
গোসল না করলে শরীরে জন্মে ব্যাকটেরিয়া। শীতের সময় ত্বক ভালো রাখতে সেসব ব্যাকটেরিয়া খুব জরুরি। প্রতিদিন গোসল করলে এ ধরনের ব্যাকটেরিয়া শরীরে জন্মাতে পারে না। সাধারণত ধুলাবালু ছাড়া আমাদের চামড়া এক-দুই দিনে যতটুকু নোংরা হয়, তা পরিষ্কার করার ক্ষমতা আমাদের ত্বকেরই আছে। কিন্তু যদি আপনি প্রতিদিনই গরম পানিতে গোসল করেন, সে ক্ষেত্রে ত্বকের তেল নিঃসরণ কমিয়ে ত্বককে শুষ্ক করে তোলে।

ফলে চামড়া ফেটে যাওয়ার পাশাপাশি কিছু চর্মরোগ দেখা দিতে পারে। তা ছাড়া প্রতিদিন গোসল করলে কিছু ভালো ব্যাকটেরিয়া দেহ থেকে বিলুপ্ত হয়, যা আরও কিছু রোগকে স্বাগত জানায়। তাই শীতকালে সপ্তাহে দুই-তিনবারের বেশি গোসল না করার পরামর্শ দিচ্ছেন চর্মরোগ চিকিৎসকেরা।

গোসলের সময় কুসুম গরম পানি কিংবা বেশি গরম পানি ব্যবহার উচিত নয়। বরং স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি ব্যবহার করা উচিত। আর পানিকে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় ফিরিয়ে আনতে ঠান্ডা পানির সঙ্গে সামান্য গরম পানি মেশানোই যথেষ্ট। তা না হলে ত্বকের আর্দ্রতা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি স্কিন ডিজিজ ও মানসিক প্রশান্তিও নষ্ট হতে পারে।
প্রতিদিন গরম পানি দিয়ে গোসল করলে নখ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। কারণ, গরম পানি দিয়ে গোসল করলে নখগুলো সম্প্রসারিত হয়, ভেঙে যায়। গোসল করার সময় নখ প্রচুর পরিমাণ পানি শুষে নেয়। আর এর ফলেই নখগুলো তাদের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা ও তেল হারায়। পরিণতিতে নখগুলো শুকিয়ে যায় এবং দুর্বল হয়ে পড়ে। গোসল করলেও ১০ মিনিটের বেশি সময় ধরে না করাই ভালো। অতিরিক্ত সময় ধরে গোসল করলে নখজনিত নানা রোগ হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।

বোস্টনের ত্বকবিশেষজ্ঞ ড. র্যানেল্লা হির্সচ বলেছেন, মানুষ শুধু নোংরা হওয়ার কারণেই প্রতিদিন গোসল করেন না, বরং সামাজিক রীতির সঙ্গে মানিয়ে চলার জন্যই প্রতিদিন গোসল করেন। গবেষণায় দেখা গেছে, শীতকালে আমাদের ত্বকের নিজেকে নিজে পরিষ্কার করার কৌশলটি বরং গোসলের চেয়ে বেশি কার্যকর। আপনি যদি প্রতিদিনই শরীরচর্চা না করেন বা না ঘামেন বা এমন কাজ না করেন, যাতে আপনার শরীর নোংরা হয়, তাহলে সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার গোসল করা আপনার জন্য যথেষ্ট।
ছবি: ইনস্টাগ্রাম