যত্নে থাকুক ‘রাতের রানি’
শেয়ার করুন
ফলো করুন

এপিফিলিয়াম অক্সিপেটালামের মতো খটমটে বৈজ্ঞানিক নাম তার। কুইন অব দ্য নাইট বা প্রচলিত ভাষায় নাইট কুইন ফুলের কথাই বলা হচ্ছে। সাধারণত এমন দিনেই বাগানের এই মহারানি আমাদের দিকে মুখ তুলে চান। সারা বছর সাধ্যসাধনার পর একবারই এই রাজসিক আর মনপ্রাণ ভরিয়ে দেওয়া সুরভির ফুলটি দর্শন দেন। এখন আমাদের দেশের শখের বাগানিদের অনেকের বাগানে রাতের রানির রাজত্ব চলছে। অনেকেই বাগানে এই আরাধ্য ফুলের গাছ রাখতে চান, কিন্তু এর যত্নের সবকিছু অতটা জানা থাকে না বলে ভালো ফল মেলে না।

কুইন অব দ্য নাইট আসলে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ আর মধ্যভাগ থেকেই পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়েছে। আর মজার ব্যাপার হচ্ছে, এটি আসলে ক্যাকটাস-জাতীয় গাছ। বিশাল, রাজকীয় আর ধবধবে সাদা ফুল হয় এতে বছরে একবার। একে অনেকে অর্কিড ক্যাকটাসও বলেন। বছরে একবার ফুল হয় বলেই হয়তো এত আরাধ্য এটি সবার কাছে। তবে এ গাছ লাগানো ও যত্ন করা খুব কঠিন নয়।

বিজ্ঞাপন

রূপে আর সৌরভে মাতোয়ারা করা এই কুইন অব দ্য নাইট ফুল নিজের করে নেওয়ার সব কায়দাকানুন জেনে নেওয়া যাক তবে।

পরিবেশ

কুইন অব দ্য নাইট ফুলের পরাগায়ন পদ্ধতি খুবই বিস্ময়কর। বাদুড় আর মথের মতো রাতজাগা প্রাণীদের মাধ্যমেই তা হয়ে থাকে। রাতে ফোটা এই ফুলের সম্মোহনী মিষ্টি গন্ধে আকৃষ্ট হয়ে এরা ফুলটির কাছে যায়। আর এর পরাগ এক ফুল থেকে অন্য ফুলে নিয়ে যায়। আর এ গাছের ভালো বৃদ্ধি আর ফুল হওয়া মূলত নির্ভর করে এর পরিবেশের তাপমাত্রা ও আর্দ্রতার ওপরে। দিনে অন্তত ৬ ঘণ্টা পরোক্ষ সূর্যালোকে ভালো থাকে গাছটি। ফুলটি বেশ স্পর্শকাতর হলেও এ ফুলের গাছ যথেষ্ট কষ্টসহিষ্ণু। আর মাটির পুষ্টি নিশ্চিত করতে সার দিলে ফুল পাওয়ার আশা পূরণ হবে সহজেই। সাধারণভাবে আর্দ্র, কিছুটা ছায়াযুক্ত আর অপেক্ষাকৃত উষ্ণ জায়গায় কুইন অব দ্য নাইট ভালো হয়। আর এ জন্য আমাদের দেশের উঠানের এক কোণ বা বারান্দা খুবই উপযুক্ত।

 মাটি

সঠিক মাটি পেলে এ গাছ ভালো বাড়ে। পানি জমে না এমন ঝুরঝুরে মাটি এ জন্য উপযোগী। তবে মাটি যেন আর্দ্রতা ধরে রাখে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। পিএইচ লেভেল ৫.৫ থেকে ৬.৫; অর্থাৎ কিছুটা অম্লীয় মাটি ভালো এ গাছের জন্য। একেবারে শুকনা মাটি একেবারেই নেওয়া যাবে না। পিট মস, পেরিলাইট বা অর্কিডের বাকল মেশানো যায় মাটিতে।

বিজ্ঞাপন

পানি

ফুলটি দেখতে মনে হয় যেন ফুলের ঘায়ে মূর্ছা যায়। কিন্তু নাইট কুইনের গাছ বেশ সহিষ্ণু ধরনের। এতে সারা বছর খুব বেশি পানি দিতে হয় না। ওপরের দুই ইঞ্চি মাটি বেশি শুকিয়ে না গেলেই হলো। অতিরিক্ত পানি দিলে পচে যাবে গোড়া। এর বৃদ্ধি আর ফুল হওয়ার মৌসুমে পানি একটু বেশি লাগে। বৃষ্টির পানি দিলে খুব ভালো হয়। এতে মিনারেলস থাকে।

সার

ফুল আসার মৌসুমে সার দেওয়া ভালো নাইট কুইনের গাছে। মাসে একবার অন্তত মাটি নিড়িয়ে সার দিতে হবে এ সময়। ফুল হওয়ার আগে ও পরে ফসফেট-পটাশিয়াম আর বীজ হওয়ার সময় নাইট্রোজেন সার দিতে হবে। খুব বেশি সার দেওয়া যাবে না। একবারে একগাদা সার না দিয়ে মাঝেমধ্যে অল্প করে দিলে ভালো। গাছের গোড়া হলদে হয়ে গেলে বুঝতে হবে, সার বেশি হচ্ছে। মাটির নাইট্রোজেন লেভেল অতিরিক্ত কমবেশি হলে ফুল দেয় না এ গাছ।

তথ্যসূত্রঃ গুড হাউস কিপিং

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০: ৫৬
বিজ্ঞাপন