ ডে হয়?

এই সোফাটি আজও অনেক ফ্রেন্ডস থিমড ক্যাফেতে রাখা হয় ছবি তোলার বিশেষ জায়গা হিসেবে। তৃতীয় সিজনে চ্যান্ডলার আর জোয়ি যখন ফ্ল্যাটে পোষা হাঁস আর মুরগি রাখেন, তখন তা সিরিজে নিয়ে আসে এক ব্যতিক্রমধর্মী সারকাজম। এই দুই পোষা প্রাণীর উপস্থিতি তাদের জীবনযাপনের অদ্ভুত সুন্দর বিশৃঙ্খলতাকে আরও রঙিন করে তোলে। ফুসবল টেবিল, যা এখন প্রায় প্রতিটি তরুণের ঘরের এক অংশ, নব্বই দশকে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায় ঠিক এই ফ্রেন্ডস সিরিজের কারণেই। চ্যান্ডলার আর জোয়ির ফ্ল্যাটে এটি ছিল এক ধরনের বিশেষ বন্ধুত্ব আর দারুণ সময় কাটানোর প্রতীক।

ফ্রেন্ডস-সিরিজের প্রতীক হয়ে মগ, ওয়ালফ্রেম আর বিভিন্ন অনুষঙ্গ শোভা পায় ভক্তদের ঘরে
ফ্রেন্ডস-সিরিজের প্রতীক হয়ে মগ, ওয়ালফ্রেম আর বিভিন্ন অনুষঙ্গ শোভা পায় ভক্তদের ঘরে

জোয়ির অ্যাপার্টমেন্টে দেখা যায় একটি সাদা কুকুরের বড় মূর্তি যার নাম প্যাট দ্য ডগ। মজার ব্যাপার হলো, এটি ছিল অভিনেত্রী জেনিফার অ্যানিস্টনের ব্যক্তিগত সংগ্রহের অংশ, যিনি র‍্যাচেল চরিত্রে অভিনয় করেছেন। চ্যান্ডলার আর জোয়ির দরজার পাশে ঝোলানো ছিল একটি ছোট বোর্ড, যার নাম ছিল 'ম্যাগনা ডুডলস'। প্রতিটি পর্বেই এই বোর্ডে কিছু না কিছু আঁকা থাকত বা লেখা থাকত। যাঁরা একটু খুঁটিয়ে দেখেন, তাদের চোখে নিশ্চয়ই ধরা পড়েছে এসব ছোট্ট কিন্তু মজার বিষয়। মনিকার অ্যাপার্টমেন্টের দরজায় লাগানো হলুদ রঙের ছোট ফটোফ্রেমটি বেগুনি দেয়ালের পটভূমিতে হয়ে উঠেছে এক ভিজ্যুয়াল আইকন। এই ছোট ফ্রেমটি আজও বিশ্বজুড়ে ফ্রেন্ডসভক্তদের ঘরের শোভা বাড়ায়, ওয়ালআর্ট কিংবা গিফট আইটেম হিসেবে।

ফ্রেন্ডস তারকাদের ফ্যাশন যে সময়ের পরীক্ষায় টিকে গেছে, তার মূল কৃতিত্ব কস্টিউম ডিজাইনার ডেবোরা ম্যাকগুয়ারের। তিনি এমন পোশাক বেছে নিয়েছিলেন, যেগুলো সময়ের সঙ্গে অপ্রাসঙ্গিক বা সেকেলে হয়ে পড়ে না। দশ সিজন জুড়ে এই ছয় চরিত্রের পরা অজস্র স্টাইল কখনো ক্যাজুয়াল,কখনো গ্ল্যামারাস। এই সবকিছুই আজকের দিনের জন্যও প্রাসঙ্গিক ও ট্রেন্ডি। ফ্রেন্ডস-এর ফ্যাশনকে বলা যায় ফ্যাশন ফরএভার। আজকের জেনারেশন যেভাবে ভিনটেজ আর ওয়াই টু কে স্টাইলে আগ্রহী হচ্ছে, তাতে বলাই যায়, ফ্রেন্ডসের চরিত্রগুলোর এসব লুক একসময়কার স্মৃতি নয়, বরং নতুনদের জন্যও স্টাইল ম্যানুয়াল।

এবার বন্ধু দিবসের ভরপুর উদযাপনে সঙ্গী করা হয়েছে সবার হৃদয়ের কাছাকাছি এই বন্ধু চরিত্রগুলোকে
এবার বন্ধু দিবসের ভরপুর উদযাপনে সঙ্গী করা হয়েছে সবার হৃদয়ের কাছাকাছি এই বন্ধু চরিত্রগুলোকে

আজও এই সিরিজ আমাদের ফ্যাশন, বন্ধুত্ব আর জীবনের সংজ্ঞা নতুন করে ভাবতে শেখায়। আর সবচেয়ে বড় কথা, ফ্যাশন-নস্টালজিয়ায় মোড়ানো হৃদয়ছোঁয়া বন্ধুত্বের গল্প শোনায় 'ফ্রেন্ডস'। আর সেজন্যই এবার বন্ধু দিবসের ভরপুর উদযাপনে সঙ্গী করা হয়েছে সবার হৃদয়ের কাছাকাছি এই বন্ধু চরিত্রগুলোকে। হ্যাপি ফ্রেন্ডশিপ ডে। বন্ধু দিবসের অফুরন্ত শুভেচ্ছা সবাইকে।

ভাবনা ও স্টাইলিং: নাদিয়া ইসলাম

সার্বিক তত্ত্বাবধান ও সমন্বয়: জাহিদুল হক

ছবি: পূর্ণ দাস

মডেল: তানহা, জারিফ, আজরাফ, স্বাধীন, জোনাকি ও মেঘলা

পোশাক: টুয়েলভ ও ব্লু চীজ

মেকআপ: পারসোনা

লোকেশন: ক্যানভাস স্টুডিও

স্ন্যাকস পার্টনার: সাব্রোসো চীজ পেস্ট্রি

আয়োজনে : টিম হাল ফ্যাশন

ভিডিওগ্রাফি: কানিজ ফাতেমা ও আশিকুর রহমান

বিশেষ কৃতজ্ঞতা: তানহা শেখ, সাইদ রিদোয়ান হোসেন বীপ্র, সিন্ডারেলা

প্রকাশ: ০৩ আগস্ট ২০২৫, ০৪: ১২
বিজ্ঞাপন