গরম আবহাওয়ায় আরামে ঘুমাতে অনুসরণ করুন ৯টি টিপস
শেয়ার করুন
ফলো করুন

গরমে ঘুমাতে কষ্ট হয় কেন

গ্রীষ্মে তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে ভালো ঘুমে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। জার্নাল অব স্লিপ রিসার্চ-এ প্রকাশিত এক সমীক্ষায় দেখা গেছে যে ঋতুগত পরিবর্তন আমাদের ঘুমের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। সমীক্ষার হিসেবে তিনটি কারণে গ্রীষ্মে ভালো ঘুম হয় না।

• উচ্চ তাপমাত্রার কারণে শরীর সহজে ঠান্ডা হয় না বলে শরীরে ঘাম হয়ে বিছানা স্যাঁতসেঁতে হয়ে যায়। তাই ঘুমাতে অস্বস্তি লাগে।

• গ্রীষ্মকালে দিন বড় হওয়ার কারণে আমাদের শরীরে বেশি সময় ধরে আলো পড়ে, যা আমাদের ঘুমে ছন্দপতন ঘটায় এবং রাতে জেগে থাকার প্রবণতা বাড়ায়।

• অন্ধকার মেলাটোনিন নামক হরমোন নিঃসরণ করে, যা ঘুমাতে সাহায্য করে। গ্রীষ্মকালে দিন বড় হওয়ায় মেলাটোনিন উৎপাদনে বাধার সৃষ্টি হয়, ফলে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে।

বিজ্ঞাপন

জেনে নিই কীভাবে সমস্যাগুলো এড়িয়ে গরমে আরাম করে ঘুমানো যায়—

১. ঘরের তাপমাত্রা ঠান্ডা রাখুন
গরমে ভালো ঘুমের জন্য ঘরের তাপমাত্রা ঠান্ডা ও আরামদায়ক রাখা জরুরি। ঘরের তাপমাত্রা কমাতে ফ্যান বা এয়ার কন্ডিশনার ব্যবহার করুন, লাইট বন্ধ করুন এবং গরম উপযোগী বিছানার চাদর ব্যবহার করুন। এটি আপনাকে শান্তিতে ঘুমাতে সাহায্য করবে।

২. প্রচুর পানি পান করুন
আপনি যদি সঠিকভাবে হাইড্রেটেড না হন, তবে এটি অবশ্যই আপনার ঘুমের চক্রে হস্তক্ষেপ করবে। এর অর্থ এই নয় যে ঘুমাতে যাওয়ার ঠিক আগে অনেক পানি পান করতে হবে। শুধু নিশ্চিত হয়ে নিন, আপনি সারা দিন প্রচুর পানি পান করছেন।

৩. স্ক্রিনের সময় সীমিত করুন
স্মার্টফোন, ট্যাবলেট ও কম্পিউটারের মতো ইলেকট্রনিক ডিভাইসের নীল আলো মেলাটোনিন বা ঘুম নিয়ন্ত্রণকারী হরমোন উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। ঘুমের চক্রে ব্যাঘাত এড়াতে স্ক্রিনের সময় সীমিত করতে হবে। বিশেষ করে ঘুমানোর অন্তত এক ঘণ্টা আগে সব ধরনের স্ক্রিন থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হবে।

বিজ্ঞাপন

৪. পা ঠান্ডা রাখুন!
ঘুমানোর আগে পা ঠান্ডা রাখতে পারলে শরীরের তাপমাত্রা সহজেই কমে আসবে এবং মস্তিষ্কে সংকেত পৌঁছে যাবে, এখন ঘুমাতে যাওয়ার সময়।

৫. আরামদায়ক ঘুমের পোশাক
রাতে ঢিলেঢালা পোশাক পরা উচিত, যার মধ্যে দিয়ে সহজেই বাতাস চলাচল করতে পারে। এ ধরনের পোশাক শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।

৬. দিনের ঘুম সীমিত করুন
অনেকেরই ভাতঘুমের অভ্যাস রয়েছে। খেয়াল রাখতে হবে, এই ঘুমের সময় যেন ২০–৩০ মিনিটের বেশি না হয়। তা না হলে এটি আপনার রাতের ঘুমে হস্তক্ষেপ করবে।

৭. কাথা এড়িয়ে চলুন
ভারী কাথাগুলো দূরে রাখুন। যদিও অনেক সময় মনে হয়, কাথায় ঘুমানো আরামদায়ক। কিন্তু এটি আপনার শরীরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে ঘামের কারণ হতে পারে, যা আপনার ঘুম কেড়ে নিতে পারে।

৮. নিয়মিত ঘুমের সময়সূচি মেনে চলা
ঘুমের একটি নিয়মিত সময়সূচি মেনে চলা উচিত, এমনকি সপ্তাহান্তেও। সময়মতো রাতের খাবার খাওয়া, স্ক্রিন লাইট এড়িয়ে যাওয়া এবং একই সময় ঘুমাতে যাওয়া। নিয়মিত ঘুমের জন্য সময়সূচি মেনে চলা জরুরি।

৯. ঘুমের আগে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ
মানসিক চাপ কমবেশি সবারই থাকে। যদি মানসিক চাপ আপনার ঘুমিয়ে পড়া কঠিন করে তোলে, তাহলে শোবার আগে মানসিক চাপমুক্ত হওয়ার কৌশলগুলো অনুশীলন করুন; যেমন মেডিটেশন, গোসল করা, গভীর শ্বাস নেওয়ার ব্যায়াম করুন বা মৃদু শরীর প্রসারিত করুন। এটি আপনাকে শিথিল হতে, শান্ত হতে এবং রাতে আরও ভালো ঘুমাতে সহায়তা করবে।

ছবি: পেকজেলসডটকম

প্রকাশ: ১০ জুন ২০২৪, ০৬: ০০
বিজ্ঞাপন