ডিপ্রেশন, স্ট্রেস, আর পিটিএসডির মতো মানসিক সমস্যা কমাতে অভাবনীয় ভূমিকা রাখে পোষা প্রাণী
শেয়ার করুন
ফলো করুন

আমাদের জীবনে হতাশা, দুশ্চিন্তা ও অস্থিরতা চারপাশ থেকে যেন আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে। এসব থেকে কীভাবে মুক্তি পাওয়া যায়, একটু শান্তিতে থাকা যায়, তা নিয়ে আমাদের চিন্তার অন্ত নেই। আপনি কি জানেন, আপনার ঘরে যদি একটি বা দুটি পোষ্য থাকে, তাহলে আপনি শারীরিক ও মানসিকভাবে অনেকটাই ভালো থাকবেন? চলুন জেনে নেওয়া যাক কীভাবে ঘরে থাকা পোষা প্রাণী আপনাকে ভালো রাখবে।

সঙ্গী হয়ে ওঠে

আপনার যদি কখনো মন খারাপ থাকে, তাহলে দেখবেন ঘরে থাকা কুকুর বা বিড়ালটি আপনার কাছে এসে বসছে। তাকে আদর করতে করতেই কখন যে আপনার মন ভালো হয়ে যাবে, আপনি হয়তো বুঝতেও পারবেন না। হ্যাঁ, ঘরে থাকা এই পোষ্যরা হয়ে উঠতে পারে আপনার সবচেয়ে কাছের বন্ধু। আপনি যেমন পোষ্যকে ভালোবাসা, আনন্দ আর আদর দিয়ে ভরিয়ে রাখেন, এর বদলে তারাও আপনাকে একা থাকতে দেয় না। তাদের সঙ্গ ছাড়া একসময় আপনারও আর ভালো লাগবে না। তারা সব সময় আমাদের সঙ্গে শর্তবিহীন ভালোবাসা আর ইমোশনাল সাপোর্ট দিয়ে যায়।

বিজ্ঞাপন

মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করে

আপনি যখন একজন পেট প্যারেন্ট হয়ে উঠবেন, তখন আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের অভাবনীয় উন্নতি হবে। একটি কুকুর বা বিড়াল আপনার মুড বদলে দিতে পারে অল্প সময়েই। আপনার যত ডিপ্রেশন, একাকিত্ব ও দুশ্চিন্তা আছে, সেগুলো অনেকটাই কমে যায়, যার কারণে আপনার মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে। আলতোভাবে খানিকটা সময় নিয়ে পোষ্যর গায়ে হাত বোলালে ব্লাড প্রেশার ও স্ট্রেস লেভেল কমে। ঘরে থাকা আদুরে এই বন্ধুদের সঙ্গে খেলা করতে হলে আপনাকেও প্রচুর অ্যাকটিভ থাকতে হবে। আর এতে শারীরিকভাবে আপনিও সুস্থ থাকবেন। সাম্প্রতিক কিছু সাড়াজাগানো গবেষণা বলছে, ক্রনিক ডিপ্রেশন, স্ট্রেস বা পিটিএসডি অর্থাৎ পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডারের মতো মানসিক সমস্যায় অভাবনীয় ভালো ফল মেলে পোষা প্রাণী ঘরে রাখলে।

বিজ্ঞাপন

শিশুরা সহানুভূতিশীল হতে শেখে

আপনার ঘরে যদি শিশু থাকে, তাহলে পোষা প্রাণী নিয়ে এলে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই কিছু পরিবর্তন দেখতে পারবেন। কুকুর, বিড়াল, অ্যাকুরিয়ামে থাকা মাছ, খরগোশ, পাখি—যেকোনো কিছুই পোষ্য হতে পারে। পোষা প্রাণীকে নিজ হাতে খাওয়ানো, তাদের সঙ্গে খেলা করা, একসঙ্গে ঘুমানো হয় বলে মানসিক ও শারীরিক উন্নতি ছাড়া শিশুদের মধ্যে দায়িত্ববোধ তৈরি হয়। বিশ্বস্ততা, সম্মান ও ধৈর্য বাড়ে। একে অন্যের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে শেখে। এককথায়, শিশুদের জন্য সুন্দর একটি পরিবেশ তৈরি হয় পোষা প্রাণীটির কারণে।

দায়িত্ববান হয়ে ওঠা হয়

পোষ্যদের নিয়মিত যত্ন নিতে হয় বলে স্বাভাবিকভাবেই দায়িত্ববোধ চলে আসে। তাদেরকে খাওয়ানো, গ্রুমিং করা, মেডিকেল কেয়ার সবকিছুর দিকে কড়া নজর রাখতে হয়। যেহেতু তারা মুখে কিছু বলতে পারে না, তাই তাদের শারীরিক অবস্থা দেখেই অনেক কিছু বুঝে নিতে হয়। এই দায়িত্ববোধই যেকোনো ব্যক্তিকে দায়িত্ববান করে তোলে।

সামাজিক সম্পর্ক তৈরি করা

আপনি যদি পোষ্যকে নিয়ে বাইরে কোথাও হাঁটতে বা মাঠে নিয়ে যান, দেখবেন কেউ না কেউ এসে ওদের আদর করছে। আর তারাও বেশ আনন্দ পাচ্ছে। একসময় নতুন মানুষটির সঙ্গেও তার বেশ সখ্য হয়ে যায়। এর সূত্র ধরে আপনিও হয়তো নতুন একজন ভালো বন্ধু পেয়ে যেতে পারেন। ওরা ঠিক এভাবেই সামাজিক সম্পর্ক তৈরি করে ফেলে নতুন যে কারও সঙ্গে।

নতুন জীবন দেওয়া

শেল্টার হোক বা রাস্তা, যেখান থেকেই আপনি পোষ্যকে নিয়ে আসুন না কেন, তাদেরকে আপনি একটি নতুন জীবন দিচ্ছেন। অন্যের ছুড়ে দেওয়া বা রাস্তায় পড়ে থাকা খাবার খেয়ে না খেয়ে, ঝড় বৃষ্টিতে ভিজে, অন্যের হাত থেকে মার খাওয়ার ভয়ে হয়তো তারা কখনো ভাবতেই পারেনি ভালো থাকা কতটুকু আনন্দের হতে পারে। তাই আপনি যখন তাদের বাড়িতে নিয়ে আসছেন, তখন তারা একদম নতুন জীবন ফিরে পাচ্ছে। আর এই কাজে আপনিও খুব আনন্দ পাবেন।

পোষা প্রাণী ঘরে থাকলে শুধু সময়টুকুই আনন্দে কাটে না, আপনার নিজের ভেতরেও অনেক পরিবর্তন আসে। আপনিও সুস্থ থাকতে পারেন, আনন্দে বাঁচতে পারেন। তাই মানসিক প্রশান্তির জন্য পছন্দের পোষ্য ঘরে নিয়ে আসতেই পারেন।

সূত্র: হেল্প গাইড ডট অর্গ

ছবি: পেকজেলসডটকম

প্রকাশ: ২৪ জুলাই ২০২৪, ০৮: ৪৬
বিজ্ঞাপন