
আজ অত্যন্ত মর্মান্তিক এক আকস্মিক মৃত্যু পুরো দেশকে ডুবিয়ে রেখেছে বিষাদে। বিস্ময়েও বটে। এভাবেও মৃত্যু হতে পারে! মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাডের অস্তিত্বই হয়তো জানতেন না তা পড়ে গিয়ে মারা যাওয়া যুবক আবুল কালাম। সকালে বের হওয়ার সময় আমরা জানি না আমরা ঘরে ফিরতে পারব কিনা জীবিত অবস্থায়। স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি নিয়ে এত কথা হয়। তবুও সেই গ্যারান্টি কোথায়! এমনিতে জীবনের কত আয়োজন আমাদেরকে সারাক্ষণ ব্যস্ত রাখে। জীবন সহজ নয়। কিন্তু জীবন বড্ড ক্ষণস্থায়ী। আশেপাশে কারও আকস্মিক মৃত্যু দেখলে মনে হয়, দুই দিনের দুনিয়ায় এত কিছু নিয়ে দুশ্চিন্তা করে আসলে কী লাভ? চলুন এর চেয়ে জীবনটা উপভোগ করি। সবাই মিলে যথাসাধ্য বাঁচার মতো করে বাঁচার চেষ্টা করি। এমন সব চিন্তা বাদ দিই..
১. যেসব বিষয় আপনার নিয়ন্ত্রণের বাইরে
জীবনের সব কিছু আপনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না। তাই এমন ঘটনার জন্য দুশ্চিন্তা করা, যা আপনার নিয়ন্ত্রণে নেই, মানে সময় নষ্ট করা। এতে আপনি সেই জিনিসগুলোতেও মনোযোগ হারাবেন, যেগুলো আপনি সত্যিই পরিবর্তন করতে পারেন।

২. অতীত
অতীত পরিবর্তন করা যায় না। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে শেখা যায়, কিন্তু বারবার তা নিয়ে চিন্তা করে লাভ নেই। আপনি ফিরে গিয়ে কিছুই বদলাতে পারবেন না।
৩. অন্যের মতামত
সবাইকে খুশি করা সম্ভব নয়, আর সবাই আপনাকে ভালোবাসবে বা আপনার সঙ্গে একমত হবে তাও নয়। অন্যরা আপনার সম্পর্কে কী ভাবছে, তা নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা করা মানসিকভাবে ক্লান্তিকর। এতে আপনি ঘুরে ঘুরে শুধু সবাইকে খুশি করার চেষ্টায় থাকবেন, যা আসলে অসম্ভব!
৪. ভবিষ্যৎ
ভবিষ্যতের পরিকল্পনা করা জরুরি, কিন্তু 'কি হতে পারে' সেটা নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা করলে উদ্বেগ বাড়ে। আর মরার আগেই মরে গিয়ে লাভ কী?
৫. বয়স বাড়া
অনেকেই মনে করে ৩০ পার হলেই মানুষের জীবন শেষ! আমরা এমন এক সমাজে আছি, যেখানে সবাই নিজেকে তরুণ দেখাতে মরিয়া।মনে রাখুন, বয়স বাড়া একদম স্বাভাবিক (আর অনিবার্যও)। এটা আমাদের বেঁচে থাকা আর অভিজ্ঞতার প্রমাণ।

৬. পারফেকশন
সবকিছু নিখুঁত করতে চাওয়া ক্লান্তিকর ও অবাস্তব। ভুল করাকে স্বাভাবিকভাবে নিন। এটাই শেখা আর বেড়ে ওঠার অংশ। সব কিছু নিখুঁত হতে হবে, এমন নয়।

৭. অন্যদের সঙ্গে তুলনা
সব সময় নিজেকে অন্যের সঙ্গে তুলনা করলে হীনমন্যতা তৈরি হয়। মনে রাখুন, প্রত্যেকের পথ ও গতি আলাদা। নিজের অগ্রগতি ও অর্জনগুলোর দিকে মন দিন।
৮. দৈনন্দিন ছোট ছোট বিরক্তিকর বিষয়
জ্যাম, লম্বা লাইন, বা ছোটখাটো ঝামেলা জীবনেরই অংশ। এগুলো সাময়িক, তাই বেশি চিন্তা করার কিছু নেই।
৯. কাল্পনিক নেতিবাচক চিন্তা
যে ভয়াবহ পরিস্থিতি হয়তো ঘটবেও না, তা নিয়ে দুশ্চিন্তা করা মানসিক শক্তির অপচয়। আমার যদি চাকরি চলে যায় বা আমার ছেলে যদি বড় হয়ে মানুষ না হয় ইত্যাদি না ভেবে চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত থাকুন, কিন্তু সেগুলো এলে তখন মানিয়ে নিন।

১০. গুজব ও অপবাদ
মানুষ সব সময় কথা বলবে। কেউ আপনাকে নিয়ে, কেউ অন্যকে নিয়ে। কিন্তু এগুলোর বেশিরভাগই আপনার জীবনে কোনো প্রভাব ফেলে না। যদি নিজেকে বা কাউকে রক্ষা করতে হয়, করুন; নাহলে এসব উপেক্ষা করুন। সময় নষ্ট করার মতো জিনিস না।
সূত্র: ডেইলি মোশন
ছবি: জেমিনাই এআই