এই উদ্ভিদ উপকারী বলে আজকাল অনেকেই বাড়িতে আছে। নানা ঔষধি গুণের কারণে অ্যালোভেরাকে অমরত্ব লাভের উদ্ভিদ বলা হয়। নিয়মিত অ্যালোভেরার জুস পান করলে দ্রুত ওজন কমে। প্রতিদিন সকালে, মূলত খালি পেটে অ্যালোভেরা জুস পান করলে মিলতে পারে পাঁচ উপকারিতা।
ওজন সহজে কমতে না চায়, দীর্ঘদিন ধরে একই ওজনে আটকে থাকলে অ্যালোভেরা জুস হতে পারে জাদুকরি নিদান। অ্যালোভেরায় থাকে চর্বি পোড়ানোর উপাদান, যা হজমকে প্রভাবিত করে। অ্যালোভেরায় থাকা ডিটক্সিফায়িং গুণাবলি পরিপাকতন্ত্রকে পরিষ্কার রাখে।
সে জন্য পেট ফাঁপা কমে যায়, ফলে দ্রুত ওজন কমে। অ্যালোভেরায় রয়েছে লাক্সেটিভ গুণাবলি সমৃদ্ধ উপাদান ‘আর্থারাকুইনন’, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। তবে অ্যালোভেরা সরাসরি পান না করে এর সঙ্গে ইসবগুল, তোকমা ও চিয়া সিডসের মতো আঁশযুক্ত উপাদান পানির সঙ্গে মিশিয়ে পান করা শ্রেয়।
আপনি উজ্জ্বল ত্বক চাইলে অ্যালোভেরা হতে পারে দারুণ এক সমাধান। রোজ সকালে অ্যালোভেরার জুস পান করলে আপনি পাবেন ব্রণমুক্ত সুন্দর ত্বক। কারণ, এর রয়েছে ডিটক্সিফায়িং ও ত্বকের হাইড্রেটিং গুণাবলি, যার ফলে বলিরেখা নিয়ন্ত্রণ, মলিনতা দূর ও কালো ছোপ দূর করে।
২০০৯ সালে ৪৫ বছরের বেশি বয়সী ৩০ নারীর ওপর একটি সমীক্ষা চালানো হয়। তাঁদেরকে ৯০ দিন অ্যালোভেরার জুস পান করতে দেওয়া হয়। এরপর দেখা যায়, তাঁদের কোলাজেন উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা অনেকাংশে বেড়েছে। অ্যালোভেরার মাউথওয়াশ মাড়ির প্রদাহ রোধে দারুণ কার্যকর।
অ্যালোভেরা পরিপাক ক্রিয়াকে সহজ করে। অ্যাসিডিটির সমস্যা আছে, ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম বা পরিপাকতন্ত্রের অন্যান্য সমস্যা আছে, তাদের জন্য অ্যালোভেরা প্রাকৃতিক সমাধান। এটি দেহের ভেতরে থাকা চিনিকে দ্রুত ভেঙে ফেলে, যা খাদ্যের মধ্যে থাকা পুষ্টিকর উপাদানকে দ্রুত শরীরে শোষণ করে নিতে সহায়তা করে। এর অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি গুণাবলির জন্য পাকস্থলী ভালো থাকে। ফলে পাকস্থলীতে ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়ে এবং উপকারী মাইক্রোবায়োম উৎপাদন বৃদ্ধি পায়।
ভারী ব্যায়াম, দৌড় বা পরিশ্রমের পর অনেকেই বাজারের ইলেকট্রোলাইট পানীয় পান করে থাকেন। কিন্তু একদম প্রাকৃতিক ইলেকট্রোলাইট পাওয়া যায় অ্যালোভেরা জুসে।
এর মধ্যে থাকে প্রচুর স্বাস্থ্যকর জলীয় অংশ, যা শরীরে পানির ভারসাম্য ঠিক রাখে। অ্যালোভেরায় ক্যালরি খুবই কম থাকে। তাই অন্য কৃত্রিম জুস খাওয়ার চেয়ে অ্যালোভেরা জুস অনেক বেশি উপকারী।
অ্যালোভেরা জুসে থাকে ভিটামিন সি, বি১২ ও ভিটামিন ই, যা দেহের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এতে থাকে ফলিক অ্যাসিড, যা অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়; যার ফলে ফ্রি রেডিক্যাল প্রতিরোধে কাজ করে।
ফলে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ে বহুগুণ। সার্বিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য ভিটামিন সি খুবই গুরুত্বপূর্ণ আর অ্যালোভেরা হচ্ছে এর দারুণ এক উৎস।
ছবি: উইকিপিডিয়া