স্টিম বাথ নেওয়ার আগে জেনে নিন এর ৫টি নিয়ম
শেয়ার করুন
ফলো করুন

যুগ যুগ ধরে বিভিন্ন দেশে প্রচলিত স্টিম বাথের সুফল সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি হওয়ায় এখন আমাদের দেশেও এর প্রচলন শুরু হচ্ছে। রূপসদন ছাড়া এখন প্রায় সব জিম বা শরীরচর্চাকেন্দ্রে আলাদা সওনা বা স্টিম রুম থাকেই। সওনার এই স্টিম বা বাষ্পের মূল কাজ হলো, আমাদের ত্বকের রোমকূপ খুলে দেওয়া। এতে ত্বকের বিভিন্ন স্তরে জমে থাকা ময়লা বেরিয়ে আসে। শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ (টক্সিন) বের হয়ে আমাদের কোষ সজীব ও সতেজ হয়ে ওঠে। আর শরীর থেকে ময়লা বেরিয়ে গেলে ত্বক এমনিতেই উজ্জ্বল হয়ে যায়। এতে ত্বকের অ্যালার্জিজনিত সমস্যারও সমাধান হয়।

বাষ্পের তাপ শরীরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এতে রক্তপ্রবাহ বেড়ে যায়। ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে। কোলাজেন হলো ত্বকের মধ্যে থাকা একধরনের প্রোটিন, যা আমাদের বিভিন্ন পেশির শক্তি ও স্তিতিস্থাপকতা বাড়ায়। স্টিম বাথের উষ্ণতা শরীরে কোলাজেনের উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়, যা আমাদের ত্বককে পুনরুজ্জীবিত করে। এটি মৃত কোষ দূর করে আর বলিরেখার সমস্যাও সমাধান করে। স্টিম বাথ ওজন কমাতেও সাহায্য করে, যে কারণে অধিকাংশ জিমে স্টিম বাথের বন্দোবস্ত রাখা হয়। ঘামের মধ্য দিয়ে শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি বের করে আমাদের ডিটক্স করে স্টিম বাথ। ভারী ওয়ার্কআউট করার পর বাষ্প নিলে তাতে পেশি শিথিল হয় দারুণভাবে। মানসিক অবসাদ কাটানোর জন্যও তাই বাষ্প খুবই উপকারী।

বিজ্ঞাপন

তবে স্টিম বাথ নেওয়ার আগে বেশ কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হয়, যা আমরা অনেকেই জানি না। এসব জরুরি তথ্য রইল হাল ফ্যাশনের পাঠকদের জন্য।

১. স্টিম বাথ নেওয়ার আগে ভারী খাবার না খাওয়া

স্টিম বাথ নেওয়ার আগে ভারী খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কারণ, বাষ্পস্নানের তাপমাত্রা অনেক বেশি থাকে, যাতে শরীর ডিটক্স হয়। এ সময় হজমপ্রক্রিয়া বন্ধ থাকে। পেট খুব ভরা থাকলে আপনার বমিভাব, মাথাব্যথা বা বিষক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই ভারী খাবার খেয়ে কখনোই স্টিম বাথ নেবেন না।

২. স্টিম বাথের পরপর সাবান দিয়ে গোসল না করা
স্টিম বাথের পরপরই সাবান দিয়ে গোসল করলে সাবানের ক্ষার ত্বক শুষ্ক করে দেয়। বরং স্টিম বাথ নেওয়ার আগের দিন সাবান দিয়ে গোসল করুন এবং স্টিম নেওয়ার আগে বডি অয়েল ব্যবহার করুন। স্টিম বাথ শেষে কেবল পানি দিয়ে গা ধুয়ে ফেলুন।

৩. অতিরিক্ত তাপে স্টিম বাথ না নেওয়া

অনেকের ধারণা, উচ্চ তাপমাত্রায় স্টিম বাথ নেওয়া ভালো। কিন্তু এটা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। উচ্চ তাপমাত্রা আপনার ঘামের পরিমাণ বাড়িয়ে দেবে এবং শরীরের ক্ষতি করবে। বরং স্টিম রুমে যেন আরামদায়ক তাপমাত্রা থাকে, সেদিকে লক্ষ রাখুন। তাপমাত্রা না বাড়িয়ে আর্দ্রতা বাড়ান। ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে এ ক্ষেত্রে আদর্শ ধরা হয়ে থাকে।

বিজ্ঞাপন

৪. স্টিম বাথের সময় ও পরের যত্ন

স্টিম বাথ নেওয়ার পর চেষ্টা করুন ঈষদুষ্ণ পানিতে গোসল করতে এবং সঙ্গে সঙ্গে পোশাক না পরে তোয়ালে দিয়ে শরীর জড়িয়ে রাখতে। এভাবে কিছুটা সময় অপেক্ষা করুন যাতে ত্বকের কোষগুলো ধাতস্থ হওয়ার সময় পায়। বাষ্প নেওয়ার সময় চেষ্টা করুন অল্প কাপড় পরতে। সপ্তাহে একবারের বেশি স্টিম নেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। যখনই মনে হবে, আপনি খারাপ বোধ করছেন, তখন স্টিম থেকে বের হয়ে যান। অতিরিক্ত চাপ নিতে যাবেন না।

৫. স্টিম বাথ নেওয়ার আগের প্রস্তুতি

স্টিমে যাওয়ার আগে কোনো ধরনের প্রসাধনী বা সুগন্ধি ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। কারণ, তা আপনার ঘামের সঙ্গে মিশে বিপত্তি হতে পারে। স্টিম নেওয়ার সময় গায়ে সামান্য কাপড় রাখতে হলে অবশ্যই লিনেন বা সুতি কাপড় পরুন। স্টিম নেওয়ার আগে অবশ্যই পর্যাপ্ত পানি পান করুন। কারণ, এ সময় শরীর থেকে প্রচুর ঘাম বের হয়ে যায়। তাই এক থেকে দেড় লিটার পানি পান করুন।

তথ্যসূত্রঃ ভেরি ওওয়েল ফিট

ছবিঃ পেকজেলস ডট কম

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৩, ১৬: ০০
বিজ্ঞাপন