
ঈদের পরে আবার লেগেছে বিয়ের ধুম। আর বিয়ের জন্য ডেস্টিনেশন ওয়েডিংয়ের ট্রেন্ড বহু আগে থেকেই জনপ্রিয়। কিন্তু ট্রেন্ডের মজাই হচ্ছে ঘুরেফিরে বারবার তা আসে নতুন রূপে। এখন শুধু তারকারা নন, নতুনত্ব পেতে ডেস্টিনেশন ওয়েডিং বেছে নিচ্ছেন সমাজের সব স্তরের মানুষই। ডেস্টিনেশন ওয়েডিং এমনিতেই ব্যয়বহুল। কিন্তু নিজের কাছে তো বটেই, আমন্ত্রিত অতিথিদের কাছেও বিয়ের দিনটি বিশেষভাবে আলাদা ও স্মরণীয় করে রাখতে ওয়েডিং ডেস্টিনেশন এখন বেশ জনপ্রিয়। সহজ করে বললে নিজের পরিচিত গণ্ডির বাইরে অন্য কোনো স্থানে গিয়ে বিয়ে করাটাই ডেস্টিনেশন ওয়েডিং।

পরিবার আর কাছের কিছু মানুষকে নিয়ে শহুরে কোলাহল থেকে বাইরে গিয়ে দেশ কিংবা বিদেশের প্রাকৃতিক কোনো পরিবেশে বিয়ে করার অভিজ্ঞতাটি আসলেই অনন্য। ডেস্টিনেশন ওয়েডিংয়ের পরিকল্পনা বেশ ঝক্কির, তবে জীবনের সবচেয়ে বড় উৎসব বলে কথা। তবে এ ক্ষেত্রে নিজের বাড়ির বাইরে গিয়ে মাথায় রাখতে হয় অনুষ্ঠান অনুযায়ী ভেন্যু, খাবারের মেনু ঠিক করা, বর-কনের পাশাপাশি আত্মীয়স্বজনের পোশাক, যানবাহনের ব্যবস্থা করা, নিমন্ত্রণপত্র ছাপানো, স্টেজ সাজানো, তত্ত্ব গোছানো, ছবি, ভিডিওগ্রাফিসহ আরও অনেক কিছু! যাঁরা একটু সুন্দরভাবে ও ঝামেলামুক্তভাবে এমন আয়োজন করতে চান, তাঁরা ভেন্যু ঠিক করতে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট আর ওয়েডিং প্ল্যানারের সাহায্য নিতে পারেন। ডেস্টিনেশন ওয়েডিংয়ের সব কাজ দায়িত্ব নিয়ে করে দেয় ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানগুলো। গায়েহলুদ, বিয়ে, বউভাত, গানের আসর, মেহেদি, ব্রাইডাল শাওয়ার সবকিছুই ইভেন্টের প্যাকেজে রাখা হয়। এখানে হাল ফ্যাশনের পাঠকদের জন্য রইল দারুণ কিছু ডেস্টিনেশন ওয়েডিংয়ের জায়গার খোঁজখবর।

সিলেটের শ্রীমঙ্গলে রয়েছে দারুণ সব নৈসর্গিক রিসোর্ট, যেখানে আপনি নিজের সাধ্য ও সুবিধামতো বেছে নিতে পারেন ভেন্যু। বেশ কিছু রিসোর্ট রয়েছে, যেখানে আয়োজন করা হয়ে থাকে ডেস্টিনেশন ওয়েডিং।
গ্র্যান্ড সুলতান
গ্র্যান্ড সুলতান প্রকৃতির মাঝে অবস্থিত এবং চা–বাগানে ঘেরা এই রিসোর্ট সবার পছন্দের শীর্ষে। এখানে জনপ্রিয় তারকাদের ডেস্টিনেশন ওয়েডিং হয়েছে। তাদের ওয়েবসাইটে যোগাযোগ করে বিস্তারিত তথ্য নিয়ে নিতে পারেন।
দ্য প্যালেস লাক্সারি রিসোর্ট
এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রিসোর্ট বলে জানা যায় তাদের ওয়েবসাইট থেকে। শ্রীমঙ্গল থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে হবিগঞ্জ জেলার বাহুবলে এর অবস্থান। বিভিন্ন আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন এই রিসোর্টের ওয়েবসাইটে দেওয়া বিস্তারিত তথ্যে যোগাযোগ করে এখানে অনায়াসে ডেস্টিনেশন ওয়েডিং করা যেতে পারে।

