সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ২৩ শতাংশ মানুষ, অর্থাৎ প্রায় ৩ কোটি মানুষ দৃষ্টিশক্তির দুর্বলতায় ভুগছেন। এর পেছনে রয়েছে বিভিন্ন সমস্যা। অতিরিক্ত স্ক্রিনটাইম, ছানি, গ্লুকোমা, ডায়াবেটিস ও বয়স–সংক্রান্ত সমস্যার পাশাপাশি রয়েছে আরও জটিল কিছু সমস্যা। চোখের ছোটখাটো সমস্যাগুলো অবহেলা করলেই তা পরবর্তী সময়ে বড় আকার ধারণ করতে পারে। তাই প্রথম দিন থেকেই চোখের সম্পূর্ণ যত্ন নেওয়া প্রয়োজন।
চোখের স্বাস্থ্য ও দৃষ্টিশক্তি অক্ষুণ্ন রাখতে পাঁচটি সহজ ও বৈজ্ঞানিক টিপস দেওয়া হলো:
সবুজ শাকসবজি চোখের জন্য উপকারী ও স্বাস্থ্যকরও বটে। শাকসবজি যেমন পালংশাক ও ব্রকলিতে রয়েছে লুটিন ও জেক্সানথিন, যা চোখের সমস্যা যেমন চোখের ছানি প্রতিরোধে সাহায্য করে। এ ছাড়াও ভিটামিন সি, ই ও জিংক–সমৃদ্ধ খাবার, বয়স–সম্পর্কিত ম্যাকুলার ডিজেনারেশন (এআরএমডি) নামক সমস্যা বিস্তারের ঝুঁকি হ্রাস করে।
উজ্জ্বল স্ক্রিনের দিকে দীর্ঘ সময় তাকিয়ে থাকলে চোখ শুষ্ক হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অনেক সময় বাইরের ধুলাবালু বা দূষণের জন্যও চোখ শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। চোখের শুষ্কতা ও জ্বালাপোড়াকে অবহেলা না করে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চোখের ড্রপ ব্যবহার করতে হবে।
চোখের স্বাস্থ্য অক্ষুণ্ন রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চশমা। দুর্বল দৃষ্টিশক্তি ও স্ক্রিনটাইমের ক্ষতি এড়ানোর জন্য সঠিক চশমা পরা জরুরি। ব্লু কোটিংসহ প্রতিবিম্ববিরোধী লেন্সের সঠিক চশমা পরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
স্ক্রিনটাইম বৃদ্ধি কোনো ব্যক্তির দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ। চোখের স্বাস্থ্যের বিপদ এড়ানোর জন্য স্ক্রিনের সময় সীমাবদ্ধ করুন এবং কাজের নির্দিষ্ট সময়ের পরে গ্যাজেটগুলো থেকে দূরে থাকুন। ল্যাপটপের মাধ্যমে কাজ করলে প্রতি ২০ মিনিটে অন্তত ২০ সেকেন্ডের স্ক্রিন ব্রেক নিন। চোখের সুবিধার জন্য ফন্টের আকার বড় করুন এবং স্ক্রিনের উজ্জ্বলতা হ্রাস করুন। ঘরের ভেতরেও উজ্জ্বল আলোর ব্যবস্থা করুন।
নিয়মিত চোখের ডাক্তারের কাছে চোখ পরীক্ষা করানো উচিত। ৪০ বছর পেরিয়ে গেলে প্রতি দুই বছর পরপর পরীক্ষা করা উচিত। পঞ্চাশের ওপর বয়স হলে বছরে দুবার পরীক্ষা করান।
লেখক: মেডিকেল অফিসার, জয়নুল হক সিকদার উইমেন্স মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল
ছবি: পেকজেলসডটকম