সময় আজ ভীষণ অস্থিরতার। কর্মক্ষেত্রের চাপ, সংসারের ছোট-বড় অশান্তি আর ব্যক্তিগত বোঝাপড়ার চাপে পড়ে মাঝেমধ্যে শরীর–মন হয়ে পড়ে নির্জীব। এমন এক সময়ে নিয়মিত ধ্যানের অভ্যাস গড়ে তুললে এর মাধ্যমে অনেকটাই শান্তি ও স্বস্তি মিলবে। মেডিটেশনের মুখ্য উদ্দেশ্যে মানুষের মনে শান্তির অনুভূতি সঞ্চার করা ও মনকে মানসিক চাপমুক্ত রাখা। নিজের মধ্যে করুণা, ধৈর্য, শক্তি, প্রেম ইত্যাদিও ধ্যানের মাধ্যমে জাগিয়ে তোলা যায়।
ধ্যান বসে বা শুয়ে—যেকোনো অবস্থাতেই করা যায়। যেকোনো সময়, খাওয়ার আগে বা পরে, সকালে, বিকেলে বা রাতে এবং যতক্ষণ ইচ্ছা করা যায়। ধ্যানের ক্ষেত্রে কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম বা বিধিনিষেধ নেই। তাই যখনই সুযোগ পাওয়া যায়, মেডিটেশন বা ধ্যান করে নেওয়া যায়। প্রতিদিন ৫ মিনিটের ধ্যানও দিতে পারে একটি নিয়ন্ত্রিত সুশৃঙ্খল জীবন আর সেই সঙ্গে অনাবিল প্রশান্তি।
মেডিটেশন শুরুর আগে প্রথমেই এ কথা আসতে পারে যে কতক্ষণ এই মেডিটেশন করলে, তার সুফল পাওয়া যেতে পারে। জবাব হলো, প্রথম দিকে স্থির করে নিতে হবে কতটা সময় ধরে মেডিটেশন করা উচিত। ৫ থেকে ১০ মিনিট বা ১ ঘণ্টাও এটি করা যেতে পারে। আর এর জন্য বেছে নিতে হবে শব্দহীন ও নিরিবিলি একটি জায়গা।
মেডিটেশন করার ক্ষেত্রে কোথায় বসে তা করা উচিত, তা নিয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন থাকতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এ ক্ষেত্রে প্রাধান্য দিতে হবে দেহের স্বস্তিকে। ধ্যান করতে বসে বা শুয়ে যদি আরাম বোধ না হয় তাহলে ধ্যানে মনোযোগ আসবে না। খেয়াল রাখতে হবে, হাত, পায়ের অবস্থান ও বসার ভঙ্গি যেন আরামদায়ক হয়।
শ্বাস গ্রহণ ও ছাড়ার সময় নিশাস-প্রশ্বাসের মুভমেন্ট অনুসরণ করতে হবে। শ্বাস ভেতরে যাওয়া এবং বের হওয়ার প্রক্রিয়ার ওপর নজর দিতে হবে। মেডিটেশেনের সময় মানসিক স্থিতি এমন হবে, যাতে মন অন্য কোনো ভাবনায় বুঁদ না হয়ে পড়ে। শরীর, সাম্প্রতিক অবস্থা, সবকিছু ছাড়িয়ে যেতে দিতে হবে নিজের মনকে। মনকে স্থির করতে হবে যেকোনো একটি নির্দিষ্ট বিন্দু বা বিষয়ের ওপর।
মেডিটেশন শেষ হলে তাড়াহুড়ো করে উঠে পড়া সমীচীন নয়। ধীরে ধীরে একটি অবস্থা থেকে মনকে সরিয়ে নিতে হবে। তারপর দেহ ও মনকে সজাগ করুন। তারপর ধীরে ধীরে মেডিটেশন ছেড়ে ওঠা উচিত।
* মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে ধ্যান।
* দেহ ও মনের সুস্থতার জন্য যেমন ধ্যান প্রয়োজনীয়, তেমনি সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ও কর্মক্ষেত্রে উন্নতি করতে ধ্যানের জুড়ি নেই।
* জীবন সুন্দর করতে ও সময়কে উপভোগ করতেও সাহায্য করে ধ্যান। ধ্যানের অভ্যাস গড়ে তুললে যেকোনো অবস্থানে সুখী হওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়। দেহ ও মনের সৌন্দর্যও বৃদ্ধি করে ধ্যান।