কোলাজেন সাপ্লিমেন্টের বদলে রোজকার খাদ্যতালিকায় রাখুন এই ১০ খাবার
শেয়ার করুন
ফলো করুন

কোলাজেন নিয়ে এখন অনেক কথা হচ্ছে৷ কিন্তু আমরা জানি কোলাজেন কী? আমাদের ত্বকের গঠন ঠিক রাখতে, কোমলতা ও স্থিতিস্থাপকতা ধরে রাখার কাজটি করে কোলাজেন নামের প্রোটিন। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে প্রতি বছর এই কোলাজেন তৈরির পরিমাণ কমতে থাকে। এর কারণে ত্বক কুঁচকে যায়। বয়সের আগেই যেন বয়স বৃদ্ধির ছাপ বোঝা যায়।

এখন সব জায়গায়ই কোলাজেন সাপ্লিমেন্ট মিলছে
এখন সব জায়গায়ই কোলাজেন সাপ্লিমেন্ট মিলছে

এখন তো সব জায়গায়ই কোলাজেন সাপ্লিমেন্ট মিলছে। তবে সাপ্লিমেন্টের চেয়ে এমন সব খাবার খাওয়া ভালো, যেগুলো কোলাজেনে ভরপুর। কিন্তু সে খাবার কোনগুলো? চলুন জেনে নেয়া যাক।

মুরগীর মাংস থেকেই বেশিরভাগ কোলাজেন সাপ্লিমেন্ট তৈরি করা হয়
মুরগীর মাংস থেকেই বেশিরভাগ কোলাজেন সাপ্লিমেন্ট তৈরি করা হয়

মুরগীর মাংস

আপনি কি জানেন মুরগীর মাংস থেকেই বেশিরভাগ কোলাজেন সাপ্লিমেন্ট তৈরি করা হয়? কারণ এটি প্রচুর প্রোটিনে সমৃদ্ধ। একটি মুরগী কাটার সময় যদি আপনি খেয়াল করেন, তবে দেখবেন তাতে কী পরিমাণ কানেক্টিভ টিস্যু থাকে। এই টিস্যুগুলোই কোলাজেনের প্রধান উৎস। মুরগীর হাড়ে যে কোলাজেন আছে তা আমাদের হাঁড়ে ব্যথা আর শরীরের জ্বালাপোড়া কমাতে সাহায্য করে।

বিজ্ঞাপন

মাছ

মাছের কাঁটা ও লিগামেন্ট কোলাজেন দিয়ে তৈরি। তাই মাছে থাকা এই কোলাজেন ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এবং টানটান ভাব ধরে রাখতে ভালো কাজ করে। এজন্যই জাতিগতভাবে যেসব অঞ্চলের মানুষেরা মাছ খান, তাদের ত্বক সহজে বুড়িয়ে যায় না।

নিয়মিত মাছ খেলে কোলাজেন উৎপাদন ঠিক থাকে
নিয়মিত মাছ খেলে কোলাজেন উৎপাদন ঠিক থাকে
ডিমের সাদা অংশে থাকে প্রচুর পরিমাণে প্রোলিন
ডিমের সাদা অংশে থাকে প্রচুর পরিমাণে প্রোলিন

ডিমের সাদা অংশ

ডিমের মধ্যে যদিও কানেক্টিভ টিস্যু সেভাবে থাকে না, তবুও ডিমের সাদা অংশে থাকে প্রচুর পরিমাণে প্রোলিন নামের এক ধরনের অ্যামাইনো অ্যাসিড। এটি কোলাজেন উৎপাদনের জন্য প্রয়োজন হয়।

কোলাজেনের জন্য পেয়ারা খুব ভালো
কোলাজেনের জন্য পেয়ারা খুব ভালো

ভিটামিন সি যুক্ত ফল
কোলাজেন উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ভিটামিন সি। কোলাজেন গঠনের জন্য এই ভিটামিন খুব জরুরি। আর ভিটামিন সি যুক্ত এমন অনেক ফল আছে, যেমন কমলা, আঙুর, লেবু ও টক জাতীয় বিভিন্ন ফল। পেয়ারাতে আছে জিংক, যা কোলাজেন তৈরির জন্য অণুঘটক হিসেবে কাজ করে। ত্বকের কোলাজেন ধরে রাখার জন্য সকালের নাস্তায় বা সালাদে এই ফলগুলো নিয়মিত রাখুন।

