যেভাবে সকাল শুরু করলে জীবনে বজায় থাকে সুখ ও শান্তি
শেয়ার করুন
ফলো করুন

জীবন কোন দিকে যাচ্ছে, তার অনেকটা নির্ভর করে আপনি জীবন কীভাবে অতিবাহিত করছেন। এমন অনেকেই আছেন, যাঁরা ভেবে পান না জীবনে এত ঝামেলা কেন। কেনই–বা জীবনে এত দুশ্চিন্তা, অশান্তি। যদি আপনিও এই ভেবে দিশাহারা হয়ে থাকেন, তবে খেয়াল করে দেখুন জীবন সঠিকভাবে যাপন করছেন কি না। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো আপনি আপনার দিন শুরু করছেন কীভাবে। অর্থাৎ আপনি প্রতিদিন সকালে কী করেন। মনোবিজ্ঞানীদের মতে, সকালের সাধারণ কিছু অভ্যাস আপনার জীবনে এনে দিতে পারে সুখ ও শান্তি। চলুন, জেনে নেওয়া যাক সকালের সেসব অভ্যাস সম্পর্কে, যা আপনার জীবনে এনে দিতে পারে সুখ ও শান্তি।

১. সকালের নাশতায় রাখুন স্বাস্থ্যকর খাবার

আমরা সকালে যা খাই, তা সারা দিন আমাদের মেজাজ ও শরীর দুটোর ওপরেই প্রভাব ফেলে। তাই সকালে স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। চিনিযুক্ত ও প্রক্রিয়াজাত খাবার একেবারে এড়িয়ে চলতে হবে। এ ধরনের খাবার শরীরের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলার পাশাপাশি আপনাকে অলস করে তোলে। তাই সারা দিন মেজাজ খিটখিটে থাকে ও অশান্তি বোধ হয়। সকালের খাবারের তালিকায় শস্য, ফল ও প্রোটিনজাতীয় খাবার রাখুন। সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত পানি পান করতে ভুলবেন না।

২. সমস্যাগুলো লিখে রাখা

সকালে উঠেই আমাদের মাথায় অনেক চিন্তাভাবনা ঘুরপাক খায়। এই চিন্তাভাবনাগুলো লিখে রাখুন। এটি আপনার সারা দিনের স্ট্রেস কিছুটা হলেও কমিয়ে দেয়। বলা হয়, আপনার সমস্যা যদি আপনি লিখে ফেলেন, এর অর্থ আপনার সমস্যার অর্ধেক সমাধান আপনি করে ফেলেছেন। এ ছাড়া এটি আপনার সৃজনশীলতাও বাড়িয়ে দেয়। আপনাকে ইতিবাচক রাখতেও সহায়তা করে। যার ফলে আপনি সারা দিন স্বস্তি অনুভব করেন এবং মনেও শান্তি বিরাজ করে।

বিজ্ঞাপন

৩. দিনের উদ্দেশ্য নির্ধারণ করুন

আপনি যখন উদ্দেশ্যহীন থাকেন, তখন আপনার মধ্যে একধরনের অশান্তি কাজ করে, যা আপনার হতাশা ও উদ্বেগ বাড়িয়ে দেয়।

অন্যদিকে প্রতিদিনের উদ্দেশ্য নির্ধারণ করলে আপনি সহজে আপনার ফোকাস ধরে রাখতে পারেন, যা উদ্বেগ হ্রাস করার পাশাপাশি জীবনে ইতিবাচকতা বাড়াতেও সহায়তা করে। এটি দিনের একটি রোডম্যাপ তৈরি করার মতো। আপনি সারা দিনে কী করবেন, কোথায় যাবেন এমনকি আপনি কী করবেন না, তা–ও ঠিক করে রাখতে পারেন। এতে আপনার মধ্যে অনিশ্চয়তা কাজ করে না। ফলে জীবনে শান্তি বজায় থাকে।

৪. প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন

প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। যাঁরা এগুলো অনুশীলন করেন, তাঁদের জীবনে হতাশা কম কাজ করে। তাই তাঁদের জীবনে সুখ ও শান্তি বজায় থাকে। এখন মনে হতে পারে, জীবনে তো কিছুই হচ্ছে না; কী নিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবেন। ছোট ব্যাপারগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারেন। আপনার ভালো ঘুম হয়েছে, সকালের সুস্বাদু খাবার খেয়েছেন কিংবা নিজের ছোটখাটো কিছু অর্জনকেও প্রশংসা করতে পারেন। এতে আপনার মধ্যে একধরনের আত্মতুষ্টি কাজ করবে। যার ফলে আপনার মন ভালো থাকার পাশাপাশি জীবনে সুখ ও শান্তি বজায় থাকবে।

৫. প্রিয়জনের সঙ্গে যোগাযোগ করুন

এসবের পরে প্রতিদিন সকালে কিছুক্ষণ কথা বলতে পারেন আপনার প্রিয় মানুষের সঙ্গে। যেহেতু মানুষ সব সময় সামাজিক সংস্পর্শে থাকতে ভালোবাসে; তাই এটি আপনার জীবনে সুখের একটি অতিরিক্ত ডোজ হিসেবে কাজ করতে পারে। সকালের চা বা কফি সঙ্গীর সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারেন। আপনার মা–বাবার সঙ্গে একটি হ্যালোর মাধ্যমেও আপনার সকাল শুরু করতে পারেন কিংবা আপনার সন্তানের সঙ্গে মর্নিং ওয়াকে বেরিয়ে যেতে পারেন। মানুষের মন তৃপ্ত রাখেন তাঁর প্রিয় মানুষেরাই। তাই দিনের শুরু তাঁদের সঙ্গে হলে মনের মধ্যে একধরনের প্রশান্তি বজায় থাকে।

ছবি: পেকজেলসডটকম

বিজ্ঞাপন
প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২৫, ০১: ০০
বিজ্ঞাপন