ভ্রমণের ৮টি ইতিবাচক প্রভাবে সুস্থ থাকে শরীর ও মন
শেয়ার করুন
ফলো করুন

ভ্রমণ থেকে দীর্ঘদিনের বিরতি মনের স্বাস্থ্যের জন্য একেবারেই স্বাস্থ্যকর নয়। ট্যুরিজম অ্যানালাইসিসের একটি জার্নালে বলা হয়েছে, যাঁরা নিয়মিত ভ্রমণে যান, তাঁরা না যাওয়া বা কম ভ্রমণে যাওয়া মানুষের তুলনায় ৭ শতাংশ বেশি সুখী হন। এ ছাড়া উইসকনসিন মেডিকেল জার্নালে প্রকাশ, ১ হাজার ৫০০ নারীর ওপর করা গবেষণায় দেখা গেছে, ভ্রমণকারীরা কম হতাশা ও বিষণ্নতায় ভোগেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি গবেষণার তথ্য বলে, সারা বিশ্বে ২০১৬ সালে ৭ লাখ ৪৫ হাজার মানুষ হৃদ্‌রোগ ও স্ট্রোকে মারা গেছেন, যার প্রধান কারণ, ছুটি ছাড়াই অতিরিক্ত কাজ। তাদের গবেষণায় আরও দেখা গেছে, সপ্তাহে ৫৫ ঘণ্টার বেশি কাজ করলে হার্টের অসুখের ঝুঁকি বাড়ে ৩৫ শতাংশ। আর সপ্তাহে ৩৫ থেকে ৪০ ঘণ্টা কাজের মধ্যে থাকলে এই হার্টের অসুখ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে ১৭ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন

চাপ কমানো

আমরা যখনই কোনো বিপদ অনুমান করতে পারি, শরীরে কর্টিসল ও এপিনেফ্রিনের মতো স্ট্রেস হরমোন তৈরি হয়। এ ছাড়া আমাদের প্রতিদিনের চাপময় জীবনের কারণেও এই হরমোন তৈরি হয়। আর দীর্ঘদিন এমন হতে থাকলে বাড়তে থাকে বিষণ্নতা, ওজন ও নিদ্রাহীনতা। এ ধরনের বিষণ্নতা ধীরে ধীরে স্মৃতিশক্তিও কমিয়ে দেয়, যা আপনার নৈমিত্তিক কাজের জন্য মোটেও ভালো নয়। এ জন্য ভ্রমণের ভালো দিক হলো, তা শরীরে তৈরি হওয়া স্ট্রেস হরমোনের পরিমাণ কমায়; যা সম্ভাব্য সমস্যাগুলোর সমাধানের পথ সহজ করে। আবার কাজের মনোযোগও বাড়ায়।

বাড়ায় আনন্দ

ভ্রমণের সময়ে আপনার মন সাধারণ একটি দিনের থেকে অনেক বেশি ভালো থাকে। আর এই আনন্দ বাড়ে ভ্রমণ পরিকল্পনার সময় থেকেই। কিন্তু দীর্ঘদিন শুধু পরিকল্পনার করতে থাকলে আবার এর পরিমাণ কমতে শুরু করে। পরিকল্পনার কিছুদিনের মধ্যেই ভ্রমণে চলে গেলে যথাযথভাবেই এই আনন্দ উপভোগ করা সম্ভব।

বিজ্ঞাপন

হৃদ্‌যন্ত্র ভালো রাখে

বিভিন্ন রকম গবেষণায় পাওয়া গেছে ভ্রমণ হৃদ্‌যন্ত্রের জন্য উপকারী। নিয়মিত কম বা বেশি দিনের ভ্রমণে যাওয়া সম্ভব হলে রক্তে খারাপ কোলেস্টরলের পরিমাণ কমতে শুরু করে। তথ্য আরও বলে, বছরের বেশি সময় যাঁরা বাসাতেই থাকেন, তাঁরাই এ ধরনের অসুখে বেশি ভোগেন।

ভালো ঘুমের দাওয়াই

অতিরিক্ত কাজ আপনার ঘুমের পরিমাণ কমায়, পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ কমায় আর হতাশা তৈরি করে। শরীরে স্বাভাবিকভাবেই তৈরি হয় ক্লান্তি। কিন্তু ভ্রমণ পরিকল্পনা করা থেকেই আপনার ঘুমের সমস্যা কমতে শুরু করে। ভ্রমণে যাওয়ার আগে ও ভ্রমণ থেকে আসার পরও ভালো ঘুমের সুফল পাওয়া যাবে।

মনোযোগ বাড়ায়

একটানা কাজে আপনার মস্তিষ্কের কার্যকরিতা কমে। এতে মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। এ ছাড়া অতিরিক্ত চাপে স্মৃতিশক্তিও কমতে থাকে ধীরে ধীরে। অন্যদিকে ভ্রমণে আসে মানসিক ও শারীরিক পরিবর্তন। ভ্রমণের পর আপনি আরও বেশি মনোযোগী ও উৎসাহিত অনুভব করবেন, যা বাড়াবে কার্যক্ষমতা।

কমবে শারীরিক অসুস্থতা

অতিরিক্ত কাজ বা পরিশ্রম অ্যাড্রিনাল সিস্টেমকে চাপে ফেলে দেয়। ভ্রমণ অ্যাড্রিনালিন হরমোনের নিঃসরণকে স্বাভাবিক রাখে। ফলে আমাদের শরীর ও মন ভালো থাকে। অন্যদিকে মানসিক চাপ এই হরমোণের নিঃসরণে ব্যাঘাত ঘটায়। ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে।

বাড়ায় জীবনীশক্তি

গবেষণা বলে, ভ্রমণে বাড়ে জীবনীশক্তি। এর প্রধান কারণ, ভ্রমণ মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থ ও সুন্দর রাখে। কমে মানসিক চাপ, হতাশা ও বিষণ্নতা। এ সবই বেঁচে থাকার আনন্দ বাড়ায়।

সুন্দর করে সম্পর্ক

মানসিক চাপ প্রভাব ফেলে সম্পর্কে। ফলে কমতে থাকে সঙ্গীর সঙ্গে সময় কাটানো এবং কথা বলার ইচ্ছা। ভ্রমণে গেলে নতুন স্থানের প্রভাব পড়ে। কমে মানসিক চাপ। সঙ্গীর সঙ্গে সময় কাটাতে ও বিভিন্ন বিষয়ে গল্পে বাড়ে উৎসাহ।
তথ্যসূত্র: এনপিআর ও এভরিডে হেলথ

ছবি:  মেহজাবীন চৌধুরীর ইন্সটাগ্রাম ও পেকজেলসডটকম

প্রকাশ: ০৭ নভেম্বর ২০২৩, ০১: ০০
বিজ্ঞাপন