মূলত ডায়রিয়া থেকে সৃষ্ট পানি স্বল্পতার চিকিৎসায় খাওয়ার স্যালাইন সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। তবে ডায়রিয়া ছাড়াও অন্যান্য কারণে শরীরে তৈরি হওয়া লবণ ও পানির ঘাটতি পূরণ করতে খাওয়ার স্যালাইনের ব্যবহার বহুল প্রচলিত।
যেসব কারণে খাওয়ার স্যালাইন পান করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়—
১। ডায়রিয়া হলে
২। বমি হলে
৩। ডায়াবেটিসের চিকিৎসায়
৪। সূর্যের তাপে অনেকক্ষণ সময় কাটানো, ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রমে অতিরিক্ত ঘাম ঝরলে
৫। শরীরের তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি°সেলসিয়াস বা ১০০ দশমিক ৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটের চেয়ে বেড়ে গেলে
৬। শরীর থেকে পানি বের করে দেয়, এমন ওষুধ (যেমন ডাইইউরেটিকস) সেবন করলে।
বাজারে যে ORS বা স্যালাইন পাওয়া যায়, তা হচ্ছে শরীরের জন্য জরুরি কিছু লবণের শুকনা মিশ্রণ। যেটাকে বিশুদ্ধ পানির সঙ্গে মিশিয়ে পান করতে হয়। যেহেতু স্যালাইন শরীরের পানি ও লবণের ঘাটতি পূরণ করে, তাই এটি সঠিক পরিমাণে হওয়া খুবই জরুরি, তা না হলে স্যালাইন শরীরে মারাত্মক বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে।
কীভাবে বানাবেন স্যালাইন
শুরুতে অবশ্যই দুই হাত, স্যালাইন তৈরির পাত্র ও চামচ ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। প্রথমে পাত্রে দুই পোয়া বা আধা লিটার বিশুদ্ধ পানি নিতে হবে। তাতে প্যাকেটের পুরো মিশ্রণটিই ঢেলে দিন। অবশ্যই পানির পরিমাণ দুই পোয়া বা আধা লিটারের কম বা বেশি হওয়া যাবে না। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তারপর পরিষ্কার চামচের সাহায্যে মিশ্রণ ও পানি ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। ডায়রিয়া ভালো হওয়ার আগপর্যন্ত প্রয়োজন অনুযায়ী খাওয়াতে থাকুন।
এ ছাড়া ঘরে বসেই খাওয়ার স্যালাইন খুব সহজে তিনটি ধাপে বানানো সম্ভব। একটি পরিষ্কার পাত্রে এক লিটার বিশুদ্ধ খাবার পানি নিন। খাবার পানি অবশ্যই স্বাভাবিক তাপমাত্রার হতে হবে। পানি ফুটিয়ে বিশুদ্ধ করা হলে তা ঠান্ডা করে নিন। পাত্রের পানিতে আধা চা-চামচ পরিমাণ লবণ মেশান। চামচ দিয়ে মিশ্রণটি ভালোভাবে নাড়ুন, যাতে লবণ ভালোভাবে পানির সঙ্গে মিশে যায়। লবণের মিশ্রণে ৬ চা-চামচ চিনি মেশান। চিনি নেওয়ার সময় চামচের ওপরের দিকটা সমান করে নিতে হবে, যাতে প্রতি চামচে পরিমাপ ঠিক থাকে।
খাওয়ার স্যালাইন বানাতে গিয়ে যেসব ভুল করলে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে
প্যাকেটে বর্ণিত সঠিক পরিমাণের চেয়ে কম বা বেশি পানি দিয়ে স্যালাইন বানালে তা শরীরে ইলোক্ট্রোলাইট ব্যালেন্স নষ্ট করে দিতে পারে। আর এর ফলে গুরুতর অসুস্থ রোগীর মারাত্মক ক্ষতি ও মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
স্যালাইন ছয় ঘণ্টার মধ্যে পান করতে হবে। এই সময়ের পরে স্যালাইন রয়ে গেলে তা ফেলে দিয়ে আবার বানাতে হবে।
পানি অবশ্যই স্বাভাবিক তাপমাত্রার হতে হবে। গরম পানিতে স্যালাইন বানালে হিতে বিপরীত হতে পারে।
খাওয়ার স্যালাইন বা ওআরএসের সঙ্গে অন্য কিছু মেশাবেন না। এতে রাস্যনিক বিক্রিয়া হয়ে এর কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যেঁতে পারে।
ছবি: ইনস্টাগ্রাম ও পেকজেলসডটকম