হার্ট অ্যাটাকের এই লক্ষণগুলো দেখলেই জরুরি ভিত্তিতে যা করতে হবে
শেয়ার করুন
ফলো করুন

বিশ্বে মানুষের মৃত্যুর সবচেয়ে বড় কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হার্ট অ্যাটাক বা হৃদ্‌রোগ। বিশ্বে প্রায় এক–তৃতীয়াংশ মৃত্যুর জন্য দায়ী হার্ট অ্যাটাক। বিশ্বে প্রতিবছর ৩৮ লাখ পুরুষ এবং ৩৪ লাখ মহিলা হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়, তার মধ্যে প্রতি চারজনের একজনের মৃত্যুর কারণ হচ্ছে করোনারি হার্ট ডিজিজ বা ইসকেমিক হার্ট ডিজিজ, যা মূলত অ্যাথোরোসক্লেরোসিসের ফলাফল। এ রোগটি আসলে সবার মধ্যে খুব ভীতি সঞ্চার করে। এর কারণ হলো হার্ট অ্যাটাক রোগে যাঁরা মৃত্যুবরণ করে, তাঁদের বেশির ভাগ লোকই কিন্তু প্রথম ঘণ্টার মধ্যে মারা যান। তাই হার্ট অ্যাটাক সম্পর্কে আমাদের একটি ব্যক্তিগত ধারণা থাকা দরকার। এর কারণ হলো, হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত রোগীকে হাসপাতালে নেওয়ার আগে কিছু প্রাথমিক সেবা দেওয়া। এ জন্য রোগীর পাশে যাঁরা থাকেন, তাঁদের কিছু বিষয় জানা থাকলে এই রোগ অনেকাংশেই প্রতিকার করা সম্ভব।

রোগীর কোন কোন লক্ষণ দেখে বোঝা যাবে হার্ট অ্যাটাক হয়েছে:
১। বুকের মাঝ বরাবর তীব্র ব্যথা
২। হাত ও ঘাড়ে ব্যথা
৩। কাশি ও শ্বাসকষ্ট
৪। প্রচুর ঘাম
৫। বমি বমি ভাব ও বমি
৬। বুক ধরফর করা ও অস্বস্তি লাগা
৭। একপর্যায়ে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া

বিজ্ঞাপন

এই লক্ষণগুলো দেখা দিলে করণীয় কী

এ ধরনের লক্ষণ যদি দেখা যায়, আপনি ৯০ ভাগ নিশ্চিত হতে পারেন ব্যক্তিটি হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত। সঙ্গে সঙ্গে তাকে অ্যাসপিরিন ট্যাবলেট খাওয়াতে হবে। এটি ৩০০ মিলিগ্রামে পাওয়া যায় যেকোনো ওষুধের দোকানে। এরপর যত দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। প্রথম চিকিৎসা হলো, ব্যথাটাকে কমানো এবং সম্ভব হলে দ্রুত ইসিজি করে রোগ নির্ণয় করা। এবং দ্রুত রোগীর চিকিৎসা শুরু করা। আর এ জন্যই তাড়াতাড়ি হাসপাতালে পৌঁছানো জরুরি। চিকিৎসা দ্রুত শুরু করা সম্ভব হলে অনেক ক্ষেত্রে হার্টের একটি বড় অংশ বাঁচানো সম্ভব। হার্টের বেশি অংশ ক্ষতি হওয়া থেকে রক্ষা করতে পারলে, পরবর্তী সময়ে হার্টটি মোটামুটিভাবে কাজ করতে পারবে।

হার্ট অ্যাটাকের কারণ:

১। উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন
২। অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার যেমন গরুর মাংস, ডিম বা ট্রান্স ফ্যাট–জাতীয় খাবার ইত্যাদি
৩। ধূমপান বা জর্দা নিয়মিত সেবন
৪। ওবেসিটি বা অতিরিক্ত ওজন
৫। অ্যালকোহল, কোমল পানীয়
৬। পর্যাপ্ত ব্যায়াম না করা
৭। শারীরিক পরিশ্রম না করা
৮। সব সময় শুয়ে থাকা ইত্যাদি।

প্রতিকার:

১। ধূমপান ত্যাগ করতে হবে
২। ব্লাডপ্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে
৩। ওজন স্বাভাবিক বিএমআই অনুযায়ী রাখা
৪। অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে এবং লবণ কম খেতে হবে।
৫। নিয়মিত ব্যায়াম করা উচিত
৬। স্বাভাবিক শারীরিক পরিশ্রম করা উচিত

লেখক: মেডিকেল অফিসার, জয়নুল হক সিকদার উইমেন্স মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল

ছবি: পেকজেলসডটকম

বিজ্ঞাপন
প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৫, ০৭: ৪১
বিজ্ঞাপন