এই কিউট কচি মিষ্টি কুমড়ার ৭টি উপকারিতা শুনলে অবাক হবেন
শেয়ার করুন
ফলো করুন

আমাদের দেশে মিষ্টি কুমড়া খুবই সহজলভ্য একটি সবজি। আর এখন বাজারে মিলছে ছোট ছোট কিউট কচি মিষ্টি কুমড়া। এটি খেতে যেমন সুস্বাদু, তেমনি এর রয়েছে নানা পুষ্টিগুণ। পাশাপাশি, এতে সুগার ও ক্যালরির পরিমাণও কম থাকে পরিপক্ক বড় মিষ্টিকুমড়ার তুলনায়। তাই এই সবজি ওজন হ্রাসের জন্য বেশ উপকারী। এ ছাড়াও এতে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, ফাইবার ও অন্যান্য খনিজ উপাদান। বিশেষ করে এতে উপস্থিত বিটা ক্যারোটিন ভিটামিন এ তে রূপান্তরিত হয়ে দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, এর কয়েকটি পুষ্টিগুণ সম্পর্কে।

মিষ্টি কুমড়ায় রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ
মিষ্টি কুমড়ায় রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ

১. দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে

মিষ্টি কুমড়ায় রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ, যা দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে কুমড়ায় উপস্থিত লুটেইন আর জেক্সানথিন দুটি গুরুত্বপূর্ণ ক্যারোটিনয়েড, যা চোখের ম্যাকুলা অংশে জমা হয়। এটি সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি থেকে চোখকে রক্ষা করে। এই ক্যারোটিনয়েড ম্যাকুলার ক্ষয় এবং চোখে ছানি পড়ার ঝুঁকি কমাতে কার্যকর। পাশাপাশি, ভিটামিন এ রাতকানা রোগের ঝুঁকি কমায়।

বিজ্ঞাপন

২. দীর্ঘমেয়াদি রোগের ঝুঁকি হ্রাস করে

কুমড়ায় উপস্থিত রয়েছে বিভিন্ন শক্তিশালী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, যেমন বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন সি ও ই। এগুলো দেহের কোষগুলোকে ফ্রি রাডিকেলের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে। এই ফ্রি রাডিকেলই মূলত কোষের ডিএনএকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, যা ডায়াবেটিস, হৃদরোগসহ অকাল বার্ধক্যের মতো সমস্যার সৃষ্টি করে।

কুমড়ায় উপস্থিত রয়েছে বিভিন্ন শক্তিশালী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট
কুমড়ায় উপস্থিত রয়েছে বিভিন্ন শক্তিশালী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট

৩. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে

কুমড়ায় উপস্থিত ভিটামিন এ ও সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে। ভিটামিন সি দেহে শ্বেত রক্তকণিকা তৈরিতে সাহায্য করে। যা শরীরকে বিভিন্ন রোগের সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে। একইসঙ্গে, ভিটামিন এ শরীরের শ্লেষ্মাঝিল্লিগুলোকে সুস্থ রাখে, যা শরীরের প্রাথমিক প্রতিরোধ স্তর হিসেবে কাজ করে।

বিজ্ঞাপন

৪.ওজন কমাতে সাহায্য করে

কচি মিষ্টিকুমড়ায় ক্যালরির পরিমান থাকে খুবই কম। ২৪৫ গ্রাম রান্না করা এই কুমড়ায় থাকে মাত্র ৪৯ ক্যালোরি। আর এটি বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানে ভরপুর। এতে রয়েছে প্রচুর ফাইবার, যা হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং দীর্ঘ সময় ধরে পেট ভরা রাখতেও সাহায্য করে। ফলে ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে থাকে। তাই যাঁরা ওজন কমাতে চান, তাঁদের জন্য এই কুমড়ার জুড়ি নেই।

কচি মিষ্টিকুমড়ায় ক্যালরির পরিমান থাকে খুবই কম
কচি মিষ্টিকুমড়ায় ক্যালরির পরিমান থাকে খুবই কম

৫.ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করে

মিষ্টি কুমড়ায় উপস্থিত অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, যেমন বিটা ক্যারোটিন, ফ্ল্যাভোনয়েড আর ভিটামিন সি, শরীরের কোষগুলোকে ফ্রি রাডিকালের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করে। বিটা ক্যারোটিন প্রো ভিটামিন এতে রূপান্তরিত হয়ে কোষের ডিএনএ রক্ষা করে এবং ক্যান্সার সৃষ্টিকারী টক্সিন দূর করে। ফ্ল্যাভোনয়েড আর অন্যান্য ফাইটোকেমিক্যাল যৌগ কোষ বিভাজনের প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে, যা বিশেষত ফুসফুস, ত্বক এবং পাকস্থলীর ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাসে কার্যকর।

৬.হার্ট ভালো রাখে

কুমড়ায় উপস্থিত পটাসিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। কারণ এটি শরীর থেকে অতিরিক্ত সোডিয়াম নির্গমনে সাহায্য করে। ভিটামিন সি রক্তনালীর স্থিতিস্থাপকতা বাড়ায় এবং ফাইবার রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায়। ফলে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস পায়।

কুমড়ায় উপস্থিত ভিটামিন এ ও সি ত্বকের কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায়
কুমড়ায় উপস্থিত ভিটামিন এ ও সি ত্বকের কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায়

৭. ত্বক ভালো রাখে

ত্বক ভালো রাখতেও মিষ্টি কুমড়ার কোনো জুড়ি নেই। কুমড়ায় উপস্থিত ভিটামিন এ ও সি ত্বকের কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায়, যা ত্বকে বলিরেখা প্রতিরোধ করে। এ ছাড়া এতে উপস্থিত অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ত্বককে ফ্রি রাডিকেলের হাত থেকে রক্ষা করে এবং ত্বককে উজ্জ্বল ও মসৃণ রাখতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে মিষ্টি কুমড়া খেলে সহজে ত্বকে বয়সের ছাপ পড়ে না।

সূত্র: হেলথলাইন

প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬: ০০
বিজ্ঞাপন