সকালের নাশতায় প্রোটিন নাকি ফাইবার: কোনটি আপনার জন্য ভালো
শেয়ার করুন
ফলো করুন

অনেকেই জানতে চান সকালের খাবারে কী রাখলে সবচেয়ে ভালো হয়? কারণ, সকালের খাবার আমাদের দৈনন্দিন পুষ্টির গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। এটি সারা দিনের শক্তি ও কার্যক্ষমতা বজায় রাখতে সহায়তা করে। তবে ডিম ও ওটমিল উভয়ই ব্রেকফাস্ট হিসেবে সবচেয়ে জনপ্রিয়। তবে প্রোটিনের উৎস ডিম বেছে নেবেন নাকি ফাইবারে ভরপুর ওটমিল? কোনটি আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো? পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ দুটি খাবারেরই বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। তবে কোনটি আপনার জন্য ভালো, তা নির্ভর করে আপনার খাদ্যাভ্যাস, স্বাস্থ্য লক্ষ্য ও শারীরিক চাহিদার ওপর।

বিজ্ঞাপন

ডিম ও ওটমিলের পুষ্টিগুণ

একদিকে প্রোটিন, অন্যদিকে ফাইবার
একদিকে প্রোটিন, অন্যদিকে ফাইবার

ডিম প্রোটিনের একটি চমৎকার উৎস। একটি সেদ্ধ ডিমে প্রায় ৬.৩ গ্রাম প্রোটিন এবং ৭৭.৫ ক্যালরি থাকে। এ ছাড়া এতে থাকে কোলিন, সেলেনিয়াম ও ভিটামিন বি-১২, যা মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ও শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক। অন্যদিকে এক কাপ রান্না করা ওটমিলে থাকে ১৫৯ ক্যালরি এবং ৫.৫৫ গ্রাম প্রোটিন। সেই সঙ্গে এটি ফাইবার, আয়রন ও ফলেটসমৃদ্ধ, যা অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী এবং রক্ত ভালো রাখতেও সাহায্য করে।

বিজ্ঞাপন

ডিমের যত উপকারিতা

উচ্চমানের প্রোটিন মেলে ডিমে
উচ্চমানের প্রোটিন মেলে ডিমে

ডিম উচ্চমানের প্রোটিন সরবরাহ করে, যা পেশি গঠন ও পুনরুদ্ধারে সহায়ক। এতে রয়েছে কোলিন, যা মস্তিষ্কের স্মৃতি ও পেশি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর। ডিম ক্ষুধা হ্রাস করে এবং দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ক্ষুধা ধরে রাখতে সাহায্য করে। সেলেনিয়াম ও লুটেইন দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সহায়তা করে।
তবে ডিমে উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল থাকে, যা অনেকের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। বিশেষ করে, যাঁরা হৃদ্‌রোগ বা উচ্চ কোলেস্টেরলে ভুগছেন, তাঁদের জন্য ডিম খাওয়ার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি। এ ছাড়া যাঁদের ডিমে অ্যালার্জি আছে, তাঁদের খাবারের তালিকায় ডিম নিয়ন্ত্রণে রাখাই ভালো।

ওটমিলের যত উপকারিতা

প্রচুর ফাইবার আছে ওটমিলে
প্রচুর ফাইবার আছে ওটমিলে

ওটমিলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। আর ফাইবারসমৃদ্ধ হওয়ার কারণে এটি হজমের জন্য ভালো। পাশাপাশি এটি কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে। সেই সঙ্গে এতে থাকা বিটা-গ্লুকান রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এ ছাড়া ওটমিলে রয়েছে আয়রন ও ফলেট। তাই যাঁদের আয়রনের ঘাটতি রয়েছে, এটি তাঁদের জন্য খুবই উপকারী।
তবে ওটমিলে উচ্চমাত্রার ফাইবার থাকায় অতিরিক্ত খেলে হজমে সমস্যা দেখা দিতে পারে। গ্লুটেন সংবেদনশীল ব্যক্তিদের জন্য এটি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তবে গ্লুটেনমুক্ত ওটমিল খেলে এই সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা নেই।

আপনার জন্য কোনটি ভালো

যেহেতু দুটি খাবারই বেশ পুষ্টিসমৃদ্ধ, তাই উভয়কেই সকালের নাশতার জন্য আদর্শ খাবার হিসেবে ধরা হয়। তবে বুঝতে আপনার শরীরের চাহিদা এবং আপনার লক্ষ্য কোনটি, সেটির ওপর নির্ভর করেই বেছে নিতে হবে কোনটি আপনার জন্য উপকারী।
যদি আপনার পেশি গঠনের লক্ষ্য থাকে, তবে সকালের খাবারে বেছে নিতে পারেন ডিম। এটি উচ্চমানের প্রোটিনের উৎস হওয়ায় পেশি গঠনে সাহায্য করে।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ওটমিল বেশি উপযোগী, কারণ এটি রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক।
ওজন কমানোর জন্য ডিম অথবা ওটমিল উভয়ের যেকোনো একটি বেছে নিতে পারেন, তবে অনেকেই ওজন কমাতে ডিমকেই বেশি গুরুত্ব দেন। কারণ, ডিম ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে রাখতে বেশ কার্যকর।
গর্ভাবস্থায় দুটিই বেশ ভালো। ডিমের কোলিন ও ওটমিলের ফলেট শিশুর বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
ছবি: পেকজেলসডটকম

প্রকাশ: ০৫ মে ২০২৫, ০১: ০০
বিজ্ঞাপন