নিজেকে ভালোবাসুন এই ৫ উপায়ে
শেয়ার করুন
ফলো করুন

আপনার চারপাশে পরিবার, বন্ধুবান্ধব ও সহকর্মীরা রয়েছে। আপনি তাদের ভালো-মন্দ নিয়ে নানাভাবে সচেতন। কিন্তু একবারও কি নিজেকে নিয়ে ভেবে দেখেছেন। নিজেকে সময় দিয়েছেন। এ বিষয়ে বাল্টিমোরের থেরাপিস্ট হান্নাহ এলিস রোজের মতে, নিজেকে ভালোবাসা হলো নিজের শক্তি ও দুর্বলতা এবং এর ভেতরের সবকিছু জানা যায়। যখন আপনি নিজেকে ভালোবাসবেন, তখন নিজের ভুলগুলো স্বীকার করে, সে অনুযায়ী কাজ করবেন।

অন্যদিকে সেলফ লাভ বা আত্মপ্রেমের অভাব থাকলে তা আপনার সামগ্রিক উন্নতিতে বাধা সৃষ্টি করবে। হান্নাহ এলিসের এক গবেষণা থেকে প্রাপ্ত তথ্যে বলা হয়, যাদের আত্মসম্মানবোধ কম, তারা ডিপ্রেশনে বেশি ভোগেন এবং তাদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে না। ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট মেলানিয়া গ্রিনবার্গ বলেন, ডিপ্রেশন আপনাকে নিজের সম্পর্কে নেতিবাচক চিন্তাভাবনার মধ্যে ফেলে দেয়। তাই হতাশা ও মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকতে নিজেকে ভালোবাসা জরুরি।

অন্য কথায়, এটি আপনাকে কঠিন মুহূর্তে সান্ত্বনা দেয় এবং শান্ত বোধ করতে সাহায্য করে। হ্যামিল্টন ও অন্য বিশেষজ্ঞরা নিজেকে ভালোবাসার পাঁচটি উপায় নিয়ে আলোচনা করেছেন। উপায়গুলো হলো—

যা ভালোবাসেন, তা–ই করেন: নিজের যা করতে ভালো লাগে, তা–ই বেশি বেশি চর্চা করে নিজের সত্তাকে জীবিত রাখতে হবে। কারও ছবি আঁকা, কারও গান গাওয়া, কারও বই পড়তে ভালো লাগে। নিজের ভালো লাগাকে অগ্রাধিকার দিয়ে সে অনুযায়ী কাজ করতে হবে। সাইকোলজিস্ট রোজ তাঁর ক্লায়েন্টকে সব সময় এ উপদেশ দেন।

নিজের অঙ্গভঙ্গিতে নজর দিন: হ্যামিল্টন মস্তিষ্কের রসায়ন, স্নায়ুবিজ্ঞান, সাইকোথেরাপি ও ব্যক্তিগত বিকাশের কৌশল সম্পর্কে গবেষণা করেছেন। তিনি তাঁর বই (I Heart Me: The Science of Self-Love)-এ সেলফ লাভকে উন্নত করার কয়েক ডজন টেকনিক সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। এর মধ্যে প্রথম গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো, নিজের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ ও অঙ্গভঙ্গি। তিনি বলেন, আপনার মন ও শরীরের মধ্যে দ্বিমুখী সম্পর্ক বিরাজমান। এ ক্ষেত্রে সামাজিক মনোবিজ্ঞানী এ্যামি কুড়ির ‘পাওয়ার পোস’ টেকনিক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।

বিজ্ঞাপন

না বলতে শিখুন: যেটা আপনার পছন্দ নয়, সেটায় না বলতে শিখুন। যে কাজগুলো আপনার পছন্দ নয়, সেটির একটি সীমা নির্ধারণ করুন এবং মানুষের সঙ্গে কাজ করার ক্ষেত্রে সেগুলোতে না বলতে শিখুন। সাইকোলজিস্ট রোজ বলেন, যে ব্যক্তি নিজেকে ভালোবাসে, সে তার কাজ ও দায়িত্বের একটি সীমানা নির্ধারণ করতে পারে। যখন কোনো কাজ অস্বস্তিকর হয়ে ওঠে, তখন সে জানে কীভাবে না বলতে হয়।

প্রয়োজনে থেরাপিস্টের শরণাপন্ন হন: মাঝেমধ্যে টক্সিক রিলেশন, শৈশবের কোনো খারাপ স্মৃতি বা অভিজ্ঞতা সেলফ লাভের ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। তখন একজন মনোবিজ্ঞানীর শরণাপন্ন হওয়া উচিত। গ্রিনবার্গ বলেন, যদি নিজের সম্পর্কে নেতিবাচক চিন্তাভাবনা আপনার জীবনকে গুরুতরভাবে প্রভাবিত করে, তাহলে বলা যায় আপনি বিচ্ছিন্নতা বা সিরিয়াস ট্রমায় ভুগছেন। যদি এমন হয়, তবে একজন থেরাপিস্টের শরণাপন্ন হওয়া খুবই জরুরি।

কখনো পরিপূর্ণতা আশা করবেন না: নিজেকে ভালোবাসবেন মানে এই নয় যে নিজের মধ্যে কোনো অপূর্ণতাকে মেনে নিতে পারবেন না। গ্রিনবার্গ বলেন, এমন হলে নিজের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন বিষয়টিকে সহজ করে তোলে। এরপর নিজেকে নিজের ক্ষমা প্রদর্শন করতে হবে।

তাই আর দেরি কেন? আজই ভালোবাসতে শিখুন নিজের আপন সত্তাকে।

সূত্র: গুড হাউসকিপিং

ছবি: পেকজেলসডটকম

বিজ্ঞাপন
প্রকাশ: ০১ মে ২০২৪, ০১: ০০
বিজ্ঞাপন