প্রাথমিক স্তরে রোগনির্ণয় করা সম্ভব হলে জীবনধারা পরিবর্তন ও সঠিক চিকিৎসাপদ্ধতির মাধ্যমে মৃত্যুর হার অনেকাংশে কমানো সম্ভব। সে ক্ষেত্রে স্তন ক্যানসার নিরাময়ে চিকিৎসার পদ্ধতিগুলো জানার পাশাপাশি জীবনধারায় কী কী পরিবর্তন আনতে হবে, সে বিষয়েও হতে হবে সচেতন।
জীবনধারায় কিছু পরিবর্তন স্তন ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়ক বলে প্রমাণ পেয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এর মধ্যে রয়েছে—
* ওজন ঠিক রাখা।
* অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার না খাওয়া।
* নিয়মিত ব্যায়াম।
* অ্যালকোহল এড়িয়ে চলা।
* প্রসবের পর এক বছর পর্যন্ত বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ানো।
* নিয়মিত স্তন পরীক্ষা।
* অ্যান্টি–অক্সিড্যান্টসমৃদ্ধ স্বাস্থ্যকর ও সুষম খাবার খাওয়া।
স্তন ক্যানসারের প্রচলিত চিকিৎসার মধ্যে আছে ব্রেস্ট কনজার্ভেশন সার্জারি, রেডিয়েশন থেরাপি, কেমোথেরাপি ও হরমোনাল থেরাপি।
ব্রেস্ট কনজার্ভেশন সার্জারি
এই প্রক্রিয়ায় ক্যানসার কোষগুলোর বিস্তার এড়াতে শুধু আক্রান্ত অংশ বাদ দেওয়া হয়। অর্থাৎ ক্যানসারের বৃদ্ধি ঠেকাতে স্তনের আক্রান্ত এলাকা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বাদ দেওয়া হয়।
কেমোথেরাপি
নানা রকম ক্যানসার প্রতিরোধী ওষুধ মৌখিকভাবে বা ইনজেকশনের মাধ্যমে প্রয়োগ করা হয়। স্তন ক্যানসারের তীব্রতা ও পর্যায়ের ওপর চিকিৎসার স্থায়ীত্বকাল নির্ভর করে।
রেডিয়েশন থেরাপি
অস্ত্রোপচারের পর ক্যানসারযুক্ত কোষগুলো ধ্বংস করতে রেডিয়েশনের মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়।
অ্যাডজুভ্যান্ট থেরাপি
এটি একটি এন্ডোক্রিন্যাল চিকিৎসা, যা ক্যানসারের প্রকোপ বাড়াতে পারে এমন হরমোনগুলোর ভারসাম্য রাখে বা আটকে দেয়।
নিউক্লিক অ্যাসিড টেকনোলজি
নিউক্লিক অ্যাসিড টেকনোলজি হচ্ছে ক্যানসারের জন্য দায়ী জিনগুলোর ওপর বিশেষ ওষুধ ব্যবহারের মাধ্যমে নিরাময় করা।
ইমিউনোমডুলেশন
ক্যানসার কোষগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ বাড়াতে সাইটোকাইনসের ব্যবহার করার নাম হলো ইমিউনোমডুলেশন।
প্রাকৃতিক ওষুধের ব্যবহার
কারকিউমিন, গালেটস, লাইকোপিনের মতো কোনো কোনো শাকসবজি থেকে প্রাপ্ত কিছু ফাইটো কনস্টিটিউয়েন্ট উদ্ভিদ স্তন ক্যানসার চিকিৎসায় কার্যকর হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।
লেখক: মেডিকেল অফিসার, জয়নুল হক সিকদার উইমেন্স মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল
ছবি: পেকজেলসডটকম