এই ৭ কাজ করে ঝেড়ে ফেলুন সব নেতিবাচক চিন্তা
শেয়ার করুন
ফলো করুন

চারিদিকে শুধুই নেতিবাচক সংবাদ, নেতিবাচক ঘটনা। হতাশা, বিষাদ, উদ্বেগ যেন আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। জীবনের পথে এগিয়ে যেতে নেতিবাচক চিন্তাভাবনা আমাদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য, চিন্তা করার প্রক্রিয়া, কর্মজীবন, এমনকি সৃজনশীলতাকেও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। আত্মবিশ্বাস কেড়ে নেয়। যার কারণেই মূলত হতাশা, বিষাদ আর উদ্বেগ বাসা বাঁধতে শুরু করে আমাদের জীবনে।
তবে এসব থেকে বেরিয়ে আসা খুব বেশি যে কঠিন, তা কিন্তু নয়। বরং এর জন্য থাকতে হবে ইচ্ছাশক্তি। কাজ করতে হবে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে। নিজের চিন্তাশক্তি ভালো কাজে লাগাতে হবে। তাহলে নেতিবাচক চিন্তাভাবনা খুব বেশি প্রভাবিত করতে পারবে না। এর জন্য আপনার দৈনন্দিন জীবনের কাজকর্মেও নিয়ে আসতে হবে কিছু পরিবর্তন। এ ছাড়া বেশ কিছু কৌশল রয়েছে, যা আপনাকে নেতিবাচক চিন্তাভাবনা থেকে মুক্ত রাখতে সাহায্য করতে পারে খুব সহজেই। চলুন সেই কৌশলগুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।


১. জার্নাল রাখা

নিজেকে নেতিবাচক চিন্তাভাবনা থেকে দূরে রাখতে শুরু করতে পারেন জার্নালিং। এটি খুবই কার্যকর এক কৌশল। যখনই নেতিবাচক চিন্তাভাবনা আপনাকে তাড়া করবে, খাতা-কলম নিয়ে বসে যান। লিখতে শুরু করুন। এ ছাড়া আজকাল মুঠোফোনের নোটপ্যাডে জার্নালিং বেশ জনপ্রিয়। চিন্তা করে বের করুন, কী নিয়ে লিখতে চান এবং সেগুলো লিখে ফেলুন আপনার নোটপ্যাডে। যদি কোনো কিছুই খুঁজে না পান, নিজেকে নিয়ে আপনার মতামতগুলো লিখুন। দেখবেন নেতিবাচক চিন্তাভাবনা আর তাড়া করছে না।

বিজ্ঞাপন

২. নিজের প্রতি সদয় হোন

নিজের প্রতি সদয় হতে হবে। নিজেকে ভালোবাসতে হবে। নিজের প্রতিদিনের ছোটখাটো অর্জনগুলোকে প্রাধান্য দিতে হবে। আপনার কোনো বন্ধুর মন খারাপ হলে সচরাচর আপনি কী করেন? তার কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং তাকে উৎসাহিত করেন। ঠিক এভাবেই নিজেকে নিজের বন্ধু হতে হবে। নিজের ভুলগুলোকেও ভুলে গিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।


৩. জীবনের ছোট ছোট বিষয়ে কৃতজ্ঞ থাকুন

জীবনে নানা রকম সময় আসবে। বিভিন্ন রকম ঝড়-ঝাপটার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। এটি জীবনেরই অংশ। এগুলোকে অস্বীকার করলে চলবে না। নিজের ভালো সময়গুলোকে মনে রাখুন। আপনার জীবনের শুভ ও সুন্দর ঘটনাগুলোকে ভুলে যাবেন না। এগুলোকে নিজের অনুপ্রেরণা হিসেবে গ্রহণ করুন।

বিজ্ঞাপন

৪. নিজেকে সৃজনশীল কাজে যুক্ত রাখুন

আপনার সৃজনশীল দিকটিকে উপেক্ষা করবেন না। আপনি যেসব সৃজনশীল কাজ করতে ভালোবাসেন, কিংবা আপনার শখগুলোকে একটি নোটপ্যাডে লিখে রাখতে পারেন। যখনই আপনি নেতিবাচক চিন্তার চক্রে আটকে যাবেন, তখন এই নোটপ্যাড খুলুন এবং এসব কাজে মনোনিবেশ করুন। তা হতে পারে গান, নাচ, লেখালেখি, ছবি আঁকা, রান্না, সেলাই—যেকোনো কিছু।


৫. মজার ছলে নতুন কিছু শিখুন

যখন আপনার মাথায় কোনো নেতিবাচক চিন্তাভাবনা উঁকি দিতে শুরু করবে, তখন নতুন কিছু শিখুন। চেষ্টা করুন মজার ছলে শিখতে। এমন কোনো মাধ্যম বের করুন, যা আপনাকে বিনোদনের পাশাপাশি নতুন কিছু শেখাবে। হতে পারে তা আপনার পছন্দের কোনো টিভি শো, প্রামাণ্যচিত্র কিংবা পডকাস্টও। এতে আপনার শেখা তো হবেই, পাশাপাশি মনও ভালো থাকবে।

৬. অতিরিক্ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দিনের বেশির ভাগ সময় কাটাবেন না। এই ভার্চ্যুয়াল জগৎ থেকে বেরিয়ে আসুন। বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটান। ঘুরতে যান। নিজের শখের বাগান তৈরি করতে পারেন, যা আপনাকে মানসিক শান্তি দেবে। নিজের বা অন্যদের জন্য রান্নাও করতে পারেন।

৭. রাতে পর্যাপ্ত ঘুমান

যদি রাতে পর্যাপ্ত ঘুম না হয়, আপনার চিন্তাভাবনা নেতিবাচক দিকে প্রবাহিত হয়ে যেতে পারে। যে কারণে আপনার মধ্যে একধরনের হতাশা কিংবা বিষাদের জন্ম নেবে। আর একসময় এটি ক্রনিক অনিদ্রার মতো সমস্যারও সৃষ্টি করতে পারে, যা মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য মোটেও ঠিক নয়। তাই চেষ্টা করুন রাতে পর্যাপ্ত ঘুমানোর।

হিরো ইমেজ: গোলাম রাউফু

ছবি: পেকজেলস ডট কম

প্রকাশ: ০২ মার্চ ২০২৪, ০৬: ২১
বিজ্ঞাপন