কেউ বলেন বিরিয়ানি বা কেক খেলে মন ভালো হয়ে যায়, আবার কারও ক্ষেত্রে কাজ করে এক প্লেট টকঝাল ফুচকা। তবে দেখার বিষয়, এ ক্ষেত্রে পুষ্টিবিজ্ঞান কী বলে।
কলাকে বলা হয় ‘স্ট্রেস বাস্টার’। কারণ, এতে থাকা পটাশিয়াম স্ট্রেস হরমোন নিয়ন্ত্রণ করে। এ ছাড়া কলায় উপস্থিত থাকা ভিটামিন বি-৬ সুখী হরমোন তথা ডোপামিন এবং সেরটোনিন নিঃসরণে সাহায্য করে। কলায় থাকা চিনি এর ফাইবারের সঙ্গে মিশে গিয়ে স্থায়ী হয় দীর্ঘ সময়ের জন্য। আর এই আস্তে আস্তে অবমুক্ত চিনিই বেশি সময় ধরে মন ভালো রাখে। পাশাপাশি কলায় থাকা প্রিবায়োটিকস আমাদের অন্ত্রের খেয়াল রাখে। আর সুস্থ অন্ত্র মুড ভালো রাখার পূর্বশর্ত।
আদর্শ খাদ্য ও সুপাচ্য, উচ্চমানের আমিষের উৎস ডিমের উপকারিতার বৃত্তান্ত স্কুলের বইতেই আছে। শরীর গঠনে ডিমের গুণগান গেয়ে শেষ করা যাবে না। তবে এটা হয়তো সবার জানা নেই যে ডিমকে ‘মুড বুস্টার’ও বলা হয়। অর্থাৎ ডিম খেয়ে মন ভালো রাখা যায়। এতে থাকা প্রোটিন, ভিটামিন ডি, বি ১২ এবং অন্যান্য অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট মস্তিষ্ককে কার্যকরভাবে সংকেত দিতে থাকে মন ভালো করতে।
প্রোটিন, ফাইবার, ম্যাগনেসিয়াম ও খনিজের সহজলভ্য উৎস হলো বাদাম। তা ছাড়া নিয়মিত বাদাম খেলে এতে থাকা ভিটামিন-ই স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর পাশাপাশি মস্তিষ্ককে বিভিন্ন ক্ষয় থেকে রক্ষা করে। অবসাদ, উৎকণ্ঠা কমাতে দারুন কাজ করে কাঠবাদাম। তবে খেয়াল রাখতে হবে মনের গুমোট ভাব কাটাতে এসব খাবার অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না। বরং রোজ অল্প কিছু পরিমাণ খেলেই পাওয়া যায় কাঙ্ক্ষিত ফল।
ক্ষুদ্র অথচ শক্তিশালী চেরি টমেটোতে লাইকোপেন নামক ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট উপস্থিত। আপনার মেজাজকে প্রফুল্ল রাখতে সক্ষম এই চেরি টমেটো। লাইকোপিনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিষণ্নতার লক্ষণগুলো হ্রাস করে আপনাকে রাখবে হাসিখুশি। বাচ্চাদের খাবার আকর্ষণীয় ও পুষ্টিকর করতে রাখুন চেরি টমেটো।
বর্তমান সময়ে বহুল জনপ্রিয়তা পাওয়া এই বীজ যেমন ওজন কমাতে সাহায্য করে, তেমনি মনও ভালো করে দেয় চটজলদি। চিয়া সিড হলো উদ্ভিজ ফ্যাটি অ্যাসিড, ওমেগা-৩, প্রোটিন, ফাইবার, ক্যালসিয়াম ও আয়রনের এক অনন্য উৎস। এতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম ও খনিজ পদার্থ দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগ কমাতে কাজ করে জাদুর মতো।
মাশরুম উদ্ভিজ্জ ভিটামিন ডি-এর ভালো উৎস। বিষণ্নতারোধী গুণাবলির জন্য সর্বজন পরিচিত এটি। মেজাজ নিয়ন্ত্রণে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আবার সেরোটোনিন সংশ্লেষণের সঙ্গে যুক্ত, যা আপনার মানসিক অবস্থাকে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। সবার পছন্দের পিৎজা, পাস্তা, নুডলস, চাউমিন, স্যুপ থেকে শুরু করে সুস্বাদু স্টার-ফ্রাইতেও মাশরুম বহুল ব্যবহৃত। আপনি চাইলে মাশরুমের আচার তৈরি করে সংরক্ষণও করতে পারেন।
ছবি: হাল ফ্যাশন ও পেকজেলসডটকম