বিজ্ঞাপন

রসুন

খাবারের স্বাদ বাড়াতে রসুন ব্যবহার করা হয়। আর এই রসুনই কোলাজেন প্রোডাকশনের জন্য বুস্টার হিসেবে কাজ করে। রসুনে আছে প্রচুর পরিমাণে সালফার। এটি কোলাজেন সমন্বয় করতে ও ভেঙে যাওয়া থেকে সুরক্ষা দেয়। কোলাজেন বাড়াতে সাহায্য করবে বলেই যে রসুন অতিরিক্ত মাত্রায় খেতে হবে, তা নয়। প্রতিদিনের ডায়েটে ২ বা ৩ কোয়া খেলেই যথেষ্ট।

রসুন কোলাজেন প্রোডাকশনের জন্য বুস্টার হিসেবে কাজ করে
রসুন কোলাজেন প্রোডাকশনের জন্য বুস্টার হিসেবে কাজ করে
সবুজ শাকসবজি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের খনি হিসেবে পরিচিত
সবুজ শাকসবজি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের খনি হিসেবে পরিচিত

সবুজ শাকসবজি

সুস্বাস্থ্যের জন্য সবুজ শাকসবজি খাওয়া এমনিতেই জরুরি। সেই সঙ্গে এতে থাকে ত্বকের নানা উপকারিতা। পালং শাক, সবুজ সবজি থেকে ক্লোরোফিল পাওয়া যায়, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের খনি হিসেবে পরিচিত। এটি ত্বকের কোলাজেন বাড়ানোর জন্য খুব ভালো কাজ করে।

বিনস

বিনস একটি উচ্চ মাত্রার প্রোটিনযুক্ত খাবার, যাতে লাইসিন নামের অ্যামাইনো অ্যাসিড আছে। এটি কোলাজেনের সমন্বয়ের জন্য বেশ জরুরি। এতে আরও আছে কপার। এটিও কোলাজেন উৎপাদনের জন্য উপকারী একটি উপাদান।

বিনস একটি উচ্চ মাত্রার প্রোটিনযুক্ত খাবার
বিনস একটি উচ্চ মাত্রার প্রোটিনযুক্ত খাবার

কাজু বাদাম

আপনি যদি স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস মিক্স বানাতে চান, তাহলে অবশ্যই এতে কাজুবাদাম রাখবেন। এতে প্রচুর পরিমাণে জিংক ও কপার আছে, যা শরীরের কোলাজেন বাড়ানোর জন্য খুব ভালো কাজ করে।

স্ন্যাকস মিক্সে অবশ্যই কাজুবাদাম রাখুন
স্ন্যাকস মিক্সে অবশ্যই কাজুবাদাম রাখুন

টমেটো

ভিটামিন সিয়ের আরও একটি উৎস হচ্ছে টমেটো। কোলাজেন গঠনের জন্য এতে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিকর উপাদান আছে। এতে পর্যাপ্ত মাত্রায় লাইকোপেন আছে, যা ত্বকের সুরক্ষায় শক্তিশালী ভূমিকা রাখে।

টমেটোতে আছে প্রচুর লাইকোপেন
টমেটোতে আছে প্রচুর লাইকোপেন
কোলাজেন কমে যাওয়া রুখে দেয় ক্যাপসিকাম
কোলাজেন কমে যাওয়া রুখে দেয় ক্যাপসিকাম

ক্যাপসিকাম

টমেটো দিয়ে যদি সালাদ বা স্যান্ডউইচ বানান, তাহলে তাতে কিছু ক্যাপসিকামও যুক্ত করুন। এই সবজি ভিটামিন সি ও ক্যাপসাইসিন নামের অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি উপাদানে ভরপুর থাকে। এটি কোলাজেন কমে যাওয়া রুখে দেয় ও ত্বকের ক্ষতি হওয়ার হাত থেকে ত্বককে সুরক্ষিত রাখে।

কোলাজেন বাড়ানোর জন্য যেমন এই খাবারগুলো খেলে ভালো, তেমনি মিষ্টি জাতীয় ও কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার যেমন- সাদা পাউরুটি বা পেস্ট্রির মতো খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ এতে কোলাজেন তৈরি হওয়ার প্রবণতা কমে যায় এবং শরীরে জ্বালাপোড়া হয়।

সূত্র: হেলথলাইন

ছবি: পেকজেলস ডট কম

প্রকাশ: ১৭ মে ২০২৫, ০১: ৪৮
বিজ্ঞাপন