শীতে সুস্থ থাকতে হলে খেতে হবে যেসব পুষ্টিকর খাবার
শেয়ার করুন
ফলো করুন

শীতকালে তাপমাত্রা কমার পাশাপাশি বাতাসের আর্দ্রতা কমে যায়, ধুলাবালুর পরিমাণ বাড়ে, ত্বক ও চুল শুষ্ক হয়ে যায়। ঠান্ডাজনিত নানা রকম রোগ, ইনফেকশন, অ্যালার্জি, শ্বাসকষ্ট, জ্বর, মাথাব্যথা, হাঁচি–কাশি ইত্যাদি উপসর্গ দেখা যায়। এ ছাড়া হাঁটুব্যথা, কোমরব্যথা, পায়ের ব্যথা বা বাতজনিত ব্যথা বাড়ে। মানসিক পরিবর্তনও লক্ষণীয়; যেমন—বিষণ্নতা, নিদ্রাহীনতা, অবসাদ ইত্যাদি।

এসব সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে শীতে পুষ্টিকর খাদ্য ও নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপনের প্রতি যত্নশীল হতে হবে। খাদ্যতালিকায় প্রোটিন ও খাদ্যশক্তির চাহিদা একই থাকে কিন্তু ভিটামিন ডি, ভিটামিন সি, ওমেগা থ্রি, পটাশিয়াম ও অ্যান্টি–অক্সিডেন্টের চাহিদা বাড়ে।

ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়ামের জন্য খাদ্যতালিকায় প্রতিদিন দুধ বা দুধজাতীয় খাবার রাখতে হবে। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের মাছ, বাদাম ও ডাল ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস। ওমেগা থ্রির জন্য নিয়মিত মাছ বিশেষত সামুদ্রিক মাছ, কুসুমসহ ডিম, বাদাম ইত্যাদি খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে। চিয়া সিডস, কাঠবাদাম,আখরোট, অলিভ অয়েল, সানফ্লাওয়ার অয়েলও ওমেগা থ্রির ভালো উৎস।

মৌসুমি রঙিন শাকসবজি ও ফল অবশ্যই প্রতিদিন খাওয়া উচিত। কেননা এতে অধিক পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট থাকে। যেমন গাঢ় সবুজ ক্যাপসিকাম, ব্রকলি, শিম, পালংশাক ইত্যাদি; লাল রংয়ের ক্যাপসিকাম, বিট, টমেটো, ড্রাগন ফল, লালশাক ইত্যাদি; কমলা রংয়ের গাজর, মাল্টা, কমলা ইত্যাদি। এসব অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট দেহে জমা থাকে না। তাই প্রতিদিনের খাবার রঙিন থাকা ভালো। এতে পর্যাপ্ত খাদ্য–আঁশের চাহিদাও পূরণ হয়।

বিজ্ঞাপন

শীতে অনেকে পানি কম পান করেন। কিন্তু তাপমাত্রা কম থাকলেও দৈনিক ৮–১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত। লেবু, পুদিনা, তুলসি, আদা, হলুদ, মধু ইত্যাদি কুসুম গরম পানি দিয়ে পান করলে পানির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ে। কড়া লিকারের চা, কফি পরিহার করে গ্রিন টি, ওলং টি, মসলা–চা, লেবু–চা পান করা ভালো।

প্রতিদিন কিছু সময় রোদে থাকার আভ্যাস করুন। দেহের ত্বকে সরাসরি রোদ লাগান। দরকার হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা যেতে পারে। নিয়মিত হাঁটা, ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রম দেহের জড়তা দূর করে।
অনেকে সারা বছর একই রকম খাবার খান। কিন্তু যে ডায়েট গ্রীষ্মকালে উপযোগী, তা শীতকালে প্রয়োজনীয় পুষ্টির জোগান দিতে পারে না। তাই বিভিন্ন খাদ্যগোষ্ঠী থেকে পরিমাণমতো মৌসুমি খাদ্য নির্বাচন করে সুষম খাবার গ্রহণ করা উচিত।

সতর্কতা:

কিডনির সমস্যা, হাইপোথাইরয়েডিজম, আলসার বা অ্যাসিডিটি থাকলে শীতকালীন শাকসবজি বা ফল নির্বাচনে চিকিৎসক বা ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

লেখক: পুষ্টিবিদ, সিটি হেলথ সার্ভিসেস অ্যান্ড হসপিটাল লি.

ছবি: পেকজেলসডটকম

বিজ্ঞাপন
প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২৪, ১০: ০০
বিজ্ঞাপন