নেতিবাচকতা ভেঙে এগিয়ে নারী
শেয়ার করুন
ফলো করুন

‘২০৩০ সালের মধ্যে ঋতুস্রাবকে জীবনের একটি স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে তুলে ধরা’র থিম নিয়ে বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে মেন্সট্রুয়াল হাইজিন ডে ২০২২। মেন্সট্রুয়াল হাইজিন ডে একটি বার্ষিক সচেতনতা দিবস, যা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে মাসিক স্বাস্থ্যবিধি ব্যবস্থাপনার (এমএইচএম) গুরুত্ব তুলে ধরার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। ২০১৪ সাল থেকে সারা পৃথিবীতে মেন্সট্রুয়াল হাইজিন ডে পালন শুরু হয়।

এ বছরের মূল প্রতিপাদ্যগুলো হলো

—মাসিক ঋতুস্রাবের ব্যাপারে নেতিবাচক ধারণাগুলোর অবসান ঘটানো
—মাসিককালীন প্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর ব্যবহার স্বাভাবিকীকরণ
—ঋতুস্রাব সম্পর্কে শিক্ষা ও মাসিক–বান্ধব স্যানিটেশনের সুবিধাসংক্রান্ত

বিজ্ঞাপন

প্রতিবন্ধকতাগুলো সম্পর্কে সতর্কতা বাড়ানো এবং তহবিল সংগ্রহ

এবারের ঋতুস্রাব দিবস পালনের লক্ষ্যগুলোর মূলে রয়েছে ২০৩০ সালের মধ্যে এমন একটি বিশ্ব গড়ে তোলা, যেখানে মাসিক ঋতুস্রাবের জন্য কেউ পিছিয়ে থাকবে না। তা ছাড়া সোশ্যাল মিডিয়া ও বিভিন্ন সংস্থা #WeAReCommitted হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ একটি বিশ্ব তৈরিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে, যেখানে ঋতুস্রাবকে জীবনের একটি স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে গণ্য করা হবে। এ বছর মেন্সট্রুয়াল ব্রেসলেট ব্যবহারের মাধ্যমেও দিনটি পালিত হচ্ছে। সেই সঙ্গে এমএইচ ডের একটি অফিশিয়াল ক্যাম্পেইন ভিডিও তৈরি করা হয়েছে, যা শেয়ার করার মাধ্যমে সবাইকে এই দিবসের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশের আহ্বান জানানো হয়েছে।

লাল এমন একটি রং, যা আমরা সবাই ভালোবাসি এবং এখানে এই লাল রঙের সঙ্গে মাসিক চক্রেরও একটি ঘনিষ্ঠ যোগসূত্র রয়েছে। প্রজননতন্ত্রের এই স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ছাড়া আমরা সবাই অস্তিত্বহীন। তা সত্ত্বেও সেই লাল এখনো সমাজে কলঙ্ক ও লজ্জার উৎস। এই সামাজিক নেতিবাচকতা থেকে বেরিয়ে আসতে না পারলে নারীর অগ্রযাত্রা আসলেও সম্ভব নয়।

বিজ্ঞাপন

গ্রামে তো বটেই, শহরাঞ্চলেও এখন পর্যন্ত মাসিক ঋতুস্রাব এক বিব্রতকর বিষয়। লজ্জা, ভয় ও সংকোচের জায়গা। কিশোরী বয়স থেকেই নারীরা বহু অপ্রীতিকর ঘটনা পার হয়ে ধীরে ধীরে পারিবারিক ও পেশাগত জীবনে এই মাসিক ঋতুস্রাবজনিত অসুস্থতা, অস্বস্তি, মানসিক চাপ ইত্যাদির সঙ্গে মানিয়ে নেয়। প্রয়োজনীয় স্যানিটারি ন্যাপকিন ও অন্যান্য সামগ্রী কেনাও এক মহাযুদ্ধ। অনেক সময়ে এসব সামগ্রীর অপ্রতুলতা এবং লম্বা সময় ধরে ব্যবহৃত প্যাড পরিবর্তন করার সুযোগ না হওয়ার ফলে বহুবিধ মারাত্মক রোগে ভোগেন নারীরা। যার মধ্যে জরায়ুমুখের সংক্রমণ বা আরও প্রাণঘাতী সব রোগ রয়েছে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কর্মক্ষেত্র, সামাজিক কেন্দ্র, পাবলিক প্লেস, শপিং মল—এসব জায়গায় সহজে পিরিয়ডকালের প্রয়োজনীয় সামগ্রী সংগ্রহের জন্য কিয়স্ক পয়েন্ট বা ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন এখন সময়ের দাবি। এ লক্ষ্যে বেশ কিছুটা অগ্রসরও হয়েছে আমাদের দেশ। পাঠ্যক্রমে ঋতুস্রাবের ব্যাপারে বৈজ্ঞানিক তথ্যাবলি সন্নিবেশ করার কোনো বিকল্প নেই। পারিবারিকভাবেও পরিবারের পুরুষ ও ছোট ছেলে সদস্যদের ঋতুকালীন সব বিষয় সম্পর্কে শিক্ষিত করা ও স্বাভাবিকভাবে পুরো বিষয়টি নেওয়ার অভ্যাস করতে হবে। এ ছাড়া কিশোরী ও নারীদের পিরিয়ডে ব্যবহৃত সামগ্রী–সম্পর্কিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সম্পর্কেও প্রশিক্ষণ দেওয়া দরকার। প্রকৃতপক্ষে সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই আজকের বিশ্ব মেন্সট্রুয়াল হাইজিন দিবসের সঙ্গে সম্পর্কিত সব বিষয়ের ব্যাপারেই।

প্রকাশ: ২৮ মে ২০২২, ১৫: ০৪
বিজ্ঞাপন