প্যানিক অ্যাটাক হলে নিজেই নিজেকে সামলান সহজ ৫টি ধাপে
শেয়ার করুন
ফলো করুন

প্যানিক অ্যাটাক এখন আর কোনো অজানা বিষয় নয়। চরম দুশ্চিন্তায় অস্থির আর সম্ভাব্য বিপদের ভয়ে চেতনা অবশ হয়ে আসা—খুব চেনা অনুভূতি আজকাল আমাদের জীবনে। করোনার পর এখন ডেঙ্গু মহামারির কবলে আমরা। অসুস্থতা আর মৃত্যু পায়ে পায়ে ঘুরছে যেন। দুশ্চিন্তার শেষ এখানেই নয়। অর্থনৈতিক বিপর্যয়, দুর্ঘটনার আশঙ্কা, পরিবেশদূষণ, সড়কের নিরাপত্তাহীনতা, খাদ্যে আর ওষুধে ভেজাল—এমন সব সমস্যায় জর্জরিত জীবনে দুশ্চিন্তা আর ভয় পিছু ছাড়তে চায় না।

জীবনে দুশ্চিন্তা আর ভয় পিছু ছাড়তে চায় না
জীবনে দুশ্চিন্তা আর ভয় পিছু ছাড়তে চায় না

কিন্তু কখনো কখনো এ ভয় মানসিক সমস্যার দিকে যেতে থাকে। তখন মনের সঙ্গে সঙ্গে শরীরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর সেই সঙ্গে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে সামাজিক ও পারিবারিক জীবন। এ রকম অবস্থায় মনোবিদেরা কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেন পরিস্থিতি বেশি খারাপ হওয়ার আগেই।

বিজ্ঞাপন

১. নিজের শরীরের পেশিগুলোর দিকে খেয়াল করা

দুশ্চিন্তা আমাদের গ্রাস করার প্রথম পর্যায়ে শরীরে বেশ কিছু অস্বস্তিকর অনুভূতির মাধ্যমে নিজের প্রভাব জানান দেয়। একটু খেয়াল করলেই বোঝা যাবে, এ সময় ঘাড়, কাঁধ, পিঠ আর বুকের মাসলগুলো কেমন টান টান হয়ে যায়। সচেতনভাবে এই পেশিগুলোকে রিল্যাক্স বা শিথিল করার চেষ্টা করলে মস্তিষ্ক বার্তা পাবে যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ফলে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা কমে আসবে। হালকা ম্যাসাজ করে আস্তে আস্তে এই মাসলগুলো শিথিল করতে হবে।

লকা ম্যাসাজ করে আস্তে আস্তে এই মাসলগুলো শিথিল করতে হবে
লকা ম্যাসাজ করে আস্তে আস্তে এই মাসলগুলো শিথিল করতে হবে
ভীত আর দুশ্চিন্তাগ্রস্ত চেহারা চেনা যায়
ভীত আর দুশ্চিন্তাগ্রস্ত চেহারা চেনা যায়

২. মুখমন্ডলের পরিবর্তন লক্ষ্য করুন

এখানেও একই ব্যাপার ঘটে আসলে। বিপদের আশঙ্কা বা স্ট্রেসে পড়লে চোয়াল শক্ত হয়ে আসে। কারও ভ্রুকুটি দেখা যায় আপনাআপনিই। ভীত আর দুশ্চিন্তাগ্রস্ত চেহারা চেনা যায়। এ সময় হালকা ম্যাসাজ আর মুখের পেশি শিথিল করার ব্যায়াম করা যায়। হাসির অভিব্যক্তি অনুশীলন করার কথা বলেন অনেকে এমন সময়ে।

বিজ্ঞাপন

৩. পানি পানের মাত্রার হিসাব রাখুন

দেহের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালাতে পানি অত্যাবশ্যক। কিন্তু এখন গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, পানিশূন্য শরীরে প্যানিক অ্যাটাকের লক্ষণগুলো বেশি কষ্টদায়ক বোধ হয়। তাই এ অবস্থা এড়াতে সারা দিন অল্প অল্প করে পানি পান করুন। একবারে অনেকটা পানি পান করার চেয়ে সেটাই ভালো। বলা হয়, শরীরের কোষগুলো এতে সজীব থাকে। মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতা কমে যায় পানি কম হলে। ফলে প্যানিক অ্যাটাক সামাল দেওয়া কঠিন হয়। তাই নিজের সঙ্গে একটি পানির বোতল রাখতে হবে সব সময়।

পানিশূন্য শরীরে প্যানিক অ্যাটাকের লক্ষণগুলো বেশি কষ্টদায়ক বোধ হয়
পানিশূন্য শরীরে প্যানিক অ্যাটাকের লক্ষণগুলো বেশি কষ্টদায়ক বোধ হয়
সব সময় উচিত নিয়মিত ব্রিদিং এক্সারসাইজ করা
সব সময় উচিত নিয়মিত ব্রিদিং এক্সারসাইজ করা

৪. ফোনের ‘ব্রেকিং নিউজ’ ধরনের নোটিফিকেশন আনইনস্টল করুন

সারাক্ষণ কোথায় কী বিপদ-আপদ আর দুর্ঘটনা ঘটছে, তার তাৎক্ষণিক আপডেট আসলেই জীবনে দরকার নেই। অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করেন বা কথায় কথায় প্যানিক করেন—এমন কারও জন্য তো এমনটি আরও বেশি সত্য।

৫. নিয়মিত ব্রিদিং এক্সারসাইজ করা

যাঁরা প্রায়ই অকারণে বা অল্প কারণে অতিরিক্ত ভয় পাওয়া, অমূলক আশঙ্কায় ভোগেন, তাঁদের মধ্যেই প্যানিক অ্যাটাক বেশি হয়। এমন হলে আপনার সব সময় উচিত নিয়মিত ব্রিদিং এক্সারসাইজ করা। দিনের দাঁত মাজা বা গোসল করার মতোই মনে করতে হবে এ কাজ। তাহলে সাধারণভাবে প্যানিক অ্যাটাকের প্রকোপ কমে আসবে।

তথ্যসূত্রঃ হেলথলাইন

ছবিঃ পেকজেলস ডট কম

প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০১: ০০
বিজ্ঞাপন