দুসাই রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা
এ জায়গাটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য এমনিতেই সবার কাছে প্রিয়। রিসোর্টটি ঝিরি, ট্রেইল, প্রাকৃতিক লেক, টিলা, চা–বাগান দিয়ে ঘেরা। কেবল ওয়েডিং ভেন্যু হিসেবে নয়, ওয়েডিং সিনেমাটোগ্রাফি আর পিকচার পারফেক্ট ছবির জন্য এই স্থান এককথায় অসাধারণ। বিস্তারিত রয়েছে তাদের ওয়েবসাইটে।

বান্দরবানের পাহাড়ি এলাকার চেয়ে যুগলদের জন্য দারুণ ডেস্টিনেশন ওয়েডিং স্পট আর হতেই পারে না। এ জন্য দারুণ সব রিসোর্ট গড়ে উঠেছে বান্দরবানে।
সাইরু হিল রিসোর্ট
বেশ আগে থেকেই এর কথা সবার মুখে মুখে। বান্দরবান থেকে চিম্বুক যাওয়ার পথে এই রিসোর্টটি চোখে পড়ে। সামনে সাঙ্গু নদ। এখানে দারুণ একটা ডেস্টিনেশন ওয়েডিং হতেই পারে। বিস্তারিত রয়েছে তাদের ফেসবুক পেজ ও ওয়েবসাইটে।
মাটি-টা
চট্টগ্রামের আনোয়ারায় পাহাড় আর লেকের মাঝে অবস্থিত এ রিসোর্টটি সাম্প্রতিক সময়ে খুব জনপ্রিয়। অনেক মানুষের ধারণক্ষমতাসম্পন্ন এই রিসোর্টে বড় পরিবারের সবাইকে নিয়ে আয়োজন করা যাবে ডেস্টিনেশন ওয়েডিং। বিস্তারিত জানা যাবে তাদের ফেসবুক পেজে।

মেঘপুঞ্জি রিসোর্ট, ম্যাডভেঞ্চার আর জুমঘর ইকো রিসোর্ট
সাজেকে অনেক রিসোর্ট থাকলেও এ তিনটি রিসোর্টের ধারণক্ষমতা বেশি। মেঘের কাছাকাছি ডেস্টিনেশন ওয়েডিংয়ের দারুণ জায়গা হতে পারে এই রিসোর্টগুলো। রিসোর্টের ফেসবুক পেজে যোগাযোগ করে বিস্তারিত জেনে নিতে পারেন।

মারমেইড বিচ রিসোর্ট
কক্সবাজারের প্যাঁচার দ্বীপের এই রিসোর্টকে বলা যেতে পারে সবচেয়ে নান্দনিক এক ডেস্টিনেশন ওয়েডিং স্পট। এখানে দেশি–বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনা সব সময়ই থাকে। সাম্প্রতিক সময়ে জনপ্রিয় অনেক তারকার ডেস্টিনেশন ওয়েডিং হয়েছে এখানে। সে জন্য বিভিন্ন রকমের প্যাকেজ রয়েছে। বিস্তারিত জেনে নিতে পারবেন ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজে যোগাযোগ করে।
মুন নেস্ট
পাঁচটি কটেজ নিয়ে গড়ে ওঠা ইনানী সৈকতের কাছের এই রিসোর্ট ছোটখাটো পারিবারিক বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য দারুণ এক জায়গা। নির্জন সমুদ্রসৈকতে ছিমছাম বিয়ের আয়োজন করা যাবে অনায়াসে। কাঠের এই ইকো রিসোর্ট সুন্দর স্মৃতি হয়ে থাকবে। বিস্তারিত জানা যাবে তাদের ফেসবুক পেজে।

তীরে নীড়
সোহেল ও শাখী দম্পতির দুই ভিলার রিসোর্ট প্যাঁচার দ্বীপের তীরে নীড়। বিস্তৃত জায়গাজুড়ে প্রাইভেট বিচসহ এই রিসোর্টে সাম্প্রতিক সময়ে চালু হয়েছে নৌকায় বসে দুপুর ও রাতের খাবারের আয়োজন। এখনো কোনো ডেস্টিনেশন ওয়েডিং না হলেও খুব শিগগিরই তেমন ব্যবস্থা ও ধারণক্ষমতা নিয়ে আয়োজনের ইচ্ছার কথা জানান স্বত্বাধিকারীরা। নির্জন সমুদ্রকূল, জেলে–জীবন, ঋজু খাল, সাম্পান নৌকা ও একপাশে পাহাড় যে মুগ্ধতার আবেশ দেয়, তা নবদম্পতির নতুন জীবন শুরুর সাথি হিসেবে এককথায় অনন্য বলাই চলে। ফেসবুক পেজে নক করলেই বিস্তারিত জানা যাবে।
বিয়ের আয়োজনের ভিন্নতা পেতে চলে যেতে পারেন এবং আপনার সাধ্যের মধ্যে বেছে নিতে পারেন যেকোনো একটিকে।