সবচেয়ে সুখী মানুষদের খাদ্যতালিকায় কী থাকে, জানলে অবাক হবেন নিশ্চয়ই
শেয়ার করুন
ফলো করুন

চলুন জেনে নেওয়া যাক, কীভাবে সঠিক খাবার আপনাকে রাখতে পারে মানসিকভাবে স্থির ও ইতিবাচক।

মনের সঙ্গে পাকস্থলীর গভীর সম্পর্ক

অন্ত্রে রয়েছে ট্রিলিয়ন সংখ্যক ভালো ব্যাকটেরিয়া, যারা খাবার হজম করার পাশাপাশি তৈরি করে সেরোটোনিন ও ডোপামিনের মতো হরমোন। যা মুড, ঘুম আর আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে। তাই অন্ত্র ঠিক থাকলে মনও থাকে ভালো।

মানসিক স্বাস্থ্য শুধু থেরাপি বা ওষুধে নয়, খাদ্যেও লুকিয়ে আছে
মানসিক স্বাস্থ্য শুধু থেরাপি বা ওষুধে নয়, খাদ্যেও লুকিয়ে আছে

সঠিক ডায়েটই হতে পারে মুড বুস্টার

বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ফল, সবজি, শস্য ও প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খেলে মানসিক চাপ কমে, আর বাড়ে ইতিবাচকতা। অর্থাৎ, খাদ্যই হতে পারে প্রাকৃতিক অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট।

মেডিটেরিয়ান ডায়েট: মানসিক স্বাস্থ্যের মডেল

এই ডায়েটে গুরুত্ব পায় ফল, শাকসবজি, মাছ, বাদাম, ডাল, অলিভ অয়েল ও দুগ্ধজাত খাবার। কমানো হয় ভাজা, প্রক্রিয়াজাত মাংস, মিষ্টি ও কার্বনেটেড ড্রিংকস। গবেষণা বলছে, এই ডায়েট মানসিক ক্লান্তি ও ডিপ্রেশনের ঝুঁকি প্রায় ১০% পর্যন্ত কমাতে পারে।
মানসিক ভারসাম্যের জন্য দরকার প্রোবায়োটিকস খাবার

দই, কিমচি, টক দুধ বা কম্বুচার মতো ফারমেন্টেড খাবার অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া ঠিক রাখে। এতে শরীরে প্রদাহ কমে এবং মন থাকে প্রশান্ত।

ফল, সবজি, শস্য ও প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খেলে মানসিক চাপ কমে, আর বাড়ে ইতিবাচকতা
ফল, সবজি, শস্য ও প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খেলে মানসিক চাপ কমে, আর বাড়ে ইতিবাচকতা

এসব খাবার রাখুন দৈনন্দিন তালিকায়

ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড: তেলতেলে মাছ, আখরোট, চিয়া সিড

ম্যাগনেশিয়াম: বাদাম, বীজ, পালং বা অন্যান্য গাঢ় সবুজ শাক

ফোলেট ও বি-ভিটামিন: ডিম, কলা, বিভিন্ন ধরনের ডাল

আয়রন ও জিংক: সামুদ্রিক মাছ, কলিজা, মটরশুঁটি

এই পুষ্টিগুলো মস্তিষ্কে শক্তি জোগায়, ক্লান্তি দূর করে, আর মনোযোগ বাড়ায়।

বিজ্ঞাপন

যে খাবারগুলো মুড খারাপ করতে পারে

অতিরিক্ত ক্যাফেইন, অ্যালকোহল, প্রক্রিয়াজাত খাবার, অতিরিক্ত চিনি আর পরিশোধিত ময়দা। সবই শরীরে প্রদাহ বাড়ায়, যার প্রভাব পড়ে মানসিক ভারসাম্যে।

তাই মন ভালো রাখতে প্রথম পদক্ষেপ হতে পারে আপনার প্লেটেই
তাই মন ভালো রাখতে প্রথম পদক্ষেপ হতে পারে আপনার প্লেটেই

খান মন দিয়ে, শুধু পেট ভরাতে নয়

মাইন্ডফুল ইটিং বা সচেতনভাবে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। কী খাচ্ছেন, কখন খাচ্ছেন, তা লক্ষ্য করুন। এতে হজম ভালো হয়, আর শরীর-মন দুটোই জানে ঠিক কতটুকু দরকার।

সামাজিকভাবে খাবার গ্রহণে আছে মনের চিকিৎসা

বন্ধু বা পরিবারের সঙ্গে একসঙ্গে খাওয়া- শুধু খাবার নয়, এটি মানসিক স্বাস্থ্যেরও থেরাপি। একসঙ্গে খাওয়ার সময় মস্তিষ্কে নিঃসৃত হয় অক্সেটোসিয়ান, যা বাড়ায় সুখানুভূতি।

মাইন্ডফুল ইটিং বা সচেতনভাবে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন
মাইন্ডফুল ইটিং বা সচেতনভাবে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন

ছোট পরিবর্তনেই বড় পার্থক্য

পুরো ডায়েট বদলানোর দরকার নেই। ছোট থেকে শুরু করুন, একদিনে এক বাটি ফল, প্যাকেটজাত খাবারের বদলে ঘরোয়া রান্না, সফট ড্রিঙ্কের বদলে লেবু পানি বা হারবাল টি।

মনের যত্নেও চাই পুষ্টিকর পরিকল্পনা

মানসিক স্বাস্থ্য শুধু থেরাপি বা ওষুধে নয়, খাদ্যেও লুকিয়ে আছে। তাই মেনুতে রাখুন রঙিন ফল, তাজা সবজি, প্রাকৃতিক ফ্যাট আর পর্যাপ্ত পানি।

“যা খাই, তাই-ই আমরা”এই কথাটা শুধু শরীর নয়, মনেও প্রযোজ্য। তাই মন ভালো রাখতে প্রথম পদক্ষেপ হতে পারে আপনার প্লেটেই। খান রঙিন, খান পুষ্টিকর। আর দিনটা শুরু করুন একটু হাসি দিয়ে।

সূত্র: বিবিসি লাইফস্টাইল

ছবি: এআই দিয়ে তৈরি

বিজ্ঞাপন
প্রকাশ: ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ০১: ০০
বিজ্ঞাপন