কোরিয়ান নাটক আর কে–পপ তারকাদের কল্যাণে এখন আমাদের দেশে সেখানকার খাবারগুলোও তুমুল জনপ্রিয়। কোরিয়ান রামেন বা রামিউন, বুলগগি, কিমবাপ, বিবিমবাপ আর কিমচি এখন আমাদের প্রিয় খাবারের তালিকায়।
এর মধ্যে আবার কিমচির রয়েছে অবাক করা স্বাস্থ্যগুণ। বিশেষ করে গাঁজিয়ে বানানো হয় বলে এতে প্রোবায়োটিক বা উপকারী ব্যাকটেরিয়া থাকায় কিমচি রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে অনন্য ভূমিকা পালন করতে পারে। আর এর আরও সব স্বাস্থ্যগুণ রয়েছে, যেগুলো জানলে অবাক হতে হয়।
কম ক্যালরি থাকা সত্ত্বেও কিমচি পুষ্টিগুণে ভরপুর। চাইনিজ বাঁধাকপি কিমচির অন্যতম প্রধান উপাদান। ভিটামিন এ ও সি, অন্তত ১০টি খনিজ পদার্থ আর ৩৪টির বেশি অ্যামাইনো অ্যাসিড রয়েছে কিমচিতে৷ যেহেতু কিমচি বিভিন্ন উপাদানে তৈরি হয়, তাই এর সঠিক পুষ্টির প্রোফাইল ব্যাচ এবং ব্র্যান্ডভেদে সামান্য আলাদা হতে পারে। তবে এক কাপ বা ১৫০ গ্রাম কিমচিতে আছে:
ক্যালরি ২৩
শর্করা ৪ গ্রাম
প্রোটিন ২ গ্রাম
চর্বি ১ গ্রামের কম
ফাইবার ২ গ্রাম
সোডিয়াম ৭৪৭ মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি৬ দৈনিক চাহিদার ১৯ শতাংশ
ভিটামিন সি দৈনিক চাহিদার ২২ শতাংশ
ভিটামিন কে দৈনিক চাহিদার ৫৫ শতাংশ
ফোলেট দৈনিক চাহিদার ২০ শতাংশ
আয়রন দৈনিক চাহিদার ২১ শতাংশ
নিয়াসিন দৈনিক চাহিদার ১০ শতাংশ
রিবোফ্লাভিন দৈনিক চাহিদার ২৪ শতাংশ
সবুজ শাকসবজি ভিটামিন কে ও রিবোফ্লাভিনের ভালো উৎস। কিমচিতে প্রায়ই বাঁধাকপি, সেলারি ও পালংশাকের মতো বিভিন্ন সবুজ সবজি থাকে। তাই এটি এ ভিটামিন দিতে পারে।
কিমচির ভিটামিন কে হাড়ের বিপাক ও রক্ত জমাটবাঁধাসহ অনেক শারীরিক ক্রিয়াকলাপে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আর রিবোফ্লাভিন শক্তি উৎপাদন, কোষের বৃদ্ধি এবং বিপাক নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এ ছাড়া গাঁজনপ্রক্রিয়ায় বানানো হয় বলে এটি পুষ্টি উপাদানগুলোকে সরল আকারে পরিণত করতে পারে, যা আপনার শরীরে আরও সহজে শোষিত হয়।
কিমচি যে ল্যাক্টো-গাঁজন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায়, তা এটিকে বিশেষভাবে অনন্য করে তোলে। গাঁজন করা খাবারের শুধু বর্ধিত শেলফ লাইফ নয় বরং একটি বাড়তি ও বিশিষ্ট স্বাদ আর সুগন্ধও রয়েছে। এর পেছনে এর উপকারী ব্যাকটেরিয়ার ভূমিকা থাকে। এদের একাংশ কিমচির উপকরণগুলোর শর্করাকে ল্যাকটিক অ্যাসিডে পরিণত করে, যা কিমচিকে তার বৈশিষ্ট্যযুক্ত টক দেয়। এটি সাপ্লিমেন্ট হিসেবে গ্রহণ করা হলে, এই ব্যাকটেরিয়াটি জ্বর আর নির্দিষ্ট ধরনের ডায়রিয়া প্রশমনসহ বিভিন্ন উপকারিতা দিতে পারে।
গাঁজন পাকস্থলীতে এমন একটি পরিবেশ তৈরি করে, যাতে অন্যান্য ভালো ব্যাকটেরিয়াকে সঠিকভাবে কাজ করতে পারে আর বংশবৃদ্ধি করতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে প্রোবায়োটিক, যেগুলো জীবন্ত অণুজীব, যা নিয়মিত খেলে স্বাস্থ্যের সুরক্ষা দেয়। প্রকৃতপক্ষে এই অণুজীবগুলো বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক আর ওষুধ হিসেবে কাজ করতে পারে। যেমন:
১.ধরনের ক্যানসার
২. সর্দিকাশি
৩.বদহজম
৪.হৃদ্রোগ
৫.মানসিক রোগ
৬.ত্বকের সমস্যা
ছবিঃ পেকজেলস ডট